চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরে ব্যবসায়ী হত্যায় ৩ জনের ফাঁসি
নয় বছর আগে মাসুদ রানা নামের এক ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে তিনজনের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মামুনুর রশিদ গতকাল বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন। এরা হলেন মতলব উত্তর উপজেলার শাহবাজকান্দি এলাকার শাহজাহান শিকদারের ছেলে সুফিয়ান আহমেদ ওরফে শিবির, একই উপজেলার দক্ষিণ ফতেপুর এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে সাইফুর ইসলাম ওরফে সুজন এবং একই এলাকার মো. মোশারফ সরদারের ছেলে মো. শরীফ সরদার। রায় ঘোষণার সময় তারা তিনজনই কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
সরকারপক্ষে ছিলেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) দেবাশীষ করম মধু। আর আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ইকবাল বিন-বাশার ও সেলিম আকবর।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি মো. সাইয়েদুল ইসলাম বাবু জানান, প্রায় নয় বছর ধরে চলা এই মামলায় আদালত ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। আসামিরা তাদের অপরাধ স্বীকার করায় তাদের উপস্থিতিতে ৩০২/৩৪ দন্ডবিধিতে প্রত্যেককে মৃত্যুদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মামলার বাদী মো. ফারুক ব্যাপারী বলেন, আসামিরা সংঘবদ্ধ হয়ে আমার ভাইকে ঘটনাস্থলে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় ৯টি আঘাত করে হত্যা করে। আদালত তাদেরকে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদন্ড প্রদান করায় আমাদের পরিবার সন্তুষ্ট।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মতলব উত্তর উপজেলার দক্ষিণ ফতেপুর এলাকার আবদুল মান্নান ওরফে মনু বেপারীর ছেলে মাসুদ রানা এলাকায় কসমেটিকস ও মোবাইল ফোনের ব্যবসা করতেন। আসামি শরীফ তার দোকানে একটি সোনার চেইন জমা রেখে দুই হাজার টাকা ধার নেন। কিন্তু চেইনটি স্বর্ণের না হওয়ায় মাসুদ টাকা ফেরত চাইলে শরীফ টালবাহানা শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি টাকা দিতে রাজি হন।
২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে মাসুদ দোকান বন্ধ করে শরীফের কাছ থেকে টাকা আনতে যান। পরদিন দক্ষিণ ফতেপুর গ্রামে আরশাদ বেপারী বাড়ির পুকুরের পশ্চিম পাড় থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মাসুদের ভাই ফারুক ব্যাপারী শরীফসহ তিনজনকে আসামি করে মতলব উত্তর থানায় মামলা করেন। পরে শরীফকে গ্রেফতার করা হলে তিনি জবানবন্দি দেন। জবানবন্দির ভিত্তিতে শিবির ও সুজনকে গ্রেফতার এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি চাপাতি উদ্ধার করে পুলিশ।
তদন্ত শেষে মতলব উত্তর থানার এসআই খন্দকার মো. ইব্রাহিম ওই বছরের ৩০ মে আসামিদের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দিলে বিচার শুরু হয়।
"