রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
রূপগঞ্জে ৩ ইউনিয়নে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা
চলছে বাপেক্সের অনুসন্ধান
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রাজউকের পূর্বাচল উপশহরে পাওয়া ‘রূপগঞ্জ গ্যাসফিল্ড’ থেকে উত্তোলিত গ্যাস ইতোমধ্যেই জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। স্যাটেলাইট জরিপ অনুযায়ী ওই অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। এজন্য দফায় দফায় অনুসন্ধান চালাচ্ছে বাপেক্স। তাই ২০১৭ ও ২০১৮ সালের খনন কর্মসূচিতে নতুন করে রূপগঞ্জের চিহ্নিত তিনটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় চলছে অনুসন্ধান কার্যক্রম। এর আগে বাপেক্সের অনুসন্ধানে ২০১৪ সালে পূর্বাচলের মাঝিপাড়া এলাকার গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া যায়। এরআগে ২০১০ সালে রূপগঞ্জের দ্বিমাত্রিক জরিপ চালানো হয়। এই ফিল্ড থেকে উত্তোলিত গ্যাস দেশের অন্যান্য এলাকার চাহিদা মটালেও, রূপগঞ্জবাসী বঞ্চিত রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ প্রেট্টোলিয়াম বিভাগ (বাপেক্সের) জনসংযোগ কর্মকর্তা জাহাঙ্গির কামাল জানান, রূপগঞ্জে মাঝিপাড়া থেকে প্রাপ্ত গ্যাস পাইপ লাইনের মাধ্যমে এশিয়ান হাইয়ের রাস্তা দিয়ে সরাসরি গাজীপুরের টঙ্গি পর্যন্ত সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে এই গ্যাস থেকে কেন রূপগঞ্জবাসী বঞ্চিত রয়েছেন তা তার জানা নেই।
তিনি আরো জানান, ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ছয় মাসের কর্মসূচিতে ভূতাত্ত্বিক স্যাটেলাইট জরিপের ভিত্তিতে রূপগঞ্জে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়ন, সদর ইউনিয়ন ও ভোলাবা ইউনিয়নে নতুন করে অনুসন্ধান চলছে। এ কার্যক্রম গাজীপুরের কালীগঞ্জ গিয়ে শেষ হবে। তিনি জানান, রূপগঞ্জের মধুখালী গ্রামের পিতলগঞ্জ ও মোগলান মৌজার মধ্যবর্তী স্থানে নতুন গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই এখানে গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান কাজ চালানো হচ্ছে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহর এলাকা সড়ক ও জনপদের রাস্তা নির্মাণকাজের ধীরগতির কারণে জটিলতা তৈরি হয়েছে। পাইপলাইন বসালেও গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২২ জুন দেশের ২৬তম গ্যাস ফিল্ড হিসেবে পেট্টোবাংলা স্বীকৃতি দেয়। স্বীকৃতি পাওয়ার পর তার পরিধি বৃদ্ধিতে পুনঃখনন কাজ ও অনুসন্ধান করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। পরপর চারবার অনুসন্ধান করে রূপগঞ্জ গ্যাসফিল্ডের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। তবে নতুন কোনো গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পায়নি বাপেক্স।
বাপেক্স্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতিকুজ্জামান বলেন, রূপগঞ্জের এ গ্যাস ফিল্ডের প্রায় তিন হাজার ৬০০ মিটার গভীরে অনুসন্ধানে কুপের শেষ দিকে থেকে গ্যাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তবে তিন হাজার ৩০০ মিটার গভীরে ৬ মিটার পুরুত্বে গ্যাসের আরেকটি স্তর রয়েছে। সেখানে আরো গ্যাসের মজুদ রয়েছে। সঙ্গত কারণে তৃতীয়মাত্রার জরিপ শেষে আরো কুপ খনন করলে আরো বেশি গ্যাস পাওয়া যাবে।
এই গ্যাসক্ষেত্রটি রাজধানীর নিকটবর্তী হওয়াতে পূর্বাচল উপশহর ও দেশের চাহিদা মেটাতে উল্লেখ্যযোগ্য হারে অবদান রাখবে। তবে রূপগঞ্জের স্থানীদের আবাসিক গ্যাস সংযোগ না পাওয়ায় ক্ষোভ জানান তারা। সূত্র আরো জানায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার শীতলক্ষ্যার উভয় পারে রয়েছে হাজারো শিল্প কারখানা। এসব শিল্পকারখানার গ্যাস সংকটের নানা অভিযোগ নিত্যদিনের।
স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতিক) বলেন, বর্তমান সরকার গ্যাসের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ বাড়ানোর জন্য কাজ করছে। এ কারণে নতুন নতুন এলাকায় গ্যাস ক্ষেত্রের অনুসন্ধানে নেমেছেন বাপেক্স। আর আমাদের এলাকায় একটি গ্যাস ক্ষেত্র পাওয়া গেছে, আরো ক্ষেত্র অনুসন্ধান চলছে। গ্যাস ক্ষেত্র পাওয়া গেলে সারাদেশের গ্যাসের চাহিদার সঙ্গে আমাদের রূপগঞ্জের চাহিদাও মেটানো সম্ভব হবে।
"