ফেনী প্রতিনিধি
বিএনপির মিনার খালাস
একরাম হত্যায় ৩৯ জনের ফাঁসি
ফেনীর আলোচিত ফুলগাজী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হক একরাম হত্যা মামলায় ৩৯ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি এ মামলার প্রধান আসামি স্থানীয় বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন আহমদ চৌধুরী মিনার ও যুবলীগ নেতা জিয়াউল আলম মিস্টারসহ ১৬ জন খালাস পেয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ফেনীর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আমিনুল হক এ রায় দেন।
ফাঁসির দ-প্রাপ্তদের মধ্যে আছেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আদেল, ফুলগাজী উপজেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদ চৌধুরী।
খালাসপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন জেলা যুবলীগের নেতা জিয়াউল আলম মিস্টার, কাজীরবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান রউপ, আনন্দপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের হাজী বেলায়েত হোসেন পাটোয়ারী (টুপি বেলাল), ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতা ও কর্মী পবন, রিপন, ইকবাল হোসেন, শরিফুল জামিল পলাশ (পলাতক), কালামিয়া, ইউনুছ ভূঁঞা শামীম (পলাতক), আলমগীর, কাদের, ফারুক, জাহিদ হোসেন ভূঁঞা, মো. মাসুদ ও শাখাওয়াত হোসেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন একরামের স্ত্রী তাসমীন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, এই রায় দ্রুত কার্যকর হোক।’ একই চাওয়া একরামের ভাই মামলার বাদী জসিম উদ্দিনের। তিনি এদিন আদালতে ছিলেন না।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফেজ আহমেদ বলেন, ‘রায়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে।’ অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মেজবাহ উদ্দীন খান বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
২০১৪ সালের ২০ মে ফেনীর বিলাসী সিনেমা হলের সামনে ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি একরামুল হককে প্রকাশ্যে গুলি করে, কুপিয়ে ও গাড়িসহ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই রেজাউল হক জসিম বাদী হয়ে বিএনপি নেতা মাহাতাব উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। ওই বছরের ২৮ আগস্ট ৫৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। হত্যার প্রায় ২ বছর পর ২০১৬ এর ১৫ মার্চ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করেন আদালত। এ বছরের ২৮ জানুয়ারি এ মামলার যুক্তিতর্ক শুরু হয়।
এ মামলায় বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৪৪ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ১৫ জন। এছাড়া মামলার এজাহারভুক্ত ৫৬ আসামির মধ্যে বর্তমানে ১৪ জন কারাগারে, ২৩ জন জামিনে ও ৯ জন জামিনে গিয়ে পলাতক ও ১০ জন ঘটনার শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। এছাড়া র্যাবের ক্রসফায়ারে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
"