মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
পদ্মা সেতুতে তৃতীয় স্প্যান বসার অপেক্ষা
দৃশ্যমান হবে ৪৫০ মিটার
দ্রুত এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ। প্রথম ও দ্বিতীয় স্প্যান বসানোর পর এবার অপেক্ষার পালা তৃতীয়টির। প্রায় তিন হাজার টন ওজনের এবং ১৫০ মিটার লম্বা স্প্যানটি নিয়ে ভারী একটি ক্রেন গতকাল শুক্রবার মাওয়া থেকে রওনা দিয়েছে। এ স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে সেতুর ৪৫০ মিটার দৃশ্যমান হবে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, আগামী রোববার-সোমবার নাগাদ তৃতীয় স্প্যান বসানো হতে পারে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, জাজিরা প্রান্তের ৩৯ ও ৪০ নম্বর খুঁটিতে এটি বসানো হবে। ৪০ নম্বর খুঁটির কাজ শেষ করে স্প্যান বসানোর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ রকম ৪১টি স্প্যান জোড়া দিয়েই পদ্মা সেতু তৈরি হবে। গত বছর অক্টোবরে প্রথম ও গত ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর ৩০০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে জাজিরা প্রান্তে। তবে নাব্যতা সংকট, তীব্র স্রোত এবং নকশা জটিলতায় পিছিয়ে পড়ছে মাওয়া প্রান্তের কাজ।
প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, সবকিছু অনুকূলে থাকলে কয়েক দুই-তিন দিনের মধ্যেই বসবে তৃতীয় স্প্যান। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের খুঁটিনাটি নানা বিষয় আছে; যা নির্ধারিত সময় দিয়েও হয় না। এদিকে, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুতে ৪২ পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো এবং সেতুর মোট পিলারের সংখ্যা ৪২টি। প্রকল্পের প্রকৌশলী আহাদ-উর রহমান বলেন, মাওয়া প্রান্তের তিন নম্বর পিলারের কাজ শেষ। বর্তমানে কাজ চলছে দুই, চার ও পাঁচ নম্বর পিলারের। এরমধ্যে দুই নম্বর পিলারের বেস গ্রাউটিং এবং চার ও পাঁচ নম্বর পিলারের রেবার বাউন্ডিংয়ের কাজ চলছে।
সেতু বিভাগের (মূল সেতু) সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর বলেন, একটি ভারী ক্রেন স্প্যানটি নিয়ে জাজিরা প্রান্তের দিকে যাত্রা শুরু করেছে। আশা করছি, শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই স্প্যানটি ৩৯ ও ৪০ নম্বর খুঁটির কাছে পৌঁছে যাবে। তার পরই এটি খুঁটিতে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
সম্প্রতি ৪১ নম্বর পিলারের পিয়ার ক্যাপ কংক্রিটিং কাস্টিং শেষ হয়েছে। ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলার ৭-সি স্প্যান বসানোর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।
পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, প্রথম স্প্যান বসাতে প্রকৌশলীদের বেশি সময় লাগলেও আস্তে আস্তে বাকি স্প্যান বসাতে কম সময় লাগবে। শুকনো মৌসুমের সুবিধা কাজে লাগাতে চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে মাওয়া প্রান্তের পাইলিংয়ের কাজ এগিয়ে রাখতে চান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তিনটি হ্যামার সক্রিয় থাকায় পিলার বসানোর কাজে সময় কম ব্যয় হচ্ছে। পানি থেকে ১২০ ফুটের বেশি উচ্চতায় স্প্যানগুলো বসানো হচ্ছে। একেকটি স্প্যানের ওপর ৩০৭৫টি সø্যাপ বসিয়ে তৈরি করা হবে ২২ মিটার প্রস্থের চার লেনের সড়ক। পদ্মা সেতু প্রকল্পে এখন প্রায় চার হাজার লোক কাজ করছেন। তবে কর্মীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ে-কমে। শুকনো মৌসুমে বেশি লোক কাজ করেন। আবার বর্ষায় কিছুটা কমে যায়। কর্মরত মানুষের মধ্যে এক হাজারেরও বেশি বিদেশি, যাদের বেশির ভাগই চীনের ।
"