কক্সবাজার প্রতিনিধি

  ০৭ মার্চ, ২০১৮

তমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের আরো সেনা

এলাকায় আতঙ্ক

কক্সবাজার জেলার সীমান্তবর্তী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু সীমান্তে নতুন করে আরো সৈন্য মোতায়েন করেছে মিয়ানমার। সেই সঙ্গে কাঁটাতারের বেড়া ঘেঁষে তৈরি করা হচ্ছে আরো বাঙ্কার। কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে লাগোয়া পাহাড় টিলায় মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীরা অবস্থান করলেও গভীর রাতে পাহাড় থেকে নেমে এসে নো-মেন্স ল্যান্ডে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের কাছাকাছি এসে হর্ন বাজাচ্ছে। এদিকে, মাইক দিয়ে নো-মেন্স ল্যান্ড থেকে রোহিঙ্গাদের সরে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানানো অব্যাহত রেখেছে তারা। এভাবে নানাভাবে উসকানীমূলক তৎপরতা করে চলেছে। এতে ওই সীমান্তে আবারও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

গত শুক্রবার দুই দেশের পতাকা বৈঠকের পর সৃষ্ট উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হলেও গত শনিবার থেকে আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত রোববার ও সোমবার তমব্রু সীমান্তে নতুন করে সৈন্য বাড়ানো হয়েছে এবং মিয়ানমার সেনা ও বর্ডার গার্ড পুলিশকে বাঙ্কার খনন করতে দেখা গেছে বলে দাবি করেন রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার দিল মোহাম্মদ।

গত শুক্রবার বিকেলে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সীমান্তে টহল দেওয়ার ক্ষেত্রে এবং ফাঁকা গুলি ছোড়ার ক্ষেত্রেও বিজিবিকে আগেই জানানো হবে বলে কথা দেয় মিয়ানমার সেনারা। কিন্তু গত শনিবার থেকে তমব্রু সীমান্তের জিরো পয়েন্টে তারা নতুন করে আরো সৈন্য বাড়িয়েছে। তৈরি করছে নতুন বাঙ্কারও। এতে জিরো পয়েন্টে প্রায় ৬ হাজার রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ-উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে, মিয়ানমারের সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধির ফলশ্রুতিতে বিজিবিও তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে বলে জানা গেছে।

বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান সাংবাদিকদের বলেন, এর আগে গত শুক্রবার পতাকা বৈঠকে মিয়ানমার বিজিপি দাবি করেছে, তারা নিজেদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে সৈন্য মোতায়েন ও টহল বৃদ্ধি করেছে। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে সীমান্তে টহল দিতে হলে বিজিপি ও বিজিবি যৌথভাবে টহল দেবে। কোনো কারণে নিরাপত্তা জোরদারের কোনো প্রশ্ন আসলে তারা আমাদের আগেই অবহিত করবে। কিন্তু তারা আমাদের অবহিত না করেই সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ করেছে। তবে আমরাও সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। এছাড়া সীমান্তে ইতোমধ্যে তিনটি সিসিটিভি ক্যামরা স্থাপন করা হয়েছে। এসব ক্যামেরার সঙ্গে ইনফ্রারেডও সংযুক্ত করা হয়েছে যাতে রাতের বেলায়ও ভালো দেখা যায়। সার্বিক পর্যবেক্ষণের জন্য তথ্য প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হবে।

রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, সীমান্তের জিরো পয়েন্টে আশ্রিত রোহিঙ্গা ও স্থানীয় এলাকার লোকজন চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ বাড়িঘর ছেড়ে দূরে আত্মীয় বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জানান, সীমান্ত পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। আতঙ্ক বেড়েছে। গত রোববার থেকে আরো সেনা বৃদ্ধি করেছে। ১ মার্চ সীমান্তে ৭ ট্রাক সেনা বৃদ্ধি করা হয়। তমব্রু সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ১৫০ গজ ভেতরে বিপুল সংখ্যক বিজিপি সদস্য অবস্থান নেয়। তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান নিয়েছে। সীমান্তবর্তী বাঙালি ও শূন্যরেখার রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক বৃদ্ধি পেয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist