ক‚টনৈতিক প্রতিবেদক
তিন নোবেলজয়ী নারীর সংবাদ সম্মেলন
সু চিকে বিচারের মুখোমুখি করার অঙ্গীকার
রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে বিচারের মুখোমুখি করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ সফররত নোবেলজয়ী তিন নারীÑ নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের মেইরেড ম্যাগুয়ের, ইরান শিরিন এবাদি ও ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের পর গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা গণহত্যার দায় নিয়ে মিয়ানমার সরকারের স্টেট কাউন্সিলর পদ থেকে সু চিকে সরে দাঁড়ানোরও আহŸান জানান তারা।
শান্তিতে নোবেলজয়ী তিন নারী বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের দায় নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে সু চিকে। রোহিঙ্গাদের গণহত্যা, ধর্ষষ ও জাতিগত নিধনের দায়ে সু চিকে আন্তর্জাতিক আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর ব্যাপারে অঙ্গীকার করছি আমরা। ব্যবসায়িক ও ভ‚-রাজনৈতিক স্বার্থে চীন রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের পক্ষ নিয়ে এমন অভিমত ব্যক্ত করে তারা বলেন, সামরিক ব্যবসার স্বার্থে রাশিয়াও মানবাধিকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
নোবেলজয়ী তিন নারী বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে সরাসরি সু চির সঙ্গে কথা বলতে চাই।’ গণহত্যার বিষয়ে তাওয়াক্কুল কারমান তার সূচনা বক্তব্যের প্রথমেই বলেন, ‘আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমি গত কয়েক দিন রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে যা জেনেছি তাতে পরিষ্কার, সেখানে গণহত্যা চলছে। শিশু হত্যাসহ নারী ধর্ষণও সেখানে হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘অং সান সু চি আমার নোবেলজয়ী বোন, তিনি এখনও চুপ কেন?’
ম্যারেইড ম্যাকগুয়ার বলেন, ‘আমরা সবাই মানব পরিবারের সদস্য। অং সান সু চি যখন গৃহবন্দি ছিলেন তখন তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী কার্যক্রমের জন্য আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। তার এখন মনে রাখা উচিত, রোহিঙ্গাদেরও মানবিক অধিকার আছে।’
আন্তর্জাতিক আদালতে এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার প্রসঙ্গে আইন বিশেষজ্ঞ শিরিন এবাদি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আদালতে এই বিচার কাজের জন্য দুটি উপায় রয়েছে। একটি হচ্ছে সেই দেশটি যদি আন্তর্জাতিক আদালতের সদস্য হয়ে থাকে, তাহলে তাকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া যায়। দ্বিতীয়টি হচ্ছে তারা যদি এই সংস্থার সদস্য না হয়, তাহলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশক্রমে আন্তর্জাতিক আদালতে এদের বিচার সম্ভব।’
সুদানের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা আন্তর্জাতিক আদালতের সদস্য ছিল না, কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের হস্তক্ষেপের কারণে সুদানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হয়েছে।’
সুচিকে এই তিন নোবেলজয়ী নারী কোনো চিঠি লিখেছেন কি না বা রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোনো আবেদন করেছেন কি না জানতে চাইলে ম্যাকগুয়ার বলেন, ‘আমরা মিনি স্টেটমেন্ট দিয়েছিলাম, তবে আমরা এখন এখান থেকে ফিরে গিয়ে আরো বিস্তারিত বলব।’ মিয়ানমার সফর সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই মিয়ানমার সফর করতে চাই এবং রাখাইন যেতে চাই।’
"