প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০১ মার্চ, ২০১৮

বাংলাদেশ নিয়ে আইসিজির প্রতিবেদন

ভোটের বছরে সুযোগ নিতে পারে জঙ্গিরা

বাংলাদেশে ভোটের বছরে রাজনৈতিক সহিংসতা জঙ্গিবাদ উত্থানের ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রæপ-আইসিজি। মাঠ পর্যায়ে গবেষণার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংঘাত ও তার নিরসনে করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া এই সংস্থার প্রতিবেদনে এমনই বার্তা এসেছে। গতকাল বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ পায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক মেরুকরণে যে সংকট তৈরি হয়েছে, ইসলামপন্থী জঙ্গিদের তার সুযোগ নেওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় জঙ্গিবাদ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে জবাবদিহি নিশ্চিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। ‘কাউন্টারিং জিহাদিস্ট মিলিটান্সি ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামের এই গবেষণায় বলা হয়েছে, সা¤প্রতিক মাসগুলোতে সহিংসতার বিরতি ‘সাময়িক’ হিসেবে প্রতীয়মান হতে পারে। তাদের মতে, জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ বা জেএমবি এবং আনসার আল ইসলামই এখন বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে। ২০০৪ থেকে ২০০৮ সালে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়, পরবর্তীতে বিশেষত ২০১৪ সালের জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের পর তীব্র রাজনৈতিক বিভেদ নতুনভাবে জিহাদি কার্যক্রমের পথ খুলে দেয়।

দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাদÐ আবার ২০১৪-১৫ সালের রাজনৈতিক সংঘাত ফিরিয়ে আনতে পারে বলে মনে করছে আইসিজি। তাদের মতে, বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাস দমন কৌশলকে গুরুত্ব না দিয়ে বিচারবহিভর্‚ত হত্যাকাÐ, গুম এবং অহরহ রাজনৈতিক প্রতিদ্ব›দ্বীদের ওপর চড়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যেখানে জঙ্গি তৎপরতা এবং আল কায়দা ও আইএসের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার ওপর নজর দেওয়া উচিত। জেএমবির একটি অংশের সঙ্গে আইএসের যোগাযোগ রয়েছে বলে ধারণা আইসিজির। আর আনসার আল ইসলামকে আল কায়দার দক্ষিণ এশিয়া শাখা সংশ্লিষ্ট হিসেবে বর্ণনা করেছে তারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সা¤প্রতিক জঙ্গিবাদের ইতিহাস নব্বই দশকের শেষ দিকের, যা শুরু করে আফগান যুদ্ধফেরতরা।

জঙ্গিদের প্রথম দফা তৎপরতার সবচেয়ে বড় প্রকাশ ঘটে ২০০৫ সালে একযোগে ৬৩ জেলায় বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে। এরপর সরকার জেএমবি নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু তারপরও জঙ্গিগোষ্ঠীটি আবারও নতুন রূপে সংগঠিত হয়। অপর গোষ্ঠী আনসার আল ইসলামের উত্থান ঘটে, এদিকে জেএমবির আরেকটি শাখার আত্মপ্রকাশ ঘটে, যাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ‘নিউ জামা’আতুল মুজাহিদ’ বলেছে, তারা নিজেদের ইসলামিক স্টেট-বাংলাদেশ বলে পরিচয় দিয়েছে এবং সিরিয়া ও ইরাকে যোদ্ধা পাঠিয়েছে। দ্বিতীয় দফা জঙ্গিবাদের উত্থানের পেছনে রাজনৈতিক বিরোধ কাজ করেছে বলে মনে করে আইসিজি। তাদের ভাষ্য, ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে ‘ইসলামের ওপর আঘাত’ হিসেবে বিবেচনা করেছে আনসার আল ইসলাম এবং সেখান থেকে তারা বøগার ও মুক্তমনাদের ওপর হামলা করেছে, যারা যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিল।

আইসিজির মতে, জেএমবির কাছে ‘শত্রæর’ তালিকা অনেক বড়। ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের বিরোধিতার পাশাপাশি তাদের মতো করে ইসলাম পালনে অনাগ্রহীদেরই তারা লক্ষ্যবস্তু করে। আহমাদিয়া মসজিদ, মাজার, বৌদ্ধ ও হিন্দু মন্দির এবং শিয়াদের তাজিয়া মিছিলসহ সংখ্যালঘু, ধর্মীয় স্থাপনা ও অনুষ্ঠানের হামলার যেসব ঘটনায় আইএসের নামে দায় স্বীকারের বার্তা এসেছে, সেগুলো এই জঙ্গিগোষ্ঠীর কাজ বলে পুলিশের ভাষ্য।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist