নিজস্ব প্রতিবেদক
দুদক চেয়ারম্যানকে প্রকৌশলীরা
প্রভাবশালীদের কারণে দুর্নীতি বাড়ছে
প্রভাবশালীদের কারণে দেশের সরকারি বিভিন্ন বিভাগের দুর্নীতি বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন সরকারি প্রকৌশলীরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) বিভিন্ন বিভাগের সরকারি প্রকৌশলীদের সঙ্গে মতবিনিয়ন সভায় এ অভিযোগ করা হয় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের কাছে। এ সময় দুদক চেয়ারম্যানও প্রভাবশালীদের সুপারিশ ও তদ্বির দেশের দুর্নীতির অন্যতম প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করেন। দেশের প্রকৌশল খাতে প্রকল্প পরিকল্পনা পাশের নামের মানুষকে হয়রানি, ঘুষ নেওয়া, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প শেষ না করা, জ্ঞাত আয় বহিভর্‚ত সম্পদ অর্জন, সরকারি পরিবহনের অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে মুখোমুখি টেবিলে বসেন সরকারি প্রকৌশলীরা। তবে যেকোনো নির্মাণ কিংবা উন্নয়নকাজ সঠিকভাবে না হওয়ার পেছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রভাবশালীদের দূষলেন তারা।
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের গবেষণা ও নীতি সহায়তা সংস্থা পাওয়ার সেলের প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘এই লাইনের পোল পাওয়া যাচ্ছে না, মিটার পাওয়া যাচ্ছে না। এই সুযোগটা স্যার, একটা মধ্যস্বত্বভোগী নেয়। যেটায় অনেকটা আমরা অসহায়।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্ল্যান দিয়ে দেন না কেন? তাহলে ওটাই দেখে প্ল্যান করে ফেলবে। আপনাদের কাছে কেন যেতে হয় পাসের জন্য?’
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, ‘প্ল্যান পাসের ব্যাপারে স্যার, কিছুটা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। এটা আমি অস্বীকার করি না। তবে আমি এটা বলব যে, স্যার আপনারা এখন দ্রæততার সঙ্গে প্ল্যান পাস করছি।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এস্টিমেট আপনি গোপন রাখবেন, এটাই তো নিয়ম, ইফ আই অ্যাম নট রং, কী বলেন?’
সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রকৌশলী আবুল কাশেম ভ‚ইয়া বলেন, ‘এস্টিমেট যদি ফাঁস করে দেওয়া হয়, তাহলে তো সবাই জানল।’
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আপনি বলছেন ইস্টিমেট গোপন রাখা যায় না, যায় না মানে কি? আপনি আছেন কেন?’ আবুল কাশেম ভ‚ইয়া বলেন, ‘যেটা হয়ে যায়। অনেক সময় তো পারা যায় না।’
দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পেছনে সুপারিশ ও তদ্বির অন্যতম প্রধান বাধা বলেও অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেন দুদক চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে প্রকৌশলীদের নানা অনিয়মের সমালোচনা করেন তিনি।
প্রকৌশলীদের উদ্দেশে ইকবাল মাহমুদ আরো বলেন, ‘আপনি নিজেই যেন প্রভাবশালী না হন। আপনি নিজে যেন প্রভাবিত না হন। আমরা চাই, প্রভাবমুক্তভাবে আপনারা, কোনো সুপারিশ না শুনে, সুপারিশ শোনা একটা বিরাট বড় দুর্নীতি আমরা ধারণা এবং তদবির না শুনে। তদ্বিরবাজরা সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ, আমি এক জায়গায় বলেছিলাম। এই তদ্বিরটা শুনবেন না, ফর গডস সেক ।’
সরকারি যেকোনো প্রকল্পের বিল চ‚ড়ান্ত করার আগে সামাজিক অডিটের (নিরীক্ষা) প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সবার মানসিকতা পরিবর্তন না হলে দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করা সম্ভব নয়।
"