সংসদ প্রতিবেদক

  ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

সংসদে শেখ হাসিনাকে রওশন

মন্ত্রিসভা থেকে জাপা নেতাদের বাদ দিন

জাতীয় পার্টির ‘সম্মান’ বাঁচাতে মন্ত্রিসভা থেকে দলটির নেতাদের বাদ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চাইলেন সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। গতকাল মঙ্গলবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় রওশন বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম আমাদের মন্ত্রীদের উইথড্রো করে নেন। আপনি সেটা করেন নাই। আমরা বিরোধী দল হতে পারি নাই। এভাবে বিরোধী দল হওয়া যায়? রওশনের এই বক্তব্যের সময় সরকারপ্রধান ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনাও সংসদে ছিলেন। সংসদে বিরোধী দলের আসন নেওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রিসভায়ও যোগ দিয়ে চার বছর পার করার পর এখন দলের ‘সম্মানহানির’ উপলব্ধির কথা জানালেন জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান রওশন।

বিএনপি বর্জনের পর নানা নাটকীয়তার মধ্যে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল জাতীয় পার্টি। এরপর বিরোধী দলের আসনে বসে তারা; রওশন হন বিরোধীদলীয় নেতা। এরপর জাতীয় পার্টির সভাপতিমÐলীর তিন সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ মন্ত্রী এবং মুজিবুল হক চুন্নু ও মশিউর রহমান রাঙ্গা প্রতিমন্ত্রী হন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকেও করা হয় মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত।

বিএনপিবিহীন সংসদে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের আসন নিয়ে সরকারেও যোগ দেওয়ায় সংসদে তাদের কার্যকর ভ‚মিকা পালন নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন উঠেছিল। বিএনপি তাদের বলে আসছে ‘গৃহপালিত বিরোধী দল’।

সমালোচনার জবাবে জাতীয় পার্টির নেতারা আত্মপক্ষ সমর্থনে নানা বক্তব্য বিভিন্ন সময় দিয়ে আসছিলেন। রওশন নিজেও নানা যুক্তি দিয়ে আসছিলেন। এরশাদ মাঝে-মধ্যে সরকার ছাড়ার হুমকি দিয়ে আসছেন, আবার ‘সময় হলে’ সে সিদ্ধান্ত জানানোর কথাও বলছেন।

সরকারে থাকা না থাকাটি দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয় হলেও রওশনের বক্তব্যে স্পষ্ট, সেই ভারও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ওপরই দিয়েছেন তিনি।

রওশন বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বলতে পারেন, মন্ত্রিত্ব ছাড়েন। আমরা বলতে পারি না। এটা আপনি করলে জাতীয় পার্টি বেঁচে যেত। সম্মানের সঙ্গে থাকতে পারত। আমরা সম্মানের সঙ্গে নেই। এক বছর আছে আরো, সেটা দেখেন।’ এ সময় সরকারি দলের দিক থেকে মাইক ছাড়াই বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পার্টির নেতাদের মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বলেছেন।

তখন রওশন বলেন, আপনি নির্দেশ দিলে মানবে না কে? না, দেন নাই। নাহলে সবাইকে নিয়ে নেন। সবাইকে মন্ত্রী বানিয়ে দেন। হয় বিরোধী দল হতে হবে, না হয় সরকারি দল হতে হবে। বিরোধী দলের দরকার নেই। খানিকটা উত্তেজিত কণ্ঠে এরশাদপতœী রওশন আবার বলেন, ‘আমাদের ৪০ জনকে সরকারি দলে নিয়ে যান। আমরা তো বলতে পারি না। সবাইকে নিয়ে নেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে লজ্জা লাগে। আমরা সরকারি, না বিরোধী দল? বিদেশে গেলে বলতে পারি না আমরা কী? এ সময় রওশনের পাশে বসে হাসতে দেখা যায় স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী রাঙ্গাকে। পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ তার নেত্রীর দিকে তাকিয়ে ছিলেন।

সরকারের শরিক জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেননকেও হাসতে দেখা যায়। সংসদের বাইরে ‘অনেকের অনেক কথা’ শুনে নিজের উপলব্ধির কথা জানান রওশন।

বক্তব্যে তিনি নিরাপদ খাদ্য, রাজধানীর যানজট, মশার উপদ্রব, প্রশ্ন ফাঁস, কর্মসংস্থানের অভাব নিয়েও কথা বলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist