নিজস্ব প্রতিবেদক
আবার বেড়েছে চালের দাম
ভরা মৌসুমেও পেঁয়াজের দাম কমছে না
খুচরা বাজারে ফের চালের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় গতকাল শুক্রবার কেজিতে ২-৩ টাকা বেশি দামে চাল বিক্রি হয়। তবে দাম বাড়ার কারণ জানাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। বরাবরের মতোই তারা দোষ দিয়েছেন মিলারদের ওপর। এছাড়া কয়েক মাস ধরে চড়তে থাকা দেশীয় পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমলেও সেদেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। তবে সবজি ও মাছের দাম রয়েছে ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে এই বাজার দর। ঢাকার বাজারে সব ধরনের চাল কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়েছে। তবে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের বাজার দরের তালিকায় চালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১ টাকা। বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজি প্রতি নাজিরশাইল চালের দাম ৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৩ টাকায়, ১ নম্বর মিনিকেটের দাম ৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়, ২ টাকা বেড়ে সাধারণ মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকায়, বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায় এবং স্বর্ণা ও পারিজা চালের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী আবু রায়হান বলেন, চালের দাম বাড়ার জন্য মিলাররাই দায়ী। তারা যেভাবে দাম নির্ধারণ করেন সে দামেই বিক্রি করতে হয়।
অপর ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া বলেন, মিলাররা বলেন ধানের দাম বেশি, তাই চালের দামও বেড়েছে। এক্ষেত্রে খুচরা ব্যবসায়ীদের কিছুই করার নেই।
অন্যদিকে, পেঁয়াজের বাজারেও অস্থিরতা চলছে। শীতের সবজির সঙ্গে বাজারে এসেছে নতুন পেঁয়াজ। কিন্তু দামে তেমন কোনো হেরফের ঘটছে না। অবশ্য গত কয়েক মাস ধরে চড়তে থাকা দেশীয় পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমলেও দেশীয় পেঁয়াজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকা ওই দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ এখনো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫৫ ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়।
মহাখালী কাঁচাবাজারে ক্রেতা মিঠুন বলেন, পেঁয়াজ ও চালের দামে আমাদের পকেট উজাড়। এতদিন ধরে চাল ও পেঁয়াজের দাম বাড়ছে, পেঁয়াজের বাজারেও অস্থিরতা চলছে। সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫৫ ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৫০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়।
এদিকে, পেঁয়াজ ও চালের বাজারে ক্রেতারা অস্বস্তিতে থাকলেও সবজির বাজারে ক্রেতাদের জন্য স্বস্তি রয়েছে। সবজির খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় অর্ধেক দামে এখন লাউ বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ১০০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকালের বাজারে ৫০ থেকে ৬০ টাকাতে বিক্রি হয়েছে লাউ। পাকা টমেটো মানভেদে ১৫-২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। এক সপ্তাহ আগেও পাকা টমটোর কেজি ছিল ৩০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন টমেটোর ভরা মৌসুম। আড়তেও পর্যাপ্ত টমেটো পাওয়া যাচ্ছে, কোনো সংকট নেই। তাই দাম কম।
এছাড়া ফুলকপি আকারভেদে ২৫-৩৫ টাকা, শসা প্রতিকেজি ৪০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, সিম ৪০ টাকা, বেগুন (কালো) ৪০, বেগুন (সাদা) ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা এবং মটরশুটি ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে।
মাছ বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি রুই মাছ ২৩০-২৮০ টাকা, কাতল ২২০-২৫০ , পাঙ্গাশ ১২০ থেকে ১৫০, সিলভারকার্প ১৫০, তেলাপিয়া ১৮০, শিং ও মাগুর মাছ বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে। প্রতি কেজি টেংরা বিক্রি হয়েছে ৩৮০-৪৫০ টাকা, বাটা মাছ কেজিপ্রতি ৩২০-৪০০ টাকা। এছাড়া সাগরের মাছের মধ্যে ৭০০-৮০০ গ্রাম সাইজের প্রতি কেজি ইলিশ ৮০০ টাকা, কোরাল প্রতি কেজি ৪০০-৫০০, রূপচান্দা আকারভেদে ৫৫০-৭০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে।
মাংসের বাজার রয়েছে স্থিতিশীল। গরুর মাংস ৪৮০-৫০০ টাকা, খাসি ৭০০-৭৫০, ব্রয়লার মুরগি ১৪০ টাকা, দেশি মুরগি ২৫০-৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে।
"