নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেসবুকে ‘ব্লাড ডোনেশনের’ আড়ালে প্রশ্ন ফাঁস গ্রেফতার ৫
প্রশ্নপত্রের উত্তর লিখতেন ক্যামব্রিজের প্রধান শিক্ষক
ফেসবুকে ‘ব্লাড ডোনেশন’ নামে একটি গ্রুপ খোলা হয়। সেই গ্রুপেই নির্বিঘেœ প্রশ্নপত্র ফাঁস করে আসছিল একটি চক্র। চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেগুলো ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে চার শিক্ষকসহ ‘রকি ভাই’ নামে ফেসবুকের একটি গ্রুপের অ্যাডমিনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গত রোববার ঢাকার উত্তরখান ও গাজীপুর থেকে আটটি মোবাইল ফোনসেট ও একটি ট্যাবসহ গ্রেফতার করা হয় তানভীর হোসেন (২৯), হাসানুর রহমান ওরফে রকি ভাই (২৯), মো. সজীব মিয়া (২৬), মো. এনামুল হক (২৭) ও মো. ইব্রাহিম (২১) নামে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের এই পাঁচজনকে।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতার ব্যক্তিরা ফেসবুকে ‘ব্লাড ডোনেশন’ নামে একটি গ্রুপ খুলে প্রশ্ন ফাঁস করত। ফেসবুকে তাদের ব্লাড ডোনেশন-১, ২, ৩ নামে বেশ কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জানান, গ্রেফতার সজীব মিয়া ক্যামব্রিজ হাইস্কুলের হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক। ইব্রাহিম এবং এনামুল হক সৃজনশীল কোচিং সেন্টারের শিক্ষক। তানভীর হোসেন উত্তরখানের ক্যামব্রিজ হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তিনি মূলত ফাঁস হওয়া প্রশ্ন নিয়ে দ্রুত তা সমাধানের কাজ করে দিতেন। তিনি আরো জানান, ট্যাবের ইলেক্ট্রনিকস ডিভাইসের ভেতরে এসএসসি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রশ্নপত্রও মিলেছে। এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
র্যাব জানায়, হাসানুর রহমান একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তার ফেসবুক আইডি ‘রকি ভাই’। প্রশ্নপত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে তার বেশ খ্যাতি আছে। সে ফেসবুক গ্রুপের এডমিন। গত চার বছর ধরে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত হাসানুর। গ্রেফতার হাসান পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২ মাস আগে থেকেই ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমোতে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মানি ট্রান্সফার নম্বর আইডি দিয়ে প্রচারণা করতে শুরু করেন। প্রচারণায় উল্লেখ থাকে যে, যারা প্রশ্ন পেতে চায় তারা ২০০০ টাকার বিনিময়ে তার গ্রুপের সদস্য হতে পারেন। পরীক্ষার দিন ভোরে হাসানুর রহমান ফাঁস হওয়া প্রশ্ন গ্রেফতার শিক্ষকদের সরবরাহ করতেন। শিক্ষকরা খুব কম সময়ের মধ্যে প্রশ্নপত্রগুলো সমাধান করে হাতে লেখা উত্তরপত্র সরবরাহ করতেন।
র্যাব জানায়, ফাঁস হওয়া প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার নতুন কৌশল গ্রহণ করেছিলেন গ্রেফতাররা। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তারা ব্লাড ডোনেশন-১, ব্লাড ডোনেশন-২ এবং ব্লাড ডোনেশন-৩ নামে গ্রুপ খুলে, যাতে কেউ একে প্রশ্ন ফাঁসের গ্রুপ মনে না করতে পারে।
"