নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলখানা তো আয়েশের জায়গা নয় : কাদের
কারাগারে খালেদা জিয়াকে আইন অনুযায়ী প্রাপ্য সব সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘একটা বিষয় হচ্ছে, জেল তো জেলই। জেল তো আরাম-আয়েশের জায়গা নয়।’ গতকাল রোববার সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত বৃহস্পতিবার আদালত খালেদা জিয়াকে ৫ বছর কারাদন্ডের রায় দেওয়ার পর পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে রাখা হয়েছে তাকে। বিএনপি নেতারা কারাগারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা দিতে দাবি জানিয়েছেন; তবে কারা কর্তৃপক্ষ বলেছে, কারাবিধি অনুযায়ী তিনি এই মর্যাদা পান না।
বন্দি খালেদার কোনো অমর্যাদা করা হচ্ছে না দাবি করে কাদের বলেন, ‘উনি কয়েকবার প্রধানমন্ত্রী, একটা বড় দলের চেয়ারপারসন। কাজেই তার কোনো ধরনের অসম্মান, অমর্যাদা বা তার সুযোগ-সুবিধা থেকে তাকে বঞ্চিত করাÑসেটা এখন পর্যন্ত হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমি যতদূর জানি, বেগম জিয়াকে এখন একটা রুম মেরামত করে দেওয়া হয়েছে, আগের জেল সুপারের রুম ছিল (ওটা)। ওই রুমটা আমরা দেখেছি। ওই রুমটা বসার জায়গা। তারেক জিয়া, আমি ওই রুমটাতে বসেছি। এখন সেই রুমটাকে রিনোভেট করে বেগম জিয়াকে রাখা হয়েছে।’ সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে বন্দি হয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের; তখন তিনি কারাগারকে ‘রাজনীতিকদের পাঠশালা’ বলেছিলেন।
খালেদাকে প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা না দেওয়ার বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আক্ষরিক অর্থে যেটা ডিভিশন বলে, ডিভিশন দেওয়ার যে বিষয়, সে বিষয়টা এখনো অনুপস্থিত আছে। হয়তো হয়েও যাবে। তবে তাকে কোনো অমর্যাদা করা হচ্ছে না; তিনি যা চাচ্ছেন, তাকে দেওয়া হচ্ছে।’
খালেদার সঙ্গে তার গৃহকর্মী ফাতেমা বেগমকে রাখতে তার আইনজীবীদের আবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেনের পর দুই নেত্রীকে যখন মাইনাস করার পরিকল্পনা ছিল, তখনো কাউকে পরিচারিকা অ্যালাউ করা হয়নি। সেটাও তো জেল, সাব-জেল জেল একই তো। এটা জেল কোডের নিয়ম। এ পর্যন্ত ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু, মওলানা ভাসানী সবাই তো জেলে ছিলেন। কখনো ব্যক্তিগত কোনো সাহায্যকারী, আমি কাজের ছেলে কাজের মেয়ে বলব না, ব্যক্তিগত কোনো সাহায্যকারীর ভেতরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
কারাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই জানিয়ে কাদের বলেন, ‘আমরা ডিভিশনে ছিলাম। এসি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এর আগেও উনি জেলে ছিলেন, আমাদের নেত্রীও ছিলেন। তখন কিন্তু এসি দেওয়া হয়নি। এটা কেন যে দাবি করছেন, ঠিক জানি না।’
এই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের বিদেশ থেকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান কাদের। তিনি জানান, অলরেডি ফ্রান্সে ইন্টারপোলের কাছে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এটা তো একটা প্রক্রিয়ার ব্যাপার। দন্ডিতদের মধ্যে তারেক রহমান ও সাবেক মুখ্যসচিব কামালউদ্দিন সিদ্দিকী বিদেশে পালিয়ে আছেন।
"