নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩০ জানুয়ারি, ২০১৮

ঋণপ্রবাহ বাড়িয়ে নতুন মুদ্রানীতি

সরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ অপরিবর্তিত রেখে বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ বজায় রাখতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল সোমবার দুপুরে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর ফজলে কবির ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন সময়ের এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। ঘোষণাপত্রে তিনি বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ ঋণ জোগানের বেসরকারি খাতের অংশের প্রবৃদ্ধি আগেকার ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ মাত্রার চেয়ে উচ্চতর ১৬ দশমিক ৮ শতাংশে প্রক্ষেপিত হয়েছে। সরকারি অর্থায়নে ব্যাংকঋণের ব্যবহার কমে যাওয়ায় বেসরকারি খাতের জন্য ঋণপ্রবাহ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১৬ দশমিক ২ শতাংশ ধরা হয়েছিল। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৮ দশমিক ১ উঠেছে। অন্যদিকে নতুন মুদ্রানীতিতে সরকারি ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা আগের মতোই ১৫ দশমিক ৮ শতাংশে স্থির রাখা হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে গভর্নর বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে দীর্ঘকাল বিরাজমান প্রবৃদ্ধি স্থবিরতা কাটিয়ে ব্যাপক বিস্তৃত গতিশীলতা ফিরেছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও উৎপাদন কর্মকান্ডের মূলধনী যন্ত্রপাতি ও উৎপাদন উপকরণাদি আমদানির জোরালো প্রবৃদ্ধি এসেছে। বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধিও ১৬ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বিনিয়োগ কর্মকান্ডের প্রসারের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত প্রতিবন্ধকতাগুলোর নিরসনে কিছুটা অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগ ও উৎপাদন কর্মকান্ডে আসা অনেকটা আকস্মিক এই জোরালো গতিবেগ সামনের দিনগুলোয় দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধির জন্য বেশি ইতিবাচক।’ তবে একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির চাপ ও বৈদেশিক লেনদেন খাতে স্থিতিশীলতার জন্য নিকটমেয়াদি ঝুঁকিও অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন গভর্নর।

তিনি বলেন, ‘দেশজ উৎপাদন প্রবৃদ্ধিতে সূচনা হওয়া গতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থেই মূল্যস্ফীতি চাপের ও বৈদেশিক লেনদেন খাতে স্থিতিশীলতার ওপর চাপের বর্ধিত ঝুঁকি উপশম করে সহনীয় মাত্রায় নামানো আশু প্রয়োজন। আর এই প্রয়োজনের প্রেক্ষাপটেই অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতিভঙ্গি ও প্রাসঙ্গিক করণীয়গুলো নির্ধারণ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ ও উৎপাদন কর্মকান্ডে প্রবৃদ্ধি গতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে অভ্যন্তরীণ ঋণের জোগান প্রবৃদ্ধিতে সংকোচন না এনে আগেকার ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ মাত্রায় অপরিবর্তিত রাখা হবে, যা অনধিক ৬ দশমিক শূন্য শতাংশ মূল্যস্ফীতিতেও দেশজ উৎপাদনে প্রকৃত প্রবৃদ্ধির ৭ দশমিক ৪ শতাংশ সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত হবে।’

গভর্নর জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের রেপো, রিভার্স রেপো নীতি সুদহারগুলোও ৬ দশমিক ৭৫ এবং ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশে অপরির্তিত রাখা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ ঋণ জোগানের বেসরকারি খাতের অংশের প্রবৃদ্ধি আগেকার ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ মাত্রার চেয়ে উচ্চতর ১৬ দশমিক ৮ শতাংশে প্রক্ষেপিত হয়েছে।

সরকারি অর্থায়নে ব্যাংকঋণের ব্যবহার কমে যাওয়ায় বেসরকারি খাতের জন্য এই বৃদ্ধির পরিসর এসেছে। আমদানির বৈদেশিক পরিশোধ দায় স্ফীতির সম্ভাব্য মাত্রায় হ্রাস ধরেও নিট বৈদেশিক সম্পদের প্রবৃদ্ধি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের শেষে প্রায় শূন্যের কোঠায় (০.১ শতাংশে) দাঁড়াবে বলে আশার কথা শোনান কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist