নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১০ জানুয়ারি, ২০১৮

খালেদা জিয়ার প্রচারণায় অংশ নিতে বাধা নেই : সিইসি

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রপদে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। একসঙ্গে ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটির নতুন ৩৬টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি এ দুটিতে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো নুরুল হুদা গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এ তফসিল ঘোষণা করেন। এ সময় নির্বাচন কমিশনার, ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব, দুই সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইসির যুগ্মসচিব (জনসংযোগ) উপস্থিত ছিলেন।

তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৮ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র বাছাই ২১ ও ২২ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৯ জানুয়ারি। আর ভোট হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি। এই তফসিলে ঢাকা উত্তরের মেয়রপদে উপনির্বাচন হবে। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি করে ৩৬টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ছয়টি করে ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নির্বাচন হবে। তফসিল ঘোষণার পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিইসি। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রচারণায় অংশ নিতে আইনি কোনো বাধা নেই এবং এ ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হবে না বলে জানিয়েছেন নুরুল হুদা।

২০১৫ সালের মতো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের দিন মাঝপথে কোনো প্রার্থীর নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘটনা এবার ঘটবে না বলে আশাবাদী প্রধান নির্বাচন কমিশনার। শেষ পর্যন্ত সবাই এই ভোটে থাকবে বলে আশা করছেন তিনি।

সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে ইসি আপসহীনÑমন্তব্য করে সিইসি বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে কোনো কিছুর সঙ্গে সমঝোতা হবে না। অবশ্যই আমরা আশা করব সব দলই নির্বাচনে অংশ নেবে এবং শেষ পর্যন্ত থাকবে।’ আড়াই বছর আগে ঢাকা সিটির ভোটের সময় খালেদা গাড়িবহর নিয়ে প্রচারণায় নেমে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। এবার খালেদা জিয়ার প্রচারে কোনো বাধা আসবে কি নাÑজানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘প্রতিবন্ধকতার প্রশ্নই উঠে না। উনি (খালেদা জিয়া) বা উনার মতো কেউ প্রচারে গেলে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই।’

আগামী সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়া নুরুল হুদা বলেন, ‘সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা দরকার। গতবার নির্দলীয়ভাবে হলেও আইন সংশোধনের পর এবার দলীয় প্রতীকে লড়বেন ঢাকা উত্তরের মেয়রপ্রার্থীরা।’

সংসদ নির্বাচনের আগে ঢাকার এই উপনির্বাচনকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনের আগে রাজধানীর এ ভোটটি আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ তো বটেই, খুবই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন, আমরাও এটাকে আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছি। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমসহ সবার তৎপরতাও থাকবে বেশি।’

এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল হুদা জানান, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করতে কোনো ধরনের আপস করবেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা আপসহীন থাকব। কোনো কিছুর সঙ্গে সমঝোতা করব না। সবার অংশগ্রহণমূলক একটা নির্বাচন চাই আমরা। সকলে মিলে ভালো নির্বাচন করব। এজন্য সরকারের সহযোগিতা দরকার। রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, ভোটারসহ সবার সহায়তা করতে হবে।’ ঢাকা সিটির এ ভোট উৎসবমুখর হবে বলে আশা রাখেন নুরুল হুদা।

তিনি বলেন, ‘আশা করি, নির্বাচন উৎসবমুখর হবে। ভোটকেন্দ্রে কোনো গণমাধ্যমকে বাধা দেওয়া হবে না। তবে সাংবাদিক, পর্যবেক্ষকসহ সংশ্লিষ্টরা যেন নীতিমালা মেনেই কাজ করেন, সেদিকে নজর রাখতে হবে।’ আগাম প্রচারণামূলক সামগ্রী নির্ধারিত সময়ে না সরানোয় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুশিয়ারি দেন নুরুল হুদা।

ঢাকা উত্তরে নির্বাচন না হওয়ার যে গুঞ্জন রয়েছে, সে বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘কেউ মামলা করলে তো তা নিয়ে ইসির করার কিছু নেই।’ এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘রংপুর সিটি করপোরেশনের মতো ঢাকা উত্তর সিটিতে একটি এবং দক্ষিণ সিটিতে একটি ইভিএম ব্যবহার করার চিন্তা আছে। যদি সব কিছু ঠিকঠাক থাকে আর যদি কারো কোনো আপত্তি না থাকে, তাহলে দুটি ওয়ার্ডে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ভোট হয়। আওয়ামী লীগের সমর্থনে ওই নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন সদ্য প্রয়াত আনিসুল হক। চিকিৎসাধীন গত ৩০ নভেম্বর তার মৃত্যুতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ১ ডিসেম্বর থেকে ওই পদটি শূন্য ঘোষণা করে। আইন অনুযায়ী ৯০ দিন অর্থাৎ ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ উপনির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির। এ ছাড়া দুই সিটির আশপাশের ইউনিয়নযুক্ত করে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ড গঠন করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এরপর গত বছর ৮ আগস্ট এসব ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ভোট করতে ইসিকে অনুরোধ জানানো হয় সরকারের পক্ষ থেকে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist