নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ জানুয়ারি, ২০১৮

জনগণ ভোট দিয়েছে বলেই চার বছর পূর্ণ করলাম

শেখ হাসিনা

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ভোটারবিহীন ছিল না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ নয়, ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিলেন ‘৮৮ সালে এরশাদ ও ‘৯৬ সালে খালেদা জিয়া। তাদের কেউ বেশি দিন টিকে থাকতে পারেননি। জনগণ ভোট দিয়েছে বলেই চার বছর পূর্ণ করতে পারলাম। পদ্মা সেতু নিয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার মানসিক সমস্যা দেখা দিল কি না, সেটাও বলতে পারছি না। পরীক্ষা করে দেখা দরকার, তার মাথা ঠিক আছে কি না। গতকাল শনিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বিএনপি বর্জন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি পূরণ না হওয়ায়। আর সেই নির্বাচন ঠেকাতে সহিংস আন্দোলন হয় সে সময়। ভোটের আগে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত পাঁচ শতাধিক স্কুলে আগুন দেওয়া হয়। ভোটের দিনও সহিংসতা হয় বেশ কিছু এলাকায়। বিরোধীদের হামলায় প্রাণ যায় একজন নির্বাচনী কর্মকর্তার। আবার বিভিন্ন এলাকায় ভোট দিতে যাওয়ার সময় হামলার শিকার হন ভোটাররা।

বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, তাদের বর্জনের মুখে সেই ভোটে পাঁচ শতাংশ মানুষও অংশ নেয়নি। আর যারা ভোটকেন্দ্রে যায়নি, তারা তাদের আন্দোলনে পরোক্ষ সমর্থন দিয়েছেন। তবে নির্বাচন কমিশন যে সময় ৩৯.৬৬ শতাংশ ভোট পড়ার কথা জানায়। এই বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন বানচালে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে।... কিন্তু জনগণ ভোট দিয়েছে বলেই চার বছর পূর্ণ করতে পারলাম।’

খালেদা জিয়ার টুইট বার্তার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা টুইট করেছেন আওয়ামী লীগ বুলেটে বিশ্বাস করে, তিনি ব্যালটে বিশ্বাস করেন। আমি ৮১ সালে দেশে ফিরে বলেছিলাম ক্ষমতা বদল হবে বুলেটে নয়, ব্যালটে। বুলেটের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে জিয়া, তার স্ত্রী তার থেকে আরো একধাপ এগিয়ে দেশ বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে।’ এই টুইট বার্তা খালেদা জিয়ার নামে এলেও এটা তার লেখা কি না, এ নিয়েও সন্দিহান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘জানি না টুইট উনি নিজে লিখেছেন কী না নাকি কাউকে দিয়ে করিয়েছেন কি না...সন্দেহ।’

এদিকে কয়েকদিন আগে ঢাকায় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় সরকারের পদ্মা সেতু নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া বলেন, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু করা হচ্ছে। কেউ এই পদ্মা সেতুতে উঠবেন না।

খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার মানসিক সমস্যা দেখা দিল কি না, সেটাও বলতে পারছি না। পরীক্ষা করে দেখা দরকার, তার মাথা ঠিক আছে কি না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বুলেট দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে জিয়া... আর দেশ বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে খালেদা জিয়া। তাদের মুখে গণতন্ত্র মানায় না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ ভোট দিয়েছিল বলেই আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে এবং ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে পেরেছে। বিএনপি অস্ত্রের মুখে ক্ষমতায় এসেছে। বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সায়েমকে অস্ত্রের মুখে অসুস্থ বানিয়ে নিজে প্রেসিডেন্ট হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। জোর করে ঘোষণা দিয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। জোর করে ঘোষণা দিয়ে প্রেসিডেন্ট হন আইয়ুব খান, এরপর জিয়া, এরপর এরশাদ।

শেখ হাসিনা বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ভোটারবিহীন ছিল বলে খালেদা জিয়া মিথ্যাচার করছেন। খালেদা জিয়া দেশে নির্বাচন চান না। নির্বাচন ঠেকাতে তিনি আগুন দিয়ে, বোমা মেরে মানুষ হত্যার খেলায় মেতে উঠেছিলেন। জিয়াউর রহমান আমার বাবা, মা, ভাই সবাইকে হত্যা করে ক্ষমতা স্থায়ী করেছে। তার মতো খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান আমাকে হত্যার চেষ্টা করে ক্ষমতা স্থায়ী করতে চেয়েছিল। তারা বোমা হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে।

দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, এডভোকেট সাহারা খাতুন, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, আবদুর রাজ্জাক, ফারুক খান, আবদুল মান্নান খান, মো. নাসিম, পীযুষ ভট্টাচার্য, রমেশ চন্দ্র সেনসহ কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ নেতা উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist