গাজী শাহনেওয়াজ

  ০৭ জানুয়ারি, ২০১৮

ইসির নির্বাচনী বাজেট ১২০০ কোটি টাকা

জাতীয় সংসদ এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বাজেটের আকার বাড়ছে। প্রতি পাঁচ বছরে এই বৃদ্ধির হার ১০০ কোটি টাকা করে। গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বাজেট বরাদ্দ ছিল ৯৮৯ কোটি টাকা। এবার ওই দুটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হচ্ছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। গত নির্বাচনের চেয়ে দুইশ কোটি টাকা বেশি চাওয়া হচ্ছে।

আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে নির্বাচন কমিশনের অন্যান্য নির্বাচন, কমিশনের অফিসিয়াল খরচ বাদে শুধু সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ওই টাকা বরাদ্দ চাওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে কমিশনের বাজেট শাখা এ সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে কাজ শুরু করেছে। প্রস্তাব চূড়ান্ত হলে কমিশনের অনুমতি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হবে। খবর কমিশনের কর্মকর্তা সূত্রের।

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ এবং পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় কত নির্ধারণ হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। এখন কমিশন ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনের এখনো সময় আছে, শিগগিরই এসব বিষয়ে কমিশনের পরামর্শ নিয়ে বাজেট প্রস্তাব করা হবে। পরিচয় গোপন রেখে ইসির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেট কত নির্ধারণ করা হবে তা আগেই চূড়ান্ত হয়ে যায়। তাই কমিশন কখন বাজেট নির্ধারণ করবে সে জন্য বসে থাকার সুযোগ নেই সরকারের। ইতোমধ্যে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ এবং পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাইতে প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হচ্ছে। আশা করছি, শিগগিরই তা সরকারের কাছে পাঠানো হবে।

ইসির তথ্য মতে, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য ব্যয়ের খাত ধরা হয়েছে ২৯টি। তবে নির্বাচন পরিচালনা খাতের খতিয়ান বড় হলেও সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায়। খাতওয়ারী অর্থ বরাদ্দের হার বিগত নির্বাচনের চেয়ে দ্বিগুণ বা অনেক ক্ষেত্রে তিনগুণ ও চারগুণ করা হয়েছে। সম্ভাব্য খাতগুলো হচ্ছে, নির্বাচনের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা (প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং এবং পোলিং অফিসার), স্থায়ী ও অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র স্থাপন, প্রতি কেন্দ্রের মনিহারি দ্রব্য, মালামাল পরিবহন খাত, রিটার্নিং অফিসারের ডাক, ফ্যাক্স ও আপ্যায়ন খরচ, সহকারী রিটার্নিং অফিসারের ডাক, ফ্যাক্স ও আপ্যায়ন খরচ, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নি অফিসারের যাতায়াত বাবদ ব্যয়।

সূত্র জানিয়েছে, প্রতি পাঁচ বছর পর পর সংসদ নির্বাচনের ব্যয় বাড়ছে চক্রাকার হারে। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যয়ের বাজেট ছিল ৭২ কোটি ৭১ লাখ টাকা। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ওই বাজেট ৯২ কোটি ২৯ লাখ টাকা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ১৬৫ কোটি ৫০ হাজার ৬৮৭ টাকা।

সর্বশেষ দশম সংসদ নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫০০ কোটি টাকা। তবে বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জন করে। ফলে ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ভোট হয় ১৪৬ আসনে, বাকিগুলো অর্থাৎ ১৫৪ আসনের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায়। এই নির্বাচনের ব্যয় কমে দাঁড়ায় ৩০০ কোটি, যার মধ্যে ব্যয় হয় ২৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে ব্যয় হয় ১৪৭ কোটি টাকা এবং ১৪৪ কোটি ৫১ লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয় হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায়।

এবার আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। বর্তমান সরকারের মেয়াদে অনুষ্ঠিত তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১২০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়। চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৮৯ কোটি টাকা। এবার আগামী বছরের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা, যা গত নির্বাচনের চেয়ে ১১১ কোটি টাকা বেশি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist