নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৬ জানুয়ারি, ২০১৮

দেশ কাঁপছে শৈত্যপ্রবাহে

দুজনের মৃত্যু: সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পৌষের তৃতীয় সপ্তাহে এসে সারা দেশে জেঁকে বসেছে হাড়কাঁপানো শীত। বিশেষ করে ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে শীতের প্রকোপ বেশি। আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের বেশির ভাগ এলাকায় মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। গতকাল শুক্রবার দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও রাতে শীতের অনুভূতি ছিল আগের দিনের মতোই। সেই সঙ্গে গত দুই দিন ধরে বয়ে যাওয়া শীতল হাওয়া অব্যাহত ছিল। দেশের নদী এলাকাগুলোতে মৃদু থেকে মাঝারি কুয়াশা ছিল। এদিকে, হিমালয় ছুঁয়ে আসা হিম বাতাস কাঁপিয়ে তুলেছে উত্তরের জনপদের মানুষগুলোকে। বিশেষ করে পথের ছিন্নমূল মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করেই শীত জেঁকে বসায় নিদারুণ কষ্টে দিন-রাত কাটছে তাদের। দুপুরে সূর্যের সোনালি রোদও বেশিক্ষণ উষ্ণতা ছড়াতে পারছে না। শৈত্যপ্রবাহের কারণে কুড়িগ্রাম ও হবিগঞ্জে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যা দেশের অন্যদিকে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তাপমাত্রা সবচেয়ে কমে গেছে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গে।

আবহাওয়াবিদ নিঝুম রোকেয়া আহমেদ জানিয়েছেন, ঘন কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। তবে দেশের সব জায়গায় একই অবস্থা নয়। কোথাও কোথাও ঘন, কোথাও মাঝারি থেকে ঘন। গতকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের হ এরপর পৃষ্ঠা ২

সবচেয়ে কম (৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়। এছাড়া কুমারখালীতে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি, সাতক্ষীরা-খুলনায় ১০ ডিগ্রি, যশোরে ৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি, রংপুরে ৯ ডিগ্রি, দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি, সৈয়দপুরে ১০ ডিগ্রি, রাজারহাটে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি, বাদলগাছীতে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি, বগুড়ায় ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি, ঈশ্বরদীতে ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি, রাজশাহীতে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আর ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বাতাস থাকায় শীত তীব্র পর্যায়ে চলে যাওয়ার পর্যায়ে রয়েছে।

আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, জানুয়ারিতে একটি মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তীব্র (৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং ২-৩টি মৃদু (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয় পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় শীত বেড়েছে বাংলাদেশে। এই শৈত্যপ্রবাহ চলতে পারে আরো দুই এক দিন।

হবিগঞ্জ : শৈত্য প্রবাহে বিপর্যস্ত হবিগঞ্জ। শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন এলাকায় অজ্ঞাত (৬০) এক নারী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে তার মৃত্যু হয়। পরে তার লাশটি হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক দেবাশীষ রায় জানান, হঠাৎ ঠা-া বাড়ায় শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তির সংখ্যাই বেশি। আক্রান্তদের অনেকেই ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, হৃদরোগ নিয়ে হাসপাতালে আসছেন। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের মধ্যেই হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রায় ৩০ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে।

এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ সাজিদুল ইসলাম জানান, শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনে এক অজ্ঞাত নারী প্রচন্ড ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়লে রেলওয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

কুড়িগ্রাম : তীব্র ঠা-ায় কোথাও কোথাও কোল্ড ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রামে দেড় বছর বয়সি এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে ডায়রিয়ায়। শীতে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষকে।

রাজশাহী : রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে চলা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত ছিল। গতকাল শুক্রবার তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও কমেনি শীতের দাপট। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কাবু পদ্মা পাড়ের ছিন্নমূল মানুষ। তীব্র শীতে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে কোল্ড ডায়রিয়া। এ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাড়ছে নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডা. আসাদুজ্জামান জানান, হঠাৎ ঠা-া বাড়ায় শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তির সংখ্যাই বেশি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist