সারা দেশে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আজ সোমবার উদ্যাপন হবে ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব-২০১৮’। ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়া হবে। এ বছর বিভিন্ন স্তরের চার কোটি ৩৭ লাখ ৬ হাজার ৮৯৫ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ১৬২ কপি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে। উৎসব উদ্যাপনে আলাদাভাবে প্রস্তুতি শেষ করেছে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। রাজধানীর দুটি স্থানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে কেন্দ্রীয়ভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এর আগে শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাসভবন গণভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে এর উদ্বোধন করেন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আজ সকাল ১০টায় রাজধানীর আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল ও কলেজ মাঠে দেশব্যাপী মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তক উৎসবের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে প্রাথমিক পর্যায়ের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক উৎসব উদ্বোধন করবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। রাজধানীর কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের মাধ্যমিক স্তরের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ উৎসব উদ্যাপন হবে। বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উৎসবে উপস্থিত থাকবেন।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য অধ্যাপক মশিউজ্জামান এ প্রসঙ্গে প্রতিদিনের সংবাদকে গতকাল রোববার বলেন, ‘উৎসব উদ্যাপনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বাঁধাই করে জেলা-উপজেলায় পাঠানো হয়েছে।’ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ৯৬৩ জন শিক্ষার্থীর জন্য ব্রেইল পদ্ধতির আট হাজার ৪০৫ কপি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

মশিউজ্জামান বলেন, ‘২০১৮ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবারের মতো প্রাথমিক স্তরের প্রথম শ্রেণির পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য (চাকমা, মারমা, গারো, সাদরি ও ত্রিপুরা) ২৫ হাজার ৩৫৭ জন্য শিক্ষার্থীর মাঝে ৭৯ হাজার ৯৯২ কপি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে। এ ছাড়াও প্রাক-প্রাথমিক স্তরে ৩২ হাজার ৯৪৯ শিক্ষার্থীর জন্য ৬৯ হাজার ২৮৪ কপি মাতৃভাষায় রচিত পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের মাধ্যমিক পর্যায়ের ৫৬টি পাঠ্যপুস্তকের জন্য প্রায় ৪৬ লাখ শিক্ষক শিক্ষা কার্যক্রম নির্দেশিকা প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসায় দুই সেট করে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে। ২০১৮ সালে অবশিষ্ট ১৫টি বিষয়ের নির্দেশিকা সরবরাহ করা হয়েছে।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গিয়াস উদ্দিন আহমেদ এ প্রসঙ্গে জানান, প্রাথমিক পর্যায়ের বই উৎসবকে আরো উৎসবমুখর ও শিক্ষার্থীদের আনন্দ বাড়াতে বিভিন্ন তারকার পাঠ্যপুস্তক উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উৎসবে রাজধানীর স্কুলগুলো থেকে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীকে উপস্থিত রাখতে বলা হয়েছে। এসব স্কুলের শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকবেন।

"