মুখোমুখি
‘কাজটি বেশ কষ্টসাধ্য ছিল’
উত্তর চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী নদী হালদা। নদীটি ছুঁয়ে গেছে হাটহাজারী, রাউজান ও ফটিকছড়ির বিস্তৃত অঞ্চল। মিঠাপানির মাছের উৎকৃষ্ট প্রজনন ক্ষেত্র এই নদীটি। নদীর গতি-প্রকৃতি নিয়ে দেশে-বিদেশে অসংখ্য সিনেমা তৈরি হয়েছে। এবার হলো হালদা নিয়ে। তৌকীর আহমেদ পরিচালিত বহুল প্রতীক্ষিত ‘হালদা’ সিনেমাটি বিজয়ের মাসের প্রথম দিনে মুক্তি দেওয়া হবে। এতে অভিনয় করেছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। ছবির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন তুহিন খান নিহাল।
সম্প্রতি ‘ডুব’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। এতে কেমন সাড়া পেয়েছেন?
অনেক সাড়া পেয়েছি। আমি চেয়েছি দর্শকদের ভালো একটি কাজ উপহার দিতে। অনেকেই পজিটিভ বলেছে, আবার কেউ কেউ নেগেটিভও বলেছে। অনেক সাধারণ মানুষ যাদের জন্য আমাদের শিল্পীদের এই ত্যাগ তাদের কাছ থেকে যখন শুনি, ‘তিশা তুমি যখন গ্লাস হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলে, তোমার চোখ দিয়ে যখন পানি ঝরছিল, আমরাও সাথে সাথে কেঁদেছি।’ এ কথাটি আমার জন্য বিশাল বড় অর্জন।
‘ডুব’ ছবির সাফল্যের পর আরো একটি ছবিতে আপনার অভিনয়ের কথা শোনা যাচ্ছে-
হ্যাঁ, তাই। ছবির নাম ‘শনিবার বিকেলে’। এই ছবি নিয়ে এখনো বলার মতো সময় হয়নি। হলে অবশ্যই জানাব। তবে এই মুহূর্তে এটুকু বলতে পারি, আমি ছবিটিতে কাজ করছি। গল্প রেডি হয়েছে। কিছু শিল্পীও নির্বাচন করা হয়েছে।
‘হালদা’ ছবিতে আপনার চরিত্র সম্পর্কে জানতে চাই-
‘হালদা’ ছবিতে আমার চরিত্রের নাম হাসু। গল্পটি চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী নদী হালদাকে নিয়ে। এই নদীকে ঘিরেই আমার চরিত্র। নদীর স্রোতের সঙ্গে জীবনকে তুলনা করেই এই ছবির গল্পের সূত্রপাত। ‘হালদা’ ছবিতে একটি ভিন্ন চরিত্রে দর্শক আমাকে দেখতে পাবেন। আমি চেষ্টা করেছি চরিত্রটি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে।
হালদা ছবির সঙ্গে কীভাবে যুক্ত হলেন?
তৌকীর ভাইয়ের সঙ্গে এই প্রথম কোনো ছবিতে কাজ করলাম। হালদা ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার প্রসঙ্গটি ছিল এমন-তৌকীর ভাই আমাকে একদিন বললেন তিনি একটি ছবি বানাবেন। আমার সঙ্গে যেহেতু তার কোনো ছবিতে কাজ করা হয়নি এবার তিনি তা করতে চান। বিপাশা আপুও চান চরিত্রটি আমাকে দিয়ে করাতে। এরপর আমি গল্পটা শুনি। গল্প শোনার পর আমি বলে দিলাম, কাজটি আমি করছি। কারণ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গল্পটি আমার ভীষণ ভীষণ ভালো লেগেছে।
ছবির ভাষা কেমন ছিল?
হালদা যেহেতু চট্টগ্রামের একটি নদী। সুতরাং এই ছবিতে অভিনয় করতে গিয়েও আমাদের স্থানীয় ভাষার দিকে খেয়াল রাখতে হয়েছে। তাই চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষাই ব্যবহার করা হয়েছে ছবিতে। এটি শুধু আমার নয়, প্রতিটি চরিত্রই চট্টগ্রামের ভাষার কথা বলেছে।
এমন একটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করতে কেমন লেগেছে?
হালদা ছবিতে হাসু চরিত্রে কাজ করতে আমাকে সাহায্য করেছেন তৌকীর ভাই। বিপাশা আপুও অনেক সাহায্য করেছেন। আমাদের প্রত্যেককে চট্টগ্রামের ভাষা শিখতে হয়েছে। কাজটি সবার জন্যই বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। তবে অভিনয় কতটুকু করেছি বা কেমন করেছি তার বিচারের ভার দর্শকদের ওপর ছেড়ে দিলাম।
ছবিতে কাজ করতে গিয়ে কোনো বিশেষ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন?
প্রকৃতি কখনই আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। তবে আমরা যে লোকেশনে শুটিং করেছি সেটি ছিল অসম্ভব সুন্দর। এ ক্ষেত্রে এইটুকু বলতে চাই, আমাদের মুডের সঙ্গে পরিবেশ-প্রকৃতিও একাকার হয়ে গিয়েছিল। একটি সিক্যুয়েন্স ছিল, আমি আমার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করব। ঠিক এমন সময় হঠাৎ দেখি পেছন দিকে আকাশটা কেমন মেঘাচ্ছন্ন হয়ে গেছে। শুরু হয় মেঘের গর্জন। তখন আমরা ফিল করেছিলাম আসলে আমরা অনেক সৌভাগ্যবান। বলতে গেলে আবহাওয়া আমাদের অনেক সাপোর্ট দিয়েছে। আমরা সবাই চেষ্টা করেছি দর্শকদের ভালো কিছু দেওয়ার।
সহশিল্পীদের সঙ্গে রসায়নটা কেমন ছিল?
এই ছবিতে মোশারফ ভাই, জাহিদ ভাই, নির্মাতা তৌকীর ভাইসহ বলতে গেলে পুরো টিমই ছিল একটি পরিবারের মতো। আনন্দঘন পরিবেশেই আমরা কাজ করেছি। সবাই মিডিয়ার নিয়মিত মুখ। আমাকে সবাই অনেক অনেক সাহায্য করেছেন। এই কাজটি করতে গিয়ে আমি অনেক বেশি এনজয় করেছি।
"