বিনোদন প্রতিবেদক

  ০৪ জুলাই, ২০২০

‘এ দেশে শিল্পীদের যথাযথ মূল্যায়ন হয় না’

বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনের বরেণ্য অভিনেতা মানস বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিনয় জীবনের চার দশকেরও বেশি সময় অতিক্রম করছেন তিনি। দীর্ঘ এ সময়ে অনেক দর্শকপ্রিয় টিভি নাটক, মঞ্চ নাটক, সিনেমা এবং বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে তাকে। ফরিদপুরের ঝিলটুলির ননী বন্দ্যোপাধ্যায় ও সান্ত¡না বন্দ্যোপাধ্যায়ের সন্তান মানস বন্দ্যোপাধ্যায় ফরিদপুরের ‘সুনিয়ম নাট্যচক্র’-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে অভিনয়জীবনে পথচলা শুরু। এই দলের হয়ে প্রথম তিনি বিপ্লব বালার নির্দেশনায় ‘সাজানো বাগান’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। প্রায় পাঁচ বছর এই দলের হয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। পরে ঢাকায় এসে প্রথম খ ম হারুনের প্রযোজনায় ‘সানাই নয়’ নাটকে অভিনয় করেন। যে নাটকে তার বিপরীতে ছিলেন তারানা হালিম। নাটকে তাকে দেখে অনেকে ভেবেছিলেন তিনি কুমার বিশ^জিৎ।

পরে আল মনসুরের প্রযোজনায় ‘লাইলী মজনু’ নাটকে অভিনয় করে সাড়া ফেলেছিলেন তিনি। এতে মজনু চরিত্রে মানস এবং লাইলী চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন প্রয়াত দিতি। এই নাটকের জনপ্রিয়তার রেশ ধরেই পরিচালক ইবনে মিজান মানস বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে নির্মাণ করেছিলেন ‘পুনর্মিলন’ সিনেমাটি। এতে তার বিপরীতে ছিলেন নূতন। নাটকে মানস বন্দ্যোপাধ্যায় আরো সাড়া ফেলেছিলেন জিয়া আনসারীর প্রযোজনায় ‘প্রতিশ্রুতি’, বরকত উল্যাহর প্রযোজনায় ‘ঢাকায় থাকি’, শেখ রিয়াজ উদ্দিন বাদশার প্রযোজনায় ‘টং ঘর’সহ আরো বেশকিছু নাটকে অভিনয় করে। নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘সাহেব’, খান আতাউর রহমানের ‘হিসাব-নিকাশ’, দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘ভাইয়ের আদর’, মতিন রহমানের ‘মন মানে না’সহ আরো বেশকিছু সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসিত হন তিনি।

অভিনয়জীবনের শুরুতে ‘আনোয়ার শার্টিং শুটিং’ ও ‘রবিন ব্লু’-এর বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করেও বেশ আলোচনায় এসেছিলেন তিনি। দেখতে দেখতে মানস বন্দ্যোপাধ্যায় তার অভিনয়জীবনের চার দশক অতিক্রম করেছেন। পেশাগতভাবে ১৯৭৮-৭৯ সালে ‘সানাই ঘর’-এ অভিনয়ের মধ্য দিয়েই তার অভিনয়জীবন শুরু হয়। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে মানস বন্দ্যোপাধ্যায় অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। মোহসীন হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন তিনি। মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাক নাম সন্টু। ফরিদপুরের বন্ধুরা এখনো তাকে সন্টু বলেই ডাকে। এরই মধ্যে মানস বন্দ্যোপাধ্যায় দুটি নতুন বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করেছেন। প্রাণ চাটনীর বিজ্ঞাপনে তার সঙ্গে তারই মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অর্ষা। এটি নির্মাণ করেছেন পলাশ। রবির বিজ্ঞাপনটিও বেশ দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। এটি নির্মাণ করেছেন তানভীর আহসান।

দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময়ে অভিনয়জীবনের পথচলা প্রসঙ্গে মানস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সত্যি বলতে কী দীর্ঘদিনের অভিনয়জীবনের পথচলায় দর্শকের ভালোবাসাই যেন পরম পাওয়া। দর্শক আমার অভিনয় দেখেই তাদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন, এখনো দর্শকের ভালোবাসাতেই সিক্ত হচ্ছি। অভিনয়ের বাইরে তো জীবনে আর কিছুই করিনি, করার চেষ্টাও করিনি। কিন্তু এই দেশে অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিল্পীদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না। মৃত্যুর পর শিল্পীদের মরণোত্তর সম্মাননা দেওয়া হয় অথচ বেঁচে থাকতে শিল্পী তার প্রাপ্য সম্মান পান না। বিষয়টি ইদানীং খুব পীড়া দিচ্ছে আমাকে। তার পরও আমি অভিনেতাÑ এটাই আমার গর্ব, এটাই আমার অহংকার।’

এদিকে প্রতীক ও রোদেলার বাবা মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় দুজন বন্ধু হচ্ছেন নায়ক সুব্রত ও নায়িকা অরুণা বিশ^াস। তার প্রিয় নায়ক রাজ্জাক ও নায়িকা কবরী। প্রিয় টিভি অভিনেতা সৈয়দ আহসান আলী সিডনী ও অভিনেত্রী নাজমা আনোয়ার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close