তুহিন খান নিহাল

  ২১ জানুয়ারি, ২০১৯

আবার সুযোগ চান মুশফিকুর রহমান গুলজার

আমাদের মধ্যে যারা চলচ্চিত্রকে সত্যিই ভালোবাসি, যারা চলচ্চিত্র নির্মাণের অপেক্ষায় রয়েছেন, আমি আশা করছি, যদি আবারও নির্বাচিত হই, তাদের সে সুযোগ করে দেওয়াই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য। সেজন্যই আমার চলচ্চিত্র পরিচালক ভাইদের কাছে আবারও সুযোগ চাই বলে মন্তব্য করেছেন ২০১৯-২০ মেয়াদের নির্বাচনে গুলজার-খোকন পরিষদের সভাপতি পদপ্রার্থী মুশফিকুর রহমান গুলজার। গত বৃহস্পতিবার প্রতিদিনের সংবাদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গত দুই বছরে নিজেদের কমিটি সফল দাবি করে এ পরিচালক নেতা বলেন, ‘আমরা নিজেদের অবশ্যই সফল বলব। কারণ যেভাবে যৌথ প্রযোজনার নামে যৌথ প্রতারণার ভারতীয় ছবি নামেমাত্র শিল্পী দেখিয়ে দেশে চালানো শুরু করেছিল, সেটাকে আমরা বাধ্য করেছি নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করে দেশের শিল্পীদের স্বার্থটা রক্ষা করতে; যাতে আমাদের শিল্পী-কলাকুশলীরা সমানুপাতিক হারে থাকে। এরপর সাফটা চুক্তির মাধ্যমে যেটা হতো, আমাদের ছবি শুধু কাগজেই রফতানি করত, কিন্তু আমাদের ছবি ওখানে যেত না বা চলত না। কিন্তু ওদের ছবি চলত এবং উৎসবের সময়ও এনে চালানো হতো। উৎসবে আমদানি করা ছবি আনা বন্ধ করেছি এবং আমাদের ছবি যে ওখানে যাচ্ছে, তার জন্য ন্যূনতম সেন্সর ছাড়পত্রের কাগজ নিয়ে আসতে হবে, সেই নীতিমালা আমরা করিয়েছি। সেই জায়গা থেকে অবশ্যই বলতে পারি আমরা সফল।’

নিজেদের প্যানেল নির্র্বাচিত হলে প্রাণের এ সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে চান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, আমাদের প্যানেল আবারও নির্বাচন করছে। যার কারণ বিগত দিনে আমরা সরকারে সঙ্গে বেশ কিছু কাজ এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। যেমন সরকারের কাছে সমিতির পক্ষ থেকে দাবি ছিল, সিনেমা হলগুলোতে সরকারি খরচে ডিজিটাল সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করা। সিনেমা হলে ই-টিকিটিং সিস্টেম চালু করা। এগুলো বাস্তবায়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এমনটি হলে আমাদের প্রযোজকরা তাদের ন্যায্য পাওনা ফিরে পাবেন। সারা বিশ্বে যেখানে ই-টিকিটিং সিস্টেম চলছে, সেখানে বাংলাদেশ কেন বাদ থাকবে। এটি আমরা পরিবর্তন করার চেষ্টা করছি। দ্বিতীয়ত, হলে মেশিন ভাড়া বাবদ যে টাকা খরচ হয়, তার পুরোটা প্রযোজকদের দিতে হয়। সেটি যেন না দিতে হয়, সরকারকে বলেছিলাম। সরকার বিষয়টি আমলে নিয়েছে। এরই মধ্যে সিনেমা হলগুলোকে ডিজিটাল করার উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা আশা করছি, নতুন সরকার শিগগিরই কাজগুলো সম্পূর্ণ করবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা পাশাপাশি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি সরকারি অনুদানে সিনেমা হল ডিজিটাল করা ও যেখানে সিনেমা হল নেই, সেখানে নতুন করে নির্মাণ করা। ডিজিটাল হলগুলো অন্যদের কাছে সরকার ভাড়া দেবে অথবা অন্যদের কাছে লিজ দেওয়ার মাধ্যমে পরিচালনা করবে। পর্যায়ক্রমে ৩৬০টি উপজেলায় এটা করার জন্য জোর আহ্বান জানাচ্ছি সরকারকে। এ বিষয় ছাড়াও সেন্ট্রাল সার্ভারের মাধ্যমে সিনেমা প্রদর্শন করা। এতে সিনেমাগুলো পাইরেসি থেকে মুক্তি পাবে।

এসব কিছু বাস্তবায়নে নিজের সংগঠনের সদস্যদের উদ্দেশে গুলজার বলেন, আমাদের নির্বাচিত বিষয়গুলো বাস্তবায়ন হলে আশা করি প্রত্যেক পরিচালকের উন্নয়ন হবে। কারণ একজন পরিচালকের উন্নয়ন কিন্তু চলচ্চিত্রের উন্নয়নের ওপর নির্ভর করে। আগে বছরে প্রায় ১০০ সিনেমা নির্মিত হতো, এখন তা তিন ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। আগে ৯০টির মতো সিনেমা মুক্তি পেত, সেখানে এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে না। এর কারণ প্রযোজকরা তার ন্যায্য পাওনা ফিরে পাচ্ছেন না। আমাদের নির্বাচিত বিষয়গুলো বাস্তবায়ন হলে আশা রাখি প্রযোজকরা সিনেমা নির্মাণে এগিয়ে আসবেন। আর সিনেমা নির্মাণ বেড়ে গেলে পরিচালকদের কাজও বেড়ে যাবে। সর্বশেষে এই নির্মাতা বলেন, এর মধ্যেই আমরা নতুন তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি, আমাদের সমস্যাগুলো ওনাকে জানিয়েছি। তার মাধ্যমেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শিগগিরই দেখা করব, চলচ্চিত্রের সমস্যাগুলো তার কাছে তুলে ধরব। আশা করি, সব সমস্যার সমাধান হবে। এদিকে চলচ্চিত্র পরিচালকদের ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৫ জানুয়ারি। এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে দুটি প্যানেল। ১৯ পদের বিপরীতে ৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট ৪৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close