বিনোদন প্রতিবেদক

  ২২ অক্টোবর, ২০১৮

৭৫ বছরে পা দিলেন সুরস্রষ্টা আলম খান

উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলম খান। কিংবদন্তি এই সংগীত পরিচালকের কাজকে স্বীকৃতি জানিয়ে তাকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদক একুশে পদকে ভূষিত করার জন্যও আহ্বান জানিয়েছেন সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকেই। আলম খান আজ ৭৪ বছর পূর্ণ করে ৭৫ বছরে পা রাখছেন। তবে আজকের দিনটিকে ঘিরে জাঁকজমকপূর্ণ কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন নেই বলে জানালেন এই কিংবদন্তি। তবে নিজের জন্মদিনটিকে একটু বেশিই বিশেষ কিছু মনে করেন আলম খান যেদিন তার আনতনী ফাতিহা আজমী খান এই পৃথিবীতে আসেন। কারণ, আলম খানের জন্মদিনেই তার নাতনি এই পৃথিবীতে আসেন। তাই আজকের দিনে আলম খান ও তার নাতনি আজমী একসঙ্গে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শেখের টেকের বাসায় কেক কাটবেন বলে জানান আলম খান।

আলম খানের ৭৫তম জন্মদিনে কয়েকটি চ্যানেল বিশেষ অনুষ্ঠানও করতে চেয়েছিল। কিন্তু শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ নন বিধায় কোনো চ্যানেলে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয় বলেও তিনি জানান। জন্মদিন প্রসঙ্গে আলম খান বলেন, ‘ভাবলেই অবাক হয় জীবন থেকে এতটা বছর পেরিয়ে গেছে। যখন মনে হয় ওরে নীল দরিয়া, কী জাদু করিলা কিংবা হায়রে মানুষ রঙ্গিন ফানুস গানগুলোর কথা তখন মনে হয় এই তো সেদিনের কথা। মনে পড়ে যখন বাস কিংবা গাড়ি দেখার জন্য একই স্থানে ১৫-২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতাম, অনেক সময় পরে একটি বাস বা গাড়ি দেখে খুব খুশি হতাম। অথচ, এখন চারদিকে গাড়ির এত শব্দ, আর ভালো লাগেনা। যেহেতু আমার স্ত্রী অসুস্থ, তাই এবারের জন্মদিন নিয়ে তেমন জাঁকজমক কোনো আয়োজন নেই। আমার নাতনি আজমীর সঙ্গেই আনন্দে কেটে যাবে ৭৫-এর শুভ প্রহর। মহান আল্লাহর কাছে অসীম কৃতজ্ঞতা। আমার বাবা মা, আমার ভাই, আমার ওস্তাদ ননী চ্যাটার্জি আমাকে আমার কাজে অনেক উৎসাহ দিয়েছেন। আমি আমার সুন্দর জীবনটা ভীষণ উপভোগ করেছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’

উল্লেখ্য, আজমী আলম খানের ছোট ছেলে আদনান খানের মেয়ে। ১৯৬৩ সালে বন্ধু মাসুদুর রশীদের লেখা ‘নিরিবিলি সন্ধ্যায় দেখা হলে দুজনে’ গানটির প্রথম সুর করেন। তবে তা প্রকাশ হয়নি। আলম খান জানান জীবনে প্রথম যেদিন এফডিসি যান দারোয়ান তাকে ভেতরে যেতে দেননি, আবার রেডিও টিভিতেও অডিশন দিয়ে টিকেননি তিনি। জীবনের প্রথম সিনেমার গান ‘কাঁচ কাটা হীরে’র ‘শোনো শোনো ওগো নিরূপমা’ও প্রকাশ হয়নি।

আলম খান বলেন, আমার জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত যে মানুষের আশা ছাড়তে নেই। হাল ছাড়তে নেই। যতই সময় তাকে পরাজিত করুক না কেন সাফল্যের আশায় তাকে এগিয়ে যেতেই হবে। আলম খানের প্রথম প্রকাশিত গান মুকুল চৌধুরীর লেখা রওশন আরা মুস্তাফিজের গাওয়া ‘ও মাধবী থাকো মোর অন্তরে’। উল্লেখ্য, এই গানের সব যন্ত্রশিল্পীরা ছিলেন নারী। আলম খানের জন্ম সিরাজগঞ্জের বানিয়াগাতিতে নানার বাড়িতে। তার দাদার বাড়ি টাঙ্গাইলের বড় বাসাইল। তার বাবা আফতাব উদ্দিন খান ও মা জোবেদা খানম। মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ চলচ্চিত্রের জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন তিনি। সর্বশেষ এ টি এম শামসুজ্জামান পরিচালিত ‘এবাদত’ চলচ্চিত্রের জন্য একই পুরস্কার লাভ করেন। মোট সাতবার এই পুরস্কার পান তিনি। আলম খানের স্ত্রী গুলবানু খান। তার দুই ছেলে আরমান খান ও আদনান খান। একমাত্র মেয়ে আনিকা খান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close