বিনোদন প্রতিবেদক
চলে গেলেন অভিনেত্রী রানী সরকার
ঢাকাই চলচ্চিত্রের বরেণ্য অভিনেত্রী রানী সরকার আর নেই। ইহলোকের মায়া কাটিয়ে চিরতরে পরপারে চলে গেলেন এই অভিনেত্রী। গতকাল ভোর ৪টায় রাজধানীর ইডেন মাল্টিকেয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। রানী সরকার দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত নানা
সমস্যায় ভুগছিলেন।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান জানান, রানী সরকারকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দুপুর ২টায় তার মরদেহ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে চ্যানেল আই কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এরপর রানী সরকারের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে। এফিডিসিতে জানাজা শেষে রানী সরকারের ইচ্ছেতেই আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
রানী সরকার সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার সোনাতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম মোসাম্মৎ আমিরুন নেসা খানম। সোনাতলা গ্রামের ইউপি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। এরপর তিনি খুলনা করোনেশন গার্লস স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করেন। রানী সরকারের অভিনয়জীবন শুরু করেন ১৯৫৮ সালে। শুরুতেই মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন। নাটকের নাম ‘বঙ্গের বর্গী’। ওই বছর তার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় এ জে কারদার পরিচালিত ‘দূর হ্যায় সুখ কা গাঁও’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে।
১৯৬২ সালে বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার এহতেশাম পরিচালিত উর্দু চলচ্চিত্র ‘চান্দা’তে অভিনয় করেন। সেই ছায়াছবির পর থেকে তার নতুন নাম হয় রানী সরকার। ‘চান্দা’ চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর উর্দু ছবি ‘তালাশ’ ও বাংলা ছায়াছবি ‘নতুন সুর’-এ কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। গত শতকের ষাট, সত্তর ও আশির দশকের অসংখ্য চলচ্চিত্রে তিনি বেশ দাপুটের সঙ্গে অভিনয় করেন। তার অভিনীত ছবির সংখ্যা প্রায় আড়াই শ। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হচ্ছে-‘কাচের দেয়াল’, ‘বেহুলা’, ‘আনোয়ারা’, ‘চোখের জল’, ‘নাচের পুতুল’ ইত্যাদি।
শেষ বয়সে এসে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন রানী সরকার। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে কয়েক দফা আর্থিক সহায়তা দেন। একই বছর বাংলা চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য রানী সরকারকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়।
"