প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮

শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন, ফল পেতে সমর্থকদের অপেক্ষা

সারা দেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দিপনার মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদানে জন্য নিজ নিজ কেন্দ্রে এসে লাইনে দাঁড়ান। এদিকে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ভোট গ্রহনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের মধ্যদিয়ে ভোটারদের সুষ্টু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট প্রদান নিশ্চিত করেছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

খুলনা : খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ আসনের ১৫৭টি ভোট কেন্দ্রের ৭২০টি কক্ষে ইভিএম এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়।

মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র বি কে ইউনিয়ন ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর অর্চনা রানী কর্মকার নামের এক ভোটার বলেন, পদ্ধতিটা নতুন হলেও ভালো লেগেছে ভোট দিতে। অল্প সময়ের মধ্যে এ পদ্ধতিতে ভোট দেওয়া যায়। ভোট দিতে কেউ না বুঝলে কর্মকর্তা তাকে সহযোগিতা করছেন।

কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, নতুন এ পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণে ভোটাররা খুব আগ্রহী। তবে কোথাও কোথাও ধীরগতি চলছে। একেকটি ভোট দিতে প্রায় ৪-৫ মিনিট সময় লেগে যাচ্ছে। ফলে কিছু কেন্দ্রের সামনে ভোটারদের ভিড় লেগে যায়। তবে ভোট নেওয়ায় একটু দেরি হচ্ছে। অপেক্ষা করতে হলেও সিস্টেমটায় খুশি তারা।

কক্সবাজার : কক্সবাজার জেলার চারটি সংসদীয় আসনের ৫১৩ টি কেন্দ্রে এক যোগে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় সকালের দিকে ভোটারদের উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপুল সংখ্যক ভোটার উপস্থিত হন। ভোট দিতে আসা ভোটাররা জানিয়েছেন, এটা জাতীয় নির্বাচন, এ নির্বাচনে তারা শান্তিপূর্ণ ভোট প্রদান করতে পারে খুশি। পর্যাক্রমে ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করতে দেখা গেছে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন ও পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনকে। এ দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কোথাও বড় ধরণের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার মুকারিমপুর ইউনিয়নে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক নিজ কেন্দ্রে ভোট দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন ও শান্তির ধারা অব্যহত রাখতে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে একাদশ সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। এই নির্বাচনে দেশবাসী সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন।’

এদিকে, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ কেন্দ্র আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহাবু উল আলম হানিফ দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ভোট প্রদান করেন।

জেলার ১৪ লাখ ৫৭হাজার ৬৫জন ভোটারের ভোট গ্রহনের জন্য ৫৬৫টি কেন্দ্রের ২হাজার ৯৯৫টি কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে ৩৪৫টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২১টি কেন্দ্রকে দূর্গম বিবেচনায় নিয়ে সেগুলিতেও বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে নিশ্চিত করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আসলাম হোসেন।

ফরিদপুর : ফরিদপুর জেলার মোট ৪ টি আসনের ৬৪৮ কেন্দ্রে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার ৪ টি আসনে মোট ১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। গতকাল সকালে শহরের রাজেন্দ্র কলেজ কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেছেন ৩ আসনের নৌকার প্রার্থী স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপি প্রার্থী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ। ফরিদপুর-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী কাজী জাফরউল্ল্যাহ ভোট দিয়েছেন কাউলীবেরা স্কুল কেন্দ্র এবং স্বতন্ত্র প্রাথী মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী ভোট দেন ব্রাম্মন পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। জেলার কোথাও এখনো কোন অপৃতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায় নি। প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রেই নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ করার মত।

সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জ জেলার ৯ উপজেলা, ১২ টি থানা ও ৮৩ টি ইউনিয়নে মোট ৮৪৪টি কেন্দ্রে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতির মধ্যেদিয়ে ভোট প্রদান করতে দেখা যায়। জেলার শান্তিপূর্ন ভাবে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে, তবে কোথাও কোন অপৃতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি।

সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর) আসনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম তার নিজ নির্বাচনী এলাকার আলমপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে তার নিজ ভোট প্রদান করেন। এ সময়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যান্ত আশাবাদি সকাল থেকে যে অবস্থা দেখছি বিশেষ করে কাজিপুর, সিরাজগঞ্জসহ দেশের সকল জায়গায় যে খবর পাচ্ছি; ইনশাল্লাহ শেখ হাসিনা আবারও বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।’

রাজবাড়ী : রাজবাড়ীতে শান্তিপূর্ণভাবে ৩১২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজবাড়ী-১ আসনে আসনে মোট ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৩৭২ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৪ হাজার ৩৯ এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ৭২ হাজার ৩৩৩ জন। রাজবাড়ী-২ আসনে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। আসটিতের মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৬২ হাজার ৪৭৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫৪৪ জন এবং নারী ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ২৭ হাজার ৯২৯ জন। এর মধ্যে নতুন ভোটার রয়েছে ৫৯ হাজার ৫৫০ জন।

মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে দু’একটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া জেলার ৩ টি নির্বাচনী আসনে শান্তিপূর্ন ভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বিএনপি ও গণফোরামের প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন তাদের অনেক পুলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। মানিকগঞ্জ-৩ আসনে আ.লীগের প্রার্থী জাহিদ মালেক স্বপন সকাল ১০ টার দিকে গড়পাড়া নিউ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট প্রদান করেন। এ সময় তিনি বলেন উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে মানুষজন নৌকায় ভোট দিবেন।

অপর দিকে মানিকগঞ্জ-১ আসনে আ.লীগের প্রার্থী নাঈমুর রহমান দুর্জয় সকাল ৮ টায় বৈকুন্ঠপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট প্রদান করেন। তবে বিএনপি প্রার্থী আব্দুল হামিদ ডাবুল অভিযোগ করেন তার পুলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সেই সঙ্গে ভোটারদের ভোট প্রয়োগে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে।

মানিকগঞ্জ-২ আসনে আ.লীগের প্রার্থী মমতাজ বেগম জয়মন্টপ উচ্চ বিদ্যালয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

এদিকে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ভোট শুরু হওয়ার সাথে সাথে ভোটারা ভোট দিতে কেন্দ্র আসেন। বেলা বারার সাথে সাথে কেন্দ্র গুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে দুপুরের পর অধিকাংশ কেন্দ্র ছিল ভোটার শূণ্য। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন দুএকজন করে।

সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জে বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। জেলার ছাতক ও দিরাই উপজেলায় বিএনপি ও আ.লীগ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির এক ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্তত অর্ধ শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া জেছে। এছাড়াও বিভিন্ন কেন্দ্রে জালভোট দেয়া ও পূর্ব থেকে ভ্যাল্ট বাক্স ভর্তি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। একাধিক কেন্দ্রে বিএনপি পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বাঘা (রাজশাহী) : রাজশাহী-৬ আসনের প্রার্থীরা নিজ নিজ ভোট কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেন। আ.লীগের প্রার্থী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি (নৌকা) আড়ানী পৌরসভার রুস্তমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ৮টায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এছাড়াও ইসলামী আন্দলোন বাংলাদেশ এর প্রার্থী আসদুস সালাম সুরুজ (হাতপাখা) বাজুবাঘা ইউনিয়নের নওটিকা আরিফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেন। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন চারঘাট পৌরসভার চারঘাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকালে ভোট প্রদান করেন। তবে ভোট দেয়ার বিষয়ে প্রার্থীরা মুঠোফনে এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন।

ধামরাই (ঢাকা) : ঢাকা-২০ ধামরাই আসনে ১৪০টি কেন্দ্রের শান্তিপুর্ণ ভাবে ভোটগ্রহণ সস্পন্ন হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন কেন্দ্রে সকাল থেকেই নারি-পুরুষ ভোটরা সাকালের শীতকে উপেক্ষা করে শান্তিপুর্ণভাবে লাইন ধরে নিজে ভোট নিজেই প্রয়োগ করেছেন। তবে কোন ধরনের নাশকতা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাড়িয়ে ভোট দিয়েছে। তবে আইনি জটিলতার কারণে বিএনপির প্রার্থী শুন্য হওয়ায় ধামরাই আসনটিতে শক্তকোন বিরুদী প্রার্থী না থাকায় ভোটাদের উপস্থিতি কিছুটা কম দেখা গেছে। এই দিকে সুঙ্গরচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং আফিসার মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘সকাল থেকে সুষ্ঠু শান্তিপুর্ণভাবে ভোটগ্রহন চলছে এবং শেষ পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পুর্ণ হয়েছে।

ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) : জয়পুরহাট-২ আসনে বিচ্ছিন্ন অভিযোগের মধ্য দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন আ.লীগের সংগঠনিক সম্পাদ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও বিএনপি প্রার্থী ছিলেন আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান। গতকাল সকাল ৮টায় আ.লীগ প্রার্থী ক্ষেতলাল উপজেলার ইটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে তার নিজ ভোট প্রদান করেন। অপরদিকে বিএনপি প্রার্থী আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান নিরাপত্তার অজুহাতে তার নিজ ভোট কেন্দ্র বিনাই দাখিল মাদ্রাসায় ভোট দিতে আসেননি।

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) : গাইবান্ধা-৪ গোবিন্দগঞ্জ আসনে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১৩৯টি কেন্দ্রের ৭৪১টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হয়।

গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভাসহ উপজেলার শিবপুর, কোচাশহর, মহিমাগঞ্জ, শালমারা, কামারদহ, কাটাবাড়ী, শাখাহার, গুমানিগঞ্জ ও কামদিয়া ইউনিয়নের বেশ কিছু কেন্দ্র পরিদর্শন করে সেগুলিতে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটারদের স্বত:স্ফূর্ত উপস্থিতিতে ভোট দিতে দেখা যায়। সারা দিনে কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগের দলীয় নৌকা মার্কার প্রার্থী প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরী দুপুরে উপজেলার কামদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেন। ভোট প্রদান শেষে তিনি জনগণের ভোটে বিপুল ব্যবধানে জয়লাভ করবেন বলে সংবাদকর্মীদের কাছে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) : দিনাজপুর-৫ (পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী) আসনে বিছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সকাল ১১ টায় আর্দশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিন্দন্দ্বি দুই প্রার্থীর সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় সংঘর্ষ ঠেকাতে পুলিশ বাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। এতে আহত হয় ৩ জন।

শাজাহানপুর (বগুড়া) : বগুড়া-৭ (গাবতলি-শাজাহানপুর) আসনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি কেন্দ্রে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে বলে জানাগেছে। পুলিশের ফাঁকা গুলি ছোঁড়া ও বিনএনপি সমর্থিত প্রার্থীর ট্রাক প্রতীকের পুলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শাজাহানপুর থানার ওসি জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, উপজেলার সাজাপুর ফুলতলা মাদরাসা কেন্দ্রে ফাঁকাগুলি বর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেনি। ভোটারদের সঙ্গে আলোচনা করে জানাগেছে, বিএনপি সমর্থিত ট্রাক প্রতীকের সতন্ত্র প্রার্থী সাংবাদিক রেজাউল করিম বাবলু, মহাজোট প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীকের এ্যাড. মুহাম্মদ আলতাফ আলী ও গাবতলি উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আজম খানের স্ত্রী সতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস আরা খানের ডাব প্রতীকের মধ্যে চূড়ান্ত লড়াই হবে।

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে উৎসব মূখর পরিবশের মধ্যে দিয়ে ও শান্তিপূর্ণভাবে ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রে নারী ও পুরুষের ভোট দিতে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। তবে কোন অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায় নি। বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে বিএনপি’র উল্লেখ্যযোগ্য কোন নেতাকর্মীকে ভোট কেন্দ্রে দেখা যায়নি। ভোটের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্থানীয় সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপন বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় তাকে উৎফলিত দেখা যায়। অপরদিকে, বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ড. এম, এ, মুহিতদের দেখা মেলেনি কোন কেন্দ্রেই। শাহজাদপুর থানার ওসি খাজা গোলাম কিবরিয়া জানান, আনছার, ভিডিপি, র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর মোতায়ন রয়েছে।

দাকোপ (খুলনা) : খুলনার-১ আসনের দাকোপ উপজেলার ৪৯টি ভোট কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হলেও একমাএ আ.লীগের নেতাকর্মী ব্যাতিত অন্য দলের তেমন কোন নেতাকর্মী ও এজেন্টদের ভোট কেন্দ্রে দেখা যায়নি। বেলা ২টা বাজতে না বাজতেই অধিকাংশ কেন্দ্রে ৭০ শতাংশ ভোট কাষ্ট হয়েছে বলে জানা গেছে।

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) : টাঙ্গাইলের নাগরপুরে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সুষ্ঠ্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহন শুরু হয়ে একটানা চলে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত। শীতের কারনে সকালের দিকে ভোটারের উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে ভোটারের উপস্থিতি। প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটারদের দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে থেকে ভোট দিতে দেখা গেছে। গতকাল সকালে উপজেলার গয়হাটা শহীদ শামসুল হক বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী আহসানুল ইসলাম টিটু। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, নাগরপুরের সর্বত্র শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহন চলছে। ভোটাররা বেশ উৎসবমূখর পরিবেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে। অন্যদিকে বেলা ১২দিকে নাগরপুর সরকারী কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী। এ সময় আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী আহসানুল ইসলাম টিটুর দেখা হলে তারা একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

কচুয়া (চাঁদপুর) : চাঁদপুর-১ কচুয়া আসনে শান্তিপূর্নভাবে ভোট গ্রহন সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলার ১০৮টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টা থেকে নারী পুরুষ যুবকরা শ্রেণিবদ্ধ ভাবে দাড়িয়ে ভোটে অংশগ্রহন করেন। ভোট গ্রহন উপলক্ষে পর্যাপ্ত আইন শৃঙ্খলা দায়িত্বে নিয়োজিত বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশ মোতায়ন ছিল। সকাল ৮টায় নৌকা মনোনীত প্রার্থী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর তাঁর নিজ কেন্দ্র গুলবাহার আশেক আলী স্কুল এন্ড কলেজে ভোট প্রদান করেন। অপরদিকে বিএনপি প্রার্থী মো. মোশারফ হোসেন তাঁর নিজ কেন্দ্র বারৈয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেন।

সহকারী রির্টাানিং অফিসার ও ইউএনও নীলিমা আফরোজ বলেন, ‘শান্তিপূর্ন ভাবে কচুয়া উপজেলার ১০৮টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন সম্পন্ন হয়েছে। যেসকল কেন্দ্র থেকে অভিযোগ জানানো হয়েছে আমরা সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহন করেছি।

শিবচর (মাদারীপুর) : মাদারীপুর-১ আসনে সকাল ৯টার দিকে আ.লীগ প্রার্থী নূরই আলম চৌধুরী দত্তপাড়া টিএন একাডেমি কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের উন্নয়ন দেখে জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছে। জনগনের ভোটের মাধ্যমে একটানা তৃতীয়বারের মতো শেখ হাসিনা সরকার গঠন করবে। ১৯৭০ সালের পরে দেশে এবার আনন্দ-উল্লাসের মাধ্যমে নির্বাচন হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত কিংবা ঐক্যফ্রন্ট যে অভিযোগ করুক না কেন, তাদের সব অভিযোগ মিথ্যো ও ভিত্তিহীন। তাদের ভিত্তি হারিয়ে ফেলেছে। ফলে ঐক্যফ্রন্টের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই কষ্ট।’ এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৪৫ হাজার ৯৫ জন। এদিকে ভোট সুষ্টু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয় কঠোর নিরপাত্তা ব্যবস্থা। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে বাড়ানো হয় আলাদা নজরদারি।

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-মহিপুর-রাঙ্গাবালী) আসনে ছোট খাট দুই একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া উৎসব মুখর পরিবেশে ১১০ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুষ্ঠু ভোট গ্রহনের লক্ষ্যে ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিষ্ট্রেট, সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, কোষ্টগার্ড ও পুলিশসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান ছিল তৎপর। সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এ সময় বেশ কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোট দিয়েছেন। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে যোগ্য প্রার্থীকে ভোটাধীকার প্রয়োগ করেছেন তারা। অসুস্থ্য বয়স্ক ভোটাররা তাদের স্বজনদের কোলে কিংবা ভ্যান গাড়ীতে করে কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়েছেন। নতুন ভোটাররা উৎসাহ নিয়ে ভোট কেন্দ্রে এসে তাদের ভোটাধীকার প্রয়োগ করেন। এদিকে উপজেলার ধুলাসর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিজন নিয়ে ভোট প্রদান করেন আ.লীগ প্রার্থী অধ্যক্ষ মুহিব্বুর রহমান মহিব। উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ আসনটিতে আ.লীগ ও বিএনপিসহ মোট ৬ জন প্রার্থী প্রতিন্দন্দ্বিতা করছেন। এ আসনে মোট ভোটার ২,৪৯,০৪৬ জন। এর মধ্যে নতুন ভোটার রয়েছে ২৯,৭৬১ জন। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা তানভির রহমান জানান, কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ন পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকাল ৮ টা থেকে বেলা ৪ টা পর্যন্ত উপজেলার ৮০টি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে শহরের সরকারী কলেজ, বাড্স রেসিডেন্টসিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, সদর ইউপি কার্যালয়, হাউজিং এস্টেট সরকারী প্রা. স্কুল, পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশকিছু কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টদের মারধর, কেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্ট বের করে দেয়া এবং পোলিং এজেন্টদের আটকের অভিযোগ করেছেন বিএনপি প্রার্থী মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব)। উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়ক আছকির মিয়া জানান, দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোথাও কোন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।

ফকিরহাট (বাগেরহাট) : বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ৪২টি ভোট কেন্দ্রে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ন ভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটারগন ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সকালের দিকে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশী। পুরুষের পাশাপাশি মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। তবে দুপুরের পর থেকে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা বাড়তে থাকে। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ভোটারগন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র এলাকা পরির্দশন করেন। এছাড়া নির্বাচনে আইনশৃংখলা রক্ষায় ফকিরহাটে সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট) আসনের ফকিরহাটে মোট ভোটার ১ লক্ষ ৮ হাজার ৩ শত ৪৪ জন। এর ভেতর ভোটগ্রহণ হয়েছে ৯৩হাজার ৪শত ৫০টি। নষ্ট হয়েছে ৭৮৪, নৌকা প্রতীক পেয়েছে ৮০হাজার ৫৭০ ভোট, ধানেরশীষ প্রতীক পেয়েছে ১০হাজার ৪১৭ ভোট, হাতপাখা প্রতীক পেয়েছে ২৩৬২ ভোট ও হারিকেন প্রতীক পেয়েছে ১০১ ভোট। ফকিরহাট উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র থেকে জানা গেছে, ফকিরহাট উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে মোট কেন্দ্র ৪২টি।

হিলি (দিনাজপুর) : দিনাজপুার-৬ আসনে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানকার ১৬৫টি কেন্দ্রে সকাল থেকে একযোগে শুরু হওয়া ভোট গ্রহণ বিরতিহীন ভাবে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। পরে শুরু হয় ভোট গননা। নির্বাচনকে ঘিরে ভোট কেন্দ্রগুলোতে উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নিবাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন শিবলী সাদিক। অপরদিকে ধানের শিষের প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমীর আনওয়ারুল ইসলাম।

সকালের প্রথমদিকে ভোটারদের উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে-সাথে কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়তে শুরু করে। কোন প্রকার অপ্রতিকর ঘটনা ছাড়াই এখানে ভোট গ্রহন সম্পন্ন হয়।

দিনাজপুরের এই আসনটিতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি মিলে মোট চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। হাকিমপুর, বিরামপুর, নাবাবগঞ্জ ও ঘোড়াঘাট এই চারটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৪২৫ জন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close