ঠাকুরগাঁও-৩ (রানীশংকৈল-পীরগঞ্জ) আসনে নৌকা মার্কার প্রতীক পেলেও নিজ দলের প্রার্থী পায়নি আওয়ামী লীগ। এ আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন আ.লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি বর্তমান এমপি ইয়াসিন আলী। অপরদিকে পীরগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি সাবেক এমপি ইমদাদুল হক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোটর গাড়ী প্রতীক নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিংহ প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত আরেক নেতা পীরগঞ্জ উপজেলা আ.লীগ যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র রায়। এ নিয়ে দুই মেরূকরণে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন আ.লীগ। এ নিয়ে দলীয় সভা করেও সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি রানীশংকৈল উপজেলা আ.লীগ।

নির্বাচনী আসন ঘুরে ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের আ.লীগের সাবেক এমপি ইমদাদুল হক স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও তার পক্ষে উপজেলা আ.লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতা গোপনে-প্রকাশ্যে ভোট করতে নেমে গেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নওরোজ কাউসার কানন ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহফুজা বেগম পুতুল। এছাড়া দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত পীরগঞ্জ উপজেলা আ.লীগ যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র রায়ের পক্ষে আ.লীগ নেতার নির্বাচনে না থাকলেও উপজেলার বিপুলসংখ্যক সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জনগোষ্ঠীর ভোটাদের সমর্থন তার পক্ষে রয়েছেন। ফলে ব্যালটের হিসাবে যেকোনো সময় পাল্টে যেতে পারে নৌকা প্রতীকের ভোটের সমীকরণ।

নির্বাচনে প্রার্থীকে স্থানীয়ভাবে সমর্থন করা নিয়ে বিভক্তি নিরশনে গত শনিবার রানীশংকৈল উপজেলা আ.লীগের সভাপতি সইদুল হকের সভাপতিত্বে দলীয় সভা করে আ.লীগ। তবে সভায় সর্বসম্মতি ক্রমে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি আ.লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। সভায় জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি ও সংরক্ষিত আসনের এমপি সেলিনা জাহান লিটা, উপজেলা আ.লীগের সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) তাজউদ্দীন আহম্মেদ যুগ্ম-সম্পাদক আনিসুর রহমান বাকী, পৌর সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সম্পাদক মহাদেব বসাক, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি পৌর মেয়র আলমগীর সরকার, সম্পাদক রমজান আলী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নওরোজ কাউসার কাননসহ সহযোগী সংগঠনের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

সভায় আ.লীগের সাবেক এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমদাদুল হকের পূর্বের কার্যক্রমের সমালোচনা করে বক্তৃতার করার সময় উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাজউদ্দীনের সঙ্গে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি পৌর মেয়র আলমগীরের উত্তপ্ত বাকবিত-া হয়। পরে উপজেলা আ.লীগ সভাপতি সইদুল হক নৌকার পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে সভা শেষ করলেও তা মেনে নেয়নি অনেক নেতাকর্মী। সভা শেষে মোটরগাড়ীর পক্ষে আ.লীগের একটি অংশ শহরে মিছিল বের করেন। পরে নৌকার পক্ষে পৌর আ.লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে একটি মিছিল পৌর শহরে প্রদক্ষিণ করে।

নির্বাচন বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছা সেবক লীগের মহিলা বিষয়ক সহ-সম্পাদিকা ভাইস চেয়ারম্যান মাহফুজা বেগম পুতুল বলেন, আ.লীগের নৌকা ওয়ার্কাস পার্টির ঘরে যাওয়ায় অনেক নেতাকর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে নেমেছে। এ কারণে আমিও মোটর গাড়ীর পক্ষে নেমেছি এবং শেষ পর্যন্ত থাকবো।

যুবলীগ সভাপতি পৌর মেয়র আলমগীর সরকার প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আ.লীগের ৮০ ভাগ ভোটার স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি ইমদাদুল হকের পক্ষে রয়েছে। আমি ১৮ তারিখের পর তার পক্ষে নির্বাচনে নামবো। দলীয় বিভক্তি প্রসঙ্গে উপজেলা আ.লীগ সভাপতি অধ্যাপক সইদুল হক বলেন, আমি আওয়ামীলীগ করি এজন্য আমি নৌকার পক্ষে ভোট করবো। গতকাল সোমবার পৌরশহরে তার নেতৃত্বে নৌকার পক্ষে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

"