দক্ষিণে নেই উত্তরে শুরু
সংস্কার! একই বিষয়ে ফি বছর একই কাজ। একই সংস্কার। দেখতে দেখতে চোখে ছানি পড়ার কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিষয়টির শুরু বলা যেতে পারে। তাদের চুলে যখন পাক ধরবে, তখন তারাও হয়তো বলবে, ‘একই বিষয়ে ফি বছর একই কাজ...’। সংস্কারের নামে খোঁড়াখুঁড়ি আর সংস্কার-নির্মাণে অবহেলা ও অনিয়মের কারণে ছয় মাস ধরে রাজধানীর সড়কগুলোর বেহাল দশা। অলিগলি থেকে শুরু করে অধিকাংশ প্রধান সড়ক এখন ভেঙেচুরে একাকার। সড়কজুড়ে খানাখন্দ। ঝুঁকির মধ্যে যানবাহন চলছে। ঘটছে দুর্ঘটনা। জনজীবনের দুর্ভোগ চরমে।
রাজা আসে রাজা যায়। কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় না। মাঝেমধ্যে যেটুকু হয়, তা যেন অনেকটা ¯েœা-পাউডার লাগিয়ে মেকআপ দেওয়ার মতো। রাত পেরোলেই মেকআপ উঠে গিয়ে প্রকৃত চেহারায় ফিরে আসা। রাজধানী ঢাকার অবস্থা পুরোপুরি সে রকম না হলেও অনেকটা তাই। কথা ছিল বর্ষা শেষ হলেই সংস্কারে হাত দেবে দুই সিটি করপোরেশন। বর্ষা চলে গেছে তিন মাস হলো। মাঝেমধ্যে অপ্রত্যাশিত মেঘের দেখা পাওয়া গেলেও সংস্কারকাজ শুরু হতে দেখা যায়নি। উত্তর সিটি করপোরেশনকে নড়েচড়ে বসতে দেখা গেলেও দক্ষিণের ঘুম এখনো ভাঙেনি। স্বয়ং কর্তৃপক্ষও জানে না তাদের এ ঘুম কবে ভাঙবে! তবে উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মুখে আশাজাগানিয়ার গান শোনা গেছে। তারা বলছে, এবারের অতিবৃষ্টি এবং জলাবদ্ধতায় ডিএনসিসির ২৫ শতাংশ রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সড়ক সংস্কারে তারা এখন তাদের কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন। প্রথম দফায় তারা ৬৫ শতাংশ রাস্তা মেরামত করবেন। দ্বিতীয় দফায় হবে বাকি কাজ। যার বরাদ্দ এখনো তাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। তারা আশা ছাড়েনি। বলেছেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে তারা তাদের সংস্কারকাজ শেষ করতে পারবেন। অর্থাৎ আগামী বছর বর্ষা শুরুর আগমুহূর্তে কাজ শেষ হবে (যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে)। না থাকলে তা বর্ষা ও জলাবদ্ধতার জলকেলিতে ঝাঁপ দিতেও পারেন। তবে আমরা মনে করি, তারা নিজেকে অতটা ছোট করবেন না। সবকিছুই ঠিকঠাক থাকবে। শহরের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হোক বা না হোক নিজেদের উন্নয়ন অব্যাহত রেখে রাজধানীবাসীর দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমাতে তারা উদ্যোগী হবেন-এটাই প্রত্যাশা।
"