reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ নভেম্বর, ২০১৭

ব্যাংক খাতের অস্থিরতা

বিষয়টি নতুন কিছু নয়। অনেক পুরনো অসুখ এই অস্থিরতা। কখনো কমতে দেখা যায়নি। বিপরীতে বলা যায়, ক্রমেই বেড়েছে। এই অস্থিরতা থামানোর জন্য অনেকেই অনেক কিছুই করেছেন। পথ্যের পর পথ্য দিয়ে সারিয়ে তোলার চেষ্টা হয়েছে। তবে কোনো লাভ হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধ গিলিয়ে এ রোগ সারিয়ে তোলা সম্ভব নয়। প্রয়োজন সার্জারির।

গত বছরের শুরু থেকে ব্যাংক খাতের অস্থিরতায় এক নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। সে সময় থেকে আজ পর্যন্ত অন্তত তিনটি ব্যাংকের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় আচানক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতে উদ্বেগ বেড়েছে গ্রাহকদের। আর সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদের কারণে থমকে গেছে বন্ডবাজার। সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে ব্যাংক খাতের দুর্নীতি ও ঋণ অনিয়ম। বাদ থাকেনি ব্যাংকের পর্ষদ সদস্যদের স্বেচ্ছাচারিতা, অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষতার বিষয়টিও। সংকটের আগাম বার্তা ও সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহে চিঠি দিয়েছে। প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও এসেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং নির্দেশনার বিপরীতে নিয়মবহির্ভূত কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ব্যাংকিং খাত বেশ-খানিকটা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে বর্তমানে ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে সরকার পরিচালিত ৮ ব্যাংকের খেলাপি ৪০ হাজার ৯৯ কোটি টাকা। এখানে না বললেই নয় যে, সরকারি ব্যাংকগুলো ৪ টাকা ঋণ দিলে ১ টাকা খেলাপি হচ্ছে। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ঘাড়ে রয়েছে ৩৪ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ। এমন পরিস্থিতির জন্য ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, পরিচালকরাই দায়ী। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, অনেক ক্ষেত্রেই তাদের কিছুই করার ছিল না। তবে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুর্বল তদারকির কারণে খেলাপি ঋণের এই নাজুক অবস্থা। পাশাপাশি অর্থনীতিবিদরাও তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, পরিস্থিতি উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করে উল্টে পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ঝুঁকির মাত্রা বেড়েছে। আর যে পদ্ধতিতে ব্যাংকের পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে তা এই খাতের সুশাসনের জন্য অন্তরায়। এতে গ্রাহকদের আস্থা ক্রমশই নি¤œগামী হচ্ছে। একই সঙ্গে নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে হবে ব্যাংক মালিকদের। প্রভাব পড়বে পুরো আর্থিক খাতে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ব্যাংকগুলো এখন মুদির দোকানে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে ৫৭টি ব্যাংক তুলনামূলক বিচারে অনেক বেশি। নতুন করে আরো ব্যাংকের অনুমোদন দিলে সংকট আরো ঘনীভূত হবে। তাই সময় থাকতে সাবধান হওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। আমরা মনে করি, খেলাপি ঋণ আদায়ে সরকারকে কঠোর থেকে কঠোরতম অবস্থানে যেতে হবে। কানে পানি ঢুকলে পানি ঢেলে তা বের করার পদ্ধতি পরিত্যাগ করে সরাসরি অপারেশনের দ্বারস্থ হতে হবে। অন্যথায় এ রোগের হাত থেকে জাতির কোনো মুক্তি নেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist