reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

মিয়ানমারের ভুল তত্ত্ব

মুক্তবাজার অর্থনীতি বলে কথা। যে অর্থনীতিকে পুরো বিশ্ব পৃথিবীর যেকোনো স্থানে যাওয়ার এবং থাকার পারমিট দিয়েছে। বাণিজ্যের সুযোগ দিয়েছে। এমনকি ভোগেরও অনুমোদন দিতে কার্পণ্য করেনি। পুঁজিবাদী অর্থনীতির চূড়ান্ত (আপেক্ষিক অর্থে) মুনাফা লাভের অন্যতম অস্ত্রের নাম এই মুক্তবাজার অর্থনীতি। যে অর্থনীতি সারা পৃথিবীর মানুষকে মোটা দাগে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করেছে। এক শ্রেণিতে প্রাচুর্যহীন এবং বিপরীতে প্রাচুর্যের হিমালয়। এই দুইয়ের মধ্যে ব্যবধান-একজন আকাশে আর অপরজন পাতালে। অর্থনৈতিক বৈষম্যের চিত্র অনেকটা এ রকম হলেও পৃথিবী ঘুরে সম্পদকে কুক্ষিগত করার কাজে ব্যস্ত মুক্তবাজার। এখানে জাতপাতের কোনো বালাই নেই। জাতপাতের বালাই তখনই আসে, যখন মুক্তবাজার নিজের চলার পথকে উন্মুক্ত এবং মসৃণ করার কাজে এগিয়ে আসে। আর তখনই শুরু হয় মানুষকে মানুষ হিসেবে মর্যাদা দিতে যত বিপত্তি। মিয়ানমারে যে গণহত্যা চলছে, মানুষকে যেভাবে অমর্যাদা করা হয়েছে এবং হচ্ছে তাকে স্মরণকালের পৈশাচিকতা বললেও কম বলা হবে। মিয়ানমারের মাটির চরিত্রের কারণে এই নির্মম হত্যাযজ্ঞের ইতিহাস নির্মিত হয়নি। মুক্তবাজার অর্থনীতিই এই জাতপাতের স্লোগান তৈরি করে নির্বিচারে মানুষ হত্যার জাল বিস্তার করে চলেছে। আর এই অর্থনীতির অন্যতম চার প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে : চীন, ভারত, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র। যাদের বলে বলীয়ান হয়ে মিয়ানমার আজ এই নারকীয় তান্ডব চালাতে সাহসী হয়েছে।

‘রোহিঙ্গা’ বলে কোনো জাতিসত্তা মিয়ানমারে কখনই ছিল না দাবি করে এ বিষয়ে নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সেনাবাহিনীপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইয়াং। তিনি বলেছেন, ‘তারা রোহিঙ্গা হিসেবে স্বীকৃতি দাবি করছে অথচ তারা কখনো মিয়ানমারের নৃগোষ্ঠীর অন্তর্গত ছিল না।’ পৃথিবীর কেউ তার নৃতাত্ত্বিক তত্ত্বের সঙ্গে দ্বিমত করবে না। তবে নাগরিকত্বের প্রশ্নে তার এই তত্ত্ব বর্তমান বিশ্ব অনেক আগেই প্রত্যাখ্যান করেছে। নাগরিকত্বের প্রশ্নে ধর্মীয় অথবা নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের কোনো মূল্য বর্তমান বিশ্বের কোথাও আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এই তত্ত্ব পৃথিবীতে আজ অচল পয়সা হিসেবে বিবেচিত। বিশেষত মুক্তবাজার অর্থনীতির মহাপরিক্রমায়।

আমরা মনে করি, ইতিহাস পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের ভূমিপুত্র এবং তাদের মিয়ানমার সরকার সে দেশের নাগরিকত্ব দিয়ে পশুত্বের আবরণ থেকে বেরিয়ে এসে মনুষ্যত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে। অন্যথায় মিয়ানমারের এই নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের তত্ত্ব গোটা বিশ্বকে এক মহাসঙ্কটের দিকে নিয়ে যাবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশও যদি মিয়ানমারের এই তত্ত্বকে অনুসরণ শুরু করে তাহলে যে ধ্বংসযজ্ঞ নেমে আসবে সভ্যতাকে আদিম যুগে ফিরে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না। যা পৃথিবীর কোনো সভ্য নাগরিকের কাম্য হতে পারে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist