গণমাধ্যম-কমিশন সংলাপ
সংলাপে অংশ নেন গণমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, সাংবাদিক নেতা, বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকসহ ২৬ জন। পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়, কিছু বিষয়ে তারা অভিন্ন মত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করাসহ একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জন করতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও ‘না’ ভোট প্রবর্তন প্রসঙ্গে পক্ষে-বিপক্ষে মত দেন তারা। এ ছাড়া ইসিকে দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন, আইনের যথাযথ কঠোর প্রয়োগ, ভোটের আগে ও পরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার প্রশ্নে একমত পোষণ করেন। বেশির ভাগ সাংবাদিক মনে করেন, ‘তাদের দৃষ্টিতে ইসি’র মূল চ্যালেঞ্জ হবে সব রাজনৈতিক দলের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করা। এ জন্য ইসির যা যা করা দরকার, তা করতে হবে। ইসিকে একপক্ষের ভয়কে জয় করতে হবে আর অন্যপক্ষের খবরদারি ঠেকাতে হবে।
নির্বাচন গণতন্ত্রের একমাত্র পূর্বশর্ত না হলেও অন্যতম প্রধান পূর্বশর্ত। পৃথিবীর অনেক দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার পরেও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুসংহত না হওয়ার বহু উদাহরণ আছে। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া কোনো দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এমন উদাহরণ একটিও নেই। অতএব আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধরে রাখতে হলে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের বিকল্প নেই। ইভিএম পদ্ধতি থেকে শুরু করে সীমানা পুনর্নির্ধারণ, সেনাবাহিনী মোতায়েনসহ আলোচনায় সবকিছুই এসেছে। এসেছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ‘নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা’। যার ওপর নির্ভর করছে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ। অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বর্তমান কমিশন যে সদিচ্ছা দেখিয়েছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা বলেছেন, ইসি তার সততা এবং সক্ষমতা দেখাতে সক্ষম হবে বলেই তারা বিশ্বাস করেন। গণমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা আরো বলেছেন, নাগরিক সমাজ কিংবা সাংবাদিকদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আলোচনার প্রয়োজন আছে। তার চেয়ে বেশি জরুরি হচ্ছে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা। আমরা মনে করি, নির্বাচন কমিশন এ পর্যন্ত যা করেছে, তাকে ইতিবাচক বললে বেশি বলা হবে না। আগামী ২৬ আগস্ট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির বৈঠক শুরু। আমরা আশা করব এই বৈঠকের ফলাফলও হবে ইতিবাচক-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
"