reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৫ আগস্ট, ২০১৭

শোকাবহ ১৫ আগস্ট

আজ ১৫ আগস্ট। বাঙালি জাতির জীবনের এক শোকাবহ দিন। পঁচাত্তরের এই দিনে বঙ্গবন্ধু ও তার স্বজনদের রক্ত একাকার হয়েছিল আকাশের মর্মছেঁড়া অশ্রুর প্লাবনে। আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট শাহাদাৎবরণকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের স্বজনদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। নির্মম এ হত্যাকান্ডের বিচারের মাধ্যমে ২০১০ সালে প্রত্যক্ষ ঘাতকদের কয়েকজনের ফাঁসি হয়েছে। কয়েকজন এখনো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন। আমরা চাই, তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনা হোক। গ্লানিমুক্ত হোক জাতির ইতিহাস।

পঁচাত্তরের নির্মম এই হত্যাকান্ড শুধু বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করাই ঘাতকদের লক্ষ্য ছিল না, বরং তারা দেশি ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলেন। চক্রান্তকারী ঘাতকরা ১৫ আগস্টের ধারাবাহিকতায় একই বছরের ৩ নভেম্বর কারা অভ্যন্তরে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকরী বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর জাতীয় চার নেতা তাজউদ্দীন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনসুর আলী ও এমএইচ কামারুজ্জামানকে। পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতা দখলকারীরা বঙ্গবন্ধুসহ চার জাতীয় নেতার হত্যার বিচার রুদ্ধ করার জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেন। পাশাপাশি দেশ থেকে খুনিদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেন। তাদের অনেককে বিদেশের বাংলাদেশ মিশনে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলো, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক দায়মুক্তি অধ্যাদেশ বাতিলের আগ পর্যন্ত ২১ বছর স্বঘোষিত খুনিরা বিচারের আওতা থেকে মুক্ত থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই প্রথম এর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৯৮ সালে দায়রা জজ আদালতের দেওয়া ১৫ জনের মৃত্যুদন্ডের রায় পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে পুনর্মূল্যায়িত হয় এবং ১২ জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল রাখা হয়। এরপর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দীর্ঘ পাঁচ বছর ঝুলে থাকে মামলাটির আপিল শুনানি। পরবর্তী সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মামলাটির শুনানির পথ উন্মুক্ত হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করলে মামলাটির কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয় এবং এর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি ঘটে।

মনে রাখতে হবে, ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ড শুধু ব্যক্তি মুজিব ও তার পরিবারকে হত্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি; এর ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয় ও সংবিধান ছেঁটে দেশকে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলে। সে ষড়যন্ত্র, সে অপচেষ্টা এখনো অব্যাহত আছে। ২১ আগস্টের হত্যাকন্ডসহ পরবর্তী সময়ে মৌলবাদী জঙ্গিদের উত্থান তার অন্যতম নজির। কাজেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও জাতীয় জীবনে তার প্রতিষ্ঠাসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সুরক্ষার জন্যই দরকার মুজিব হত্যা ষড়যন্ত্রের উন্মোচন ও তার হত্যাকান্ডে জড়িত অন্য খুনিদের বিচারকার্য সম্পন্ন করা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist