দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ান
দুর্নীতি! এ দেশে বহুল পঠিত এবং চর্চিত একটি শব্দ। অনেককেই বলতে শুনেছি, এ দেশে দুর্নীতির চাষ হয়। পলিমাটির দেশে ফলনও খারাপ নয়। মাঝেমধ্যে বাম্পার ফলন ফলিয়ে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তবে এ কাজে সাফল্যের জন্য এখনো পর্যন্ত কোনো পুরস্কার না জুটলেও তিরস্কার জুটেছে অনেক। আর এই তিরস্কার থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দুর্নীতি উচ্ছেদ করতে হবে’। যদি প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়, কোথা থেকে উচ্ছেদ করা হবে?
প্রধানমন্ত্রীর কথা যদি বুঝে থাকি, তাহলে এ প্রশ্নের জবাবে বলতে পারি, আমাদের চিন্তা, চেতনা এবং সব কর্মকা-ের ভেতর থেকে এ আবর্জনাকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে। ধানের ফলনকে ভালো করার জন্য আমাদের কৃষকরা যেমন নিড়ানি এবং হাঁসিয়া দিয়ে জমি থেকে আগাছা পরিষ্কার করেন, আমাদেরও ঠিক সেভাবেই আগাছা পরিষ্কারের মধ্য দিয়ে সমাজ থেকে দুর্নীতিকে উচ্ছেদ করতে হবে।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১২২ ভাগ বেতন বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দুর্নীতি উচ্ছেদ করতে হবে।’ জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ‘এই বাংলার মাটি থেকে করাপশন উৎখাত করতে হবে। বাংলার কৃষকরা করাপশন করেন না। করাপশন আমার মজদুর করে না। করাপশন করি আমরা শিক্ষিত সমাজ। যারা ওই কৃষক ও মজুরের টাকায় লেখাপড়া করে শিক্ষিত হয়েছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে করেই হোক এই করাপশনকে দূর করতে হবে। প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যেন কোনো প্রকার কার্পণ্য করা না হয়।
প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন। আমরা তার এই বক্তব্যের প্রশংসা করি এবং সাধুবাদ জানাই। একই সঙ্গে বিশ্বাসও করি যে, প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের ওপর স্থির থেকে দেশ পরিচালনায় এগিয়ে যাবেন। আমরা আরো বিশ্বাস করি, এ কাজে তার সফলতা তাকে ইতিহাসের মাইল ফলকে পরিণত করবে। বাংলাদেশে দুর্নীতি আজ একটা ভয়াবহ সামাজিক রোগ হিসেবে স্থায়ী আবাস গড়ে তুলেছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে প্রয়োজন সততা, নিষ্ঠা এবং ন্যায়পরায়ণতা। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই তিন গুণাবলির সমন্বয়ে বেড়ে উঠেছেন এবং তিনিই এই অসম্ভবকে সম্ভব করার ক্ষমতা রাখেন। তার ঘোষণা সফলতা পাবেÑ এটাই ১৬ কোটি মানুষের প্রত্যাশা।
"