মালয়েশিয়া যাদের সেকেন্ড হোম
গত ১৫ বছরে ১২৬টি দেশের ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষ বাড়ির মালিক হয়েছেন মালয়েশিয়ায়। এই ৩৩ হাজারের মধ্যে বাংলাদেশি মোকাম মালিকের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৪৬ জন। এরা যে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের চেয়ে কিছুটা হলেও আলাদা, এ কথা হলফ করে বলা যায়। আর ফারাকের কথা বলতে গেলে, সাধারণ মানুষের মাঝে কিছুটা হলেও দেশপ্রেমের অস্তিত্ব পাওয়া যাবে, কিন্তু এসব দুরাচার দুর্বৃত্ত, ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের মাঝে দেশপ্রেমের বিন্দুমাত্রও খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। এরাই সেই মহান ৩ হাজার ৫৪৬ বাংলাদেশি, যাদের সেকেন্ড হোম মালয়েশিয়ায়।
মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাস গড়ে তোলার কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। একটি বিষয় এখানে উল্লেখ না করলেই নয় যে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনো খারাপ কাজের প্রতিযোগিতা এলে বাংলাদেশ কখনই খারাপ ফল করে না। দ্বিতীয় নিবাস বা সেকেন্ড হোম গড়ে তোলার প্রতিযোগিতায় এখানেও বাংলাদেশ খারাপ করেনি। বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। কেউ যদি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে তার সেকেন্ড অথবা থার্ড হোম বানাতে চায়, তাতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু তিনি অথবা তারা যদি অবৈধ পথে তা করে থাকেন, তাহলে আপত্তি থাকতেই পারে।
তথ্য-উপাত্ত বলছে, যেসব বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম গড়ে তুলেছেন তারা কেউই এ দেশ থেকে বৈধ উপায়ে টাকা নিয়ে যাননি। পুরো টাকাটাই পাচার করে সরানো হয়েছে। তবে কত টাকা মালয়েশিয়ায় নেওয়া হয়েছে তার পরিমাণ জানা না গেলেও অনুমান করা হচ্ছে, পাচার করা এ টাকার পরিমাণ দেড় হাজার কোটি টাকার কম নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, প্রচলিত নিয়মে দেশ থেকে সেকেন্ড হোম গড়ার জন্য অর্থ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাহলে বলতেই হয়, এরা এ টাকা পেল কোথায়? এর কোনো তদন্ত হওয়ার সুযোগ আছে কি? সুযোগ থাকলে সে তদন্তটি কে বা কারা করবেন? আর তদন্তে ক্ষেপণ হবে কতটা সময়?
একসঙ্গে এত প্রশ্ন বিনাকারণে তোলা হয়নি। এ দেশের সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতার ফল খুব একটা ভলো নয়। তারা বহু তদন্তের কথা শুনেছেন এবং দেখেছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তদন্তকে তারা ডিপ ফ্রিজেই ঢুকতে দেখেছেন। আমরা মনে করি, এবার যেন সেই একই চিত্রের অবতারণা না হয়। আমরা ৩ হাজার ৫৪৬ সেকেন্ড হোম গড়ে তোলা বাংলাদেশিদের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি রাখছি।
"