কুম্ভকর্ণের ঘুম
মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ঢাকা মহানগরের দুই মেয়রের ঘুম এখনো ভাঙেনি। তবে ঘুমাতে পারছেন না নগরের দেড় কোটি সাধারণ মানুষ। প্রাকৃতিক বৈরিতা ও নাগরিক সেবা সংকটের কারণে দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ।
দেশজুড়ে বইছে দাবদাহ। খরায় পুড়ে যাচ্ছে চারদিক। বাড়ছে রোগব্যাধি। নেমে যাচ্ছে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর। মশার উপদ্রব সীমাহীন। প্রচ- গরমে ঘরে-বাইরে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। কোথাও স্বস্তি নেই। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের দুর্ভোগ যেন চরমে।
গাছপালা কমে যাওয়ায় রাজধানীর কোথাও নেই প্রকৃতির সুশীতল পরশ। চলতে চলতে প্রচ- গরমে রাস্তায় থমকে যাচ্ছে মানুষ। করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোথাও নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি আর অব্যবস্থাজনিত কারণে যানজটের মহাযজ্ঞ এবং গণপরিবহন সংকট। সব মিলিয়ে রাজধানীতে দুর্ভোগ এখন চরমে। নতুন নতুন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। মশা নিধনের ওষুধ নেই সিটি করপোরেশনের গুদামে। নগরীর ঘরে ঘরে অ্যাডিস মশাবাহিত রোগ চিকুনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়ছে। প্রচ- দাবদাহে এমন দুরবস্থার জন্য নগরবিদরা নগর কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন। তাদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বেড়েছে। সেই তাপমাত্রা থেকে মানুষকে রক্ষা করতে হলে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে বিশেষ কিছু উদ্যোগ নিতে হয়। দেশে সেসব উদ্যোগ অনুপস্থিত। তারা বলেছেন, এই মহানগরে কোনো নগর পিতা আছেন বলে মনে হয় না। যদি থেকে থাকেন তাহলে তারা ঘুমিয়ে আছেন। এ ঘুম কবে ভাঙবে তা সাধারণের পক্ষে বলা খুবই কঠিন। সাধারণ নাগরিকদের প্রতি নগরপিতাদের মনোযোগ খুঁজে পেতে হলে অণুবিক্ষণ যন্ত্রের প্রয়োজন হতে পারে। নগরবিদরা আরো বলেছেন, তারা যতটা রাজনীতি নিয়ে ভাবেন, নাগরিক সুবিধার কথা ততটা ভাবেন না। তারা জানিয়েছেন, নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করতে হলে নগর পিতাদের ঘুমের বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে হবে। মানুষের দুর্ভোগ ও কষ্টকে বুঝতে হবে। অন্যথায় প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর থাকবে না।
আমরা মনে করি, বিষয়টির একটি ইতিবাচক সমাধান হওয়া দরকার। আর সে সমাধান নগর পিতাদেরই করতে হবে। যত দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে, ততই মঙ্গল দেশজনতার, বিশেষ করে রাজধানীবাসীর।
"