অনৈতিক বাণিজ্যে পুলিশ
চাকরি পুলিশে। ক্ষমতা ডিপার্টমেন্টের। কার্যালয় : থানা অফিস।
কাজ : অনৈতিক বাণিজ্য। মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদে যতটুকু জানা গেছে, এটুকুই সারমর্ম।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠার গুরুদায়িত্ব যার কাঁধে, সেই ওসি (রাজধানীর উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করছেন জমি কেনাবেচা এবং বিরোধ নিষ্পত্তির জমজমাট বাণিজ্য। থানার ভেতরে নিজের রুমে চেয়ার পেতে প্রায় প্রতি সন্ধ্যায় তার নেতৃত্বে সালিস বৈঠকের নামে এই আসর বসছে। আসরে স্থানীয় জমির দালাল এবং জমিসংক্রান্ত মামলায় পারদর্শী জ্ঞানপাপীরাই যোগ দেন নিয়মিত। মূলত ওসি সিরাজুল হক এই চক্রটিকে ব্যবহার করেই তার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। ওসির এই অনৈতিক কর্মকা-ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কতটুকু নাখোশ বা নাখোশ নন, তা বলা না গেলেও এলাকাবাসী যে ক্ষুব্ধ, সেটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। এলাকাবাসী প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেছেন, ওসি সাহেব যা করছেন, আইন তার কতটুকু বৈধতা দেয়?
স্থানীয়দের অভিযোগ, সন্ধ্যা হলেই ওসির কক্ষে সালিস বসে। চলে গভীর রাত পর্যন্ত। বৈঠকের সবই জমিসংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে। এলাকায় জনপ্রতিনিধি থাকলেও বিরোধের অধিকাংশই নিষ্পত্তি হয় ওসির মধ্যস্থতায়। প্রতিটি মধ্যস্থতার বিপরীতে রয়েছে একটি বড় অঙ্কের খাজনা। তার অপকর্মের তালিকায় আরো আছে অবৈধ মাদক ব্যবসা। এলাকার ১৫টি মাদক স্পট থেকে মাসে কত টাকা খাজনা আসে, তার হিসাব বলতে পারেন একমাত্র ওসি সিরাজুল হক। মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ এ কথাই প্রমাণ করে যে, পুলিশ বিভাগের মাথায় পচন ধরেছে। নতুবা রাজধানীতে পুলিশ কর্মকর্তাদের অনৈতিক আচরণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়বে কেন! কেন বনানী থানার কর্মকর্তা (ওসি) বিএম ফরমান আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমা হওয়ার পরও কোন ক্ষমতার জোরে এখনো পদে বহাল থাকেন!
আমরা মনে করি, এর একটা বিহিত হওয়া দরকার। দরকার সমাজের স্থিতিশীলতাকে টিকিয়ে রাখা। টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব যখন পুলিশ বিভাগের, তখন এখান থেকে জঞ্জালমুক্ত করার কাজ খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। আর এই জরুরি কাজের দায়িত্ব জরুরিভিত্তিতে সরকারকেই মাথা পেতে নিতে হবে। অন্যথায় পুরো বিভাগটাই এক দিন দানব রূপে সমাজের ওপর আছড়ে পড়বে, যা শান্তিপ্রিয় একজন নাগরিকেরও কাম্য নয়।
"