ব্যাংক ভবনে আগুন
একের পর এক দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গেল বছর ৪ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮০৮ কোটি টাকা চুরি হয়। পরের সপ্তাহে কয়েকটি ব্যাংকের এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। এতে
৪০ জন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ লাখ ৫৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র। এর আগে ব্যাংকের সবচেয়ে নিরাপত্তাবলয়-ভল্টের
কাছ থেকে চুরি হয় পাঁচ লাখ টাকা। হ্যাকড হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের
ই-মেইল এবং সর্বশেষ গত ২৩ মার্চ ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ একটি
বিভাগে আগুন লাগে।
ক্রমাগত এ ধরনের দুর্ঘটনার কারণে সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রশ্ন উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর আবু আহমেদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুনের ঘটনায় সবার মতো আমিও আহত হয়েছি। এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘ভল্ট, রিজার্ভ, ই-মেইল হ্যাকিং ও অগ্নিকা-ের ঘটনা একই যোগসূত্রে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। তবে সদিচ্ছা না থাকলে তদন্ত ঠিকভাবে হবে না।’
এখানেই প্রশ্ন। এদেশে তদন্তের কোনো অভিভাবক নেই। তাই এর গতি-প্রকৃতি বোঝাও মুশকিল। আর সে কারণে অনেক ঘটনাই শেষ পর্যন্ত হিমাগারে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। সম্ভবত প্রফেসর আবু আহমেদ যথার্থই বলেছেন, ‘সদিচ্ছা না থাকলে তদন্ত ঠিকভাবে হবে না।’ বিশ্লেষকদের মতে, দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ স্থাপনায় একের পর এক দুর্ঘটনারোধে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
পত্রিকান্তরে যেটুকু জানা গেছে, বৃহস্পতিবার আগুন লাগার পরে বা আগে কোনো অ্যালার্মের শব্দ শোনা যায়নি। অগ্নিসতর্কীকরণ যন্ত্রটি বিকল হয়ে পড়েছিল কি না তাও জানা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে এখনো কেউ মুখ খোলেনি। সবার একই কথা, তদন্তের আগে কেউই মুখ খুলতে
রাজি নন। আমরা মনে করি, অন্তত বাংলাদেশের সেন্ট্রাল ব্যাংক হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে সব অভিযোগের প্রকৃত সত্য সাধারণের জন্য উন্মুক্ত হওয়া দরকার। অন্যথায় কতিপয় দুর্বৃত্তের কাছে জিম্মি হয়ে থাকতে হবে গোটা দেশ ও জাতিকে, যা কখনই কারো কাম্য হতে পারে না।
"