রায়হান আহমেদ তপাদার

  ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭

পর্যালোচনা

পর্যাপ্ত শিক্ষার সুযোগ জরুরি

প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলে এবং প্রতিষ্ঠিত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সম্প্রসারণ তথা এগুলোয় আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলে শিক্ষার সুযোগ অনেকটা কাক্সিক্ষত পর্যায়ে উন্নীত হতে পারত। তবে শুধু শিক্ষার সুযোগ থাকলেই চলবে না, সুশিক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।

শিক্ষা মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। তাই তাত্ত্বিকভাবে শিক্ষার ক্ষেত্রে সুযোগ কথাটি অনেকটা বেমানান। কিন্তু বাস্তবিকভাবে আমাদের দেশে শিক্ষার সর্বজনীন অধিকার এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এমনকি শিক্ষার সুযোগও পর্যাপ্ত নয়, বৈষম্যমুক্ত নয়। প্রথমে শিশু শিক্ষার কথা বলা যাক। শিশু ফুলের মতো পবিত্র, নিষ্পাপ। প্রত্যেক শিশুই অপার সম্ভাবনা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। পর্যাপ্ত আদর-যতœ ও সুশৃঙ্খল নিবিড় তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে মানবশিশুর শুভ সম্ভাবনাগুলো বিকশিত হতে পারে। শিশুকে সুস্থ ধারায় লালন বা পরিচর্যার ওপর নির্ভর করে কোনো সমাজ, রাষ্ট্র ও সার্বিকভাবে বিশ্ব সংসারের কল্যাণ। তাই শিশুর যথাযথভাবে লালন-পালনের দায়িত্ব শুধু সংশ্লিষ্ট পরিবারেই নয়, বরং সমাজ, রাষ্ট্র ও সার্বিকভাবে বিশ্ববাসী সবারই এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করা জরুরি। শিশুকে যথার্থভাবে লালন-পালনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো তাদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করা। শিশুর শিক্ষার অধিকার আজ স্বীকৃত একটি মানবাধিকার। জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে শিশুর শিক্ষার অধিকারকে অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। এ সনদের ২৮ এবং ২৯নং ধারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ধারা দুটি যথাযথভাবে অনুশীলন করলে গড়ে উঠতে পারে একটি সুন্দর বিশ্বসমাজ। উল্লিখিত সনদের ২৮নং ধারায় বলা হয়েছে, ‘প্রতিটি শিশুর শিক্ষার অধিকার রয়েছে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো প্রতিটি শিশুর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং বিনা খরচে শিক্ষা পাওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা।

শিশুর জন্য মাধ্যমিক এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের পক্ষে এ সুযোগ বিনামূল্যে দেওয়া যদি সম্ভব না হয়, তাহলে প্রয়োজনবোধে সরকার আর্থিক সাহায্য দেবে। শিশুর যোগ্যতা অনুযায়ী উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। শিশুর স্কুল ত্যাগের হার কমাতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। প্রতিটি শিশু যেন তাদের শিক্ষার জন্য সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেসব তথ্য জানতে পারে, সরকার তারও ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং একই সঙ্গে সরকার এটাও নিশ্চিত করবে, শিক্ষার পদ্ধতি ও বিদ্যালয়ের নিয়মগুলো যেন সনদের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয়। সরকার সব শিশুর জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে জোরদার এবং উৎসাহিত করবে।’

জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ অনুযায়ী শিক্ষাগ্রহণের বিষয়টি শিশুর একটি মৌলিক অধিকার। বিশ্ববাসীর সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য এ অধিকারকে বাস্তবায়ন ও রক্ষা করে চলা প্রয়োজন। বিশেষ করে প্রত্যেক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হলো শিশুকে সুশিক্ষা প্রদান করা। এ শিক্ষা প্রদানের বিষয়টি হবে সর্বজনীন। ধনী-গরিব বিভিন্ন শ্রেণি নির্বিশেষে যে পরিবারেই শিশু জন্মগ্রহণ করুক না কেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হবে সবার জন্য সুশিক্ষা নিশ্চিত করা। কিন্তু অনুন্নত, উন্নয়নশীল অনেক দেশে এ অধিকারকে পর্যাপ্তভাবে নিশ্চিত করা হয় না। আমাদের দেশেও বাধ্যতামূলক বা সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়টি যথার্থভাবে কার্যকর হয়নি। বিনা খরচে বা সরকারি সাহায্যে যে শিক্ষা প্রদান করা হয়, তা দ্বারা সমকালীন বাস্তবতায় যুগোপযোগী শিক্ষা পাওয়ার বিষয়টি মোটেই নিশ্চিত হয় না। সামর্থ্যবান পরিবার নিজেদের খরচে ও তত্ত্বাবধানে তাদের শিশুকে উন্নতমানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সামর্থ্যহীন পরিবারের শিশুর জন্য যেসব ব্যবস্থা এদেশে বিদ্যমান রয়েছে বা সরকারি সাহায্যপুষ্ট যেসব শিশুশিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে, তার অবস্থা অনেক ক্ষেত্রেই এত নিম্নমানের যে, সেসব কেন্দ্রে কোনো পরিবারই ইচ্ছা করে তাদের সন্তানদের পাঠান না।

হয়তো বিকল্প না থাকায় বা সামর্থ্য না থাকার কারণে বাধ্য হয়ে সেসব প্রতিষ্ঠানে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের পাঠিয়ে থাকেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অবস্থা অনেক ক্ষেত্রেই মানসম্মত নয়। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নত বা যথার্থ শিক্ষাদানের ব্যবস্থা নেই। রয়েছে দক্ষ শিক্ষকের অভাব। শিক্ষকতায় দক্ষ হলেও তাদের বেতন-ভাতার বেহাল অবস্থার কারণে তারা শিক্ষা প্রদানে অনেক ক্ষেত্রেই দিতে পারছেন না পর্যাপ্ত মনোযোগ। শিক্ষা উপকরণ এবং আনুষঙ্গিক পরিবেশেরও অভাব রয়েছে। সরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবস্থাও অনেকটা তেমনই। আমাদের দেশে শিক্ষকতা অনেকের কাছে ব্যক্তিগতভাবে ভালো লাগার ব্যাপার হলেও এটি কোনো লাভজনক বা উচ্চসুবিধা ভোগকারী লোভনীয় পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শিক্ষকদের পর্যাপ্ত বেতন-ভাতা ও মর্যাদা প্রদানের দিক থেকে আমাদের দেশ বিশ্বের উন্নত এমনকি উন্নয়নশীল অনেক দেশের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। তাই ভালো, শিক্ষিত ও মেধাবী ব্যক্তিরা আজ অনেক ক্ষেত্রেই শিক্ষকতা পেশায় আসতে চাচ্ছেন না। নিতান্ত ভালো লাগা বা অন্য কোনো বাধ্যবাধকতা থেকে যারা এ পেশায় আসছেন তারাও জীবন-জীবিকার বাস্তব কশাঘাতে অনেক ক্ষেত্রেই এ পেশার প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠছেন। আমাদের দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকই আছেন যাদের শিক্ষাদানের মতো যথার্থ জ্ঞান নেই। এ কথা অবশ্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও বর্তায়। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আছেন, যারা ডক্টরেট ডিগ্রির অধিকারী। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, সেখানে শিক্ষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়ার সুযোগ আছে।

বিশ্বের উন্নত দেশগুলো শিক্ষকদের ব্যাপক সুযোগ প্রদান করছে। তাই সেসব দেশে মেধাবী ও যোগ্য ব্যক্তিরা শিক্ষকতা করতে আগ্রহী হয়। কিন্তু আমাদের দেশের বাস্তবতা বিপরীতধর্মী। অথচ উন্নতমানের শিক্ষাকে নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষকদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা, মর্যাদা প্রদানের কোনো বিকল্প নেই। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বেহাল অবস্থার সুযোগে এদেশে বেসরকারি উদ্যোগে অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক মানসিকতায় গড়ে উঠেছে নানা ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্ডারগার্টেন, বাংলা মাধ্যম, ইংরেজি মাধ্যম, ইংরেজি ভার্সন নামের এসব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুকে পড়াতে অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়। স্বল্প আয়ের অভিভাবকদের শিশু সেখানে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে না। সামর্থ্যবানদের সন্তানরা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের সন্তানদের না পাঠানোর কারণে সামাজিকভাবেও ওইসব প্রতিষ্ঠান গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। সমাজে অপ্রভাবশালী নিরীহ দরিদ্র শ্রেণির মানুষের সন্তানরা যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করে তার মান নিয়ন্ত্রণে সামাজিকভাবে কোনো প্রভাব খাটানো সম্ভব হয় না। অন্যদিকে প্রাইভেট কোচিংয়ের যে অপকালচার আমাদের দেশে গড়ে উঠেছে তাতে করে ভালো শিক্ষা নিতে হলে কোচিংনির্ভর হতে হয়। দরিদ্র বা স্বল্প আয়ের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এ সুবিধা দিতে পারেন না। সরকারি সাহায্য প্রতিষ্ঠানভিত্তিক দেওয়া হলেও কারো কোচিং ফি’র জন্য তো আর সরকারি অর্থ পাওয়া সম্ভব হয় নয়। তাই দরিদ্র ঘরের শিশু উপযুক্ত শিক্ষালাভে বঞ্চিত হয়। সরকার নিয়ন্ত্রিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মান উন্নত করলে, শিক্ষার পরিবেশ ভালো করলে এবং শুধু বিদ্যালয়ের সাহায্য নিয়েই (কোনো ধরনের কোচিং ছাড়া) ভালো শিক্ষা নিশ্চিত করলে শিশুশিক্ষার বিষয়ে এতটা বৈষম্য থাকত না।

উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা দেওয়া হয় এমন কলেজের সংখ্যা এদেশে প্রয়োজনের তুলনায় কম নয়, বরং বেশি হতে পারে। কিন্তু মানসম্মত প্রতিষ্ঠানের অভাব রয়েছে। যেসব কলেজে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্স চালু আছে, সেসব কলেজে গেল কয়েক বছরে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার মান অনেক নিম্নগামী হচ্ছে। এর কারণ, এসব কলেজে ভালো বা অধিকতর যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াতে দেওয়া হয়। অন্যদিকে উচ্চমাধ্যমিকে পড়াতে দেওয়া হয় কম অভিজ্ঞ শিক্ষকদের। তাই এ পর্যায়ে ভালো পড়ানো নিশ্চিত হয় না। এদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ অবারিত বলে অনেকের কাছে মনে হতে পারে। কেননা দেশে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। রাজধানী ঢাকার কিছু এলাকা আছে যেখানে অল্প দূরত্বের মধ্যেই একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান দেখা যায়। এত বিশ্ববিদ্যালয় থাকতেও এদেশে মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সুযোগ অবারিতÑএমন কথা বলা চলে না। আসলে আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষার আগ্রহ যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি এ আগ্রহের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নানা ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। উচ্চমাধ্যমিক পাস করলেই উচ্চশিক্ষার সার্টিফিকেট জোগাড় করা আর সমস্যার ব্যাপার হয় না। টাকা থাকলেই এখন ভালো ভালো বিষয়ে ভর্তি হওয়া যায়Ñডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ফার্মাসিস্ট হওয়া যায়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোনোটিতে পর্যাপ্ত মেধা না থাকা সত্ত্বেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভর্তি হওয়া যায়। অবশ্য ভর্তি হওয়ার পর যদি পর্যাপ্ত পাঠগ্রহণের সুযোগ থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভালো দক্ষতা নিয়েই কৃতকার্য হওয়া সম্ভব। কিন্তু অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান প্রক্রিয়া সন্তোষজনক নয়। তাই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার সুযোগ অবারিত করার বিষয়টি জাতির জন্য ক্ষতিকর হওয়া স্বাভাবিক। এজন্য দরকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও সম্প্রসারণ।

বাংলাদেশে বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আসন সংখ্যা রয়েছে, তা ক্রমবর্ধমান ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের তুলনায় অত্যন্ত কম। অনেক ক্ষেত্রে আবেদন করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই তিন শতাংশেরও কম শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। অন্যদিকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিভিন্ন কলেজে। কিছু ঐতিহ্যবাহী কলেজ ছাড়া অনেক কলেজই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পাঠদানের সুবিধা ধারণ করছে না। অধিকাংশ কলেজেই রয়েছে শিক্ষক স্বল্পতা অথবা যোগ্য শিক্ষকের অভাব। এক জরিপে দেখা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজগুলোয় বছরে গড়ে ৮৫ দিনের বেশি ক্লাস হয় না।

ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে তা অনেক কল্যাণকর বিষয় হতো। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যাপ্ত জমি আছে, অবকাঠামো উন্নয়নের সুযোগ আছে, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রসারণ ও সংস্কারের মাধ্যমে আরো অধিক শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি করা যায়। নতুন নতুন বিভাগ, ইনস্টিটিউট খোলা যায়। এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারকে সঠিক পথ না দেখালে অথবা সরকারের কাছে সঠিকভাবে প্রকল্প উত্থাপন করতে না পারলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালগুলোর কাক্সিক্ষত সম্প্রসারণ হবে না।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ সীমিত হওয়ার কারণে অনেক বিত্তবান অভিভাবক তাদের সন্তানদের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন। মেধা যা-ই হোক, পড়ালেখা করুক আর না-ই করুক, অনেকটা অর্থের জোরে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট জোগাড় করে অনেকেই আজ উচ্চশিক্ষিত হিসেবে খেতাব নিচ্ছেন। তাদের অনেকে আবার বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে চাকরিও ম্যানেজ করছেন। আর এতে করে অনেক গরিব মেধাবী অথচ প্রভাবপ্রতিপত্তিহীন চাকরিপ্রার্থী বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই উচ্চশিক্ষার অধিকারকে নিশ্চিত করতে হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সম্প্রসারণ করা এবং সমস্যামুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলে এবং প্রতিষ্ঠিত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সম্প্রসারণ তথা এগুলোয় আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলে শিক্ষার সুযোগ অনেকটা কাক্সিক্ষত পর্যায়ে উন্নীত হতে পারত। তবে শুধু শিক্ষার সুযোগ থাকলেই চলবে না, সুশিক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।

লেখক : কলামিস্ট, যুক্তরাজ্য প্রবাসী

raihan567@ yahoo.co.uk

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist