নিরাপদ ভূমির সন্ধান পাবো
দেশকে সুন্দর করে সাজাতে কে না চায়। এ দেশের ১৬ কোটি মানুষের একটাই স্বপ্নÑবিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ যেন একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গর্বের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। তুলনামূলক বিচারে বাংলাদেশ তার অনেকটাই অর্জন করেছে। তবে এখনো অনেক বাকি। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য এখনো অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে।
এ দেশের গণতন্ত্রের জন্য, নির্বাচনের জন্য আমরা অনেক রক্ত দিয়েছি। এখনো সেই রক্ত দেওয়ার পথ থেকে সরে আসতে পারিনি। এ নিয়ে বিতর্কের ঝড় দিন দিন বেড়েই চলেছে। বর্তমানে চলছে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে বিতর্ক। এ ব্যাপারে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছেন। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিসহ দেশের প্রায় সব দলই আলোচনায় অংশ নিয়েছে। প্রত্যেকেই নিজ নিজ ভাবনার কথা বলেছেন। নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রশ্নে সব দলই আইন প্রণয়নের পক্ষে মত দিয়েছে। তবে বিএনপি আইন প্রণয়নের পক্ষে সুস্পষ্ট কিছু না বললেও বিরোধিতা করেনি।
এ ব্যাপারে আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়, যদিও সব দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তটিই তাদের সিদ্ধান্ত।
এখানে মনে রাখা অত্যন্ত জরুরি, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি সম্পূর্ণ স্বাধীন নন। সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তিনিই প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দেবেন। অর্থাৎ, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তার ওপর কিছু শর্ত আরোপ করা আছে। আরোপিত শর্তগুলোর একটি ৪৮/৩ অনুচ্ছেদ, যেখানে বলা হয়েছেÑশুধু প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ছাড়া অন্যসব ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ মোতাবেক কাজ করতে হবে। কাজটি বাধ্যতামূলক।
এদিকে, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সমস্যা সমাধানে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে পরস্পরের মধ্যে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলো একে সাধুবাদ জানালেও এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। আমরা আশা করি, আলোচনা হবে এবং একটি ভালো ফলাফল আসবে।
দেশের প্রায় প্রতিটি মানুষই শান্তি কামনা করেন। আর কোনো রক্তপাত তারা দেখতে চান না। নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও সুন্দর করার জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে দেশে যেন আর কোনো অঘটন না ঘটে, এটাই সবার প্রত্যাশা। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন প্রজ্ঞাবান রাজনীতিক। তিনি নিশ্চয়ই দেশ ও দশের মঙ্গল চিন্তা করেই সিদ্ধান্ত নেবেন এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও আন্তরিক সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসবেন। তাহলেই আমরা একটি সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদ ভূমির সন্ধান পাব।
"