reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৭ আগস্ট, ২০২০

ক্ষতিপূরণসহ সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা জরুরি

করোনার ভয়াল থাবায় কাঁপছে বিশ্ব। দেশে দেশে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা। এই দুর্যোগের মধ্যেই গত মঙ্গলবার বিকালে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন চার হাজারেরও বেশি। নিহতের মধ্যে চার বাংলাদেশিও রয়েছেন। আহত হয়েছেন নৌবাহিনীর ২১ সদস্য। তবে ঠিক কী কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা পরিষ্কার নয়। পরদিন বুধবার দেশে নেত্রকোনার মদন উপজেলায় মিনি কক্সবাজারখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র উচিতপুরের হাওরে বেড়াতে এসে নৌকাডুবির ঘটনায় ১৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একই দিনে মেঘনায় ট্রলারডুবির ঘটনায় নয় জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। এই সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত তাদের সন্ধান চলছে। আমরা এসব ঘটনায় যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা যেমন প্রত্যাশা করছি, তেমনি নিহতদের পরিবারের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা।

বৈরুতে বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে বিশ্ব গণমাধ্যমে নানা ধরনের কথা উঠছে। বলা হচ্ছে, কয়েক দিন ধরে ইসরায়েল-লেবানন-সিরিয়া সীমান্তে উত্তেজনা চলছে। এর সূত্র ধরে বিস্ফোরণের ঘটনা হতে পারে বলে অনেকে মন্তব্য করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব উঠেছে, এটি ইসরায়েল কিংবা আমেরিকার পারমাণবিক হামলা হতে পারে। বিবিসি বলছে, বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে ইসরায়েল আর আমেরিকাকে দুষছে সেখানকার পার্টিজান বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। তবে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব বলছেন, এটি নাশকতামূলক ঘটনা নয়। জানা গেছে, ছয় বছর ধরে একটি গুদামে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুদ করে রাখা হয়েছিল। ২০১৪ সালে একটি মালবাহী জাহাজে করে ওই রাসায়নিক এসেছিল। কাগজপত্র ঠিক না থাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজের জিনিস বাজেয়াপ্ত করে। তারপরই ওই রাসায়নিক গুদামে মজুদ করা হয়। ঠিক করা ছিল পরে নিলামের মাধ্যমে রাসায়নিক বাজারে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু গত ছয় বছরে সে কাজ করা যায়নি। শুধু তা-ই নয়, এই পরিমাণ রাসায়নিক যেখানে মজুদ ছিল, সেখানে যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট জমিতে সারের কাজে লাগে। খনিতে কাজে লাগে। আবার বোমা তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়। সহজেই এর থেকে বিস্ফোরণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবার সে ঘটনাই ঘটে বৈরুতে। বিস্ফোরণে প্রায় পুরো রাজধানী কেঁপে ওঠে। বহু দূর পর্যন্ত ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষ আহত হয়েছেন। বিবিসি বাংলা বলছে, কয়েক শ কিলোমিটার দূরের সাইপ্রাসেও বিস্ফোরণের আঁচ পাওয়া গেছে। এতে বোঝা যায় বিস্ফোরণের ভয়াবহতা কত প্রকট ছিল।

আমরা চাই এ ঘটনার প্রকৃত তথ্য উন্মোচন হোক। যদি সন্ত্রাসী হামলা না হয়, যাদের গাফিলতিতে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে, তাদের সবাইকে কঠোরতম শাস্তির আওতায় আনতে হবে। নিহত প্রবাসীদের ক্ষতিপূরণের দাবি তুলতে হবে। যারা আহত হয়েছেন, তারা যেন সুচিকিৎসা পান সেই বিষয়ে নজরদারি করতে হবে। লেবাননে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার বাংলাদেশি বসবাস করেন। এ ঘটনায় যেসব বাঙালি নাবিক আহত হয়েছেন এ মুহূর্তে তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি দেশে ট্রলার ও নৌকাডুবির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close