reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৫ জুলাই, ২০২০

দেশে করোনার তীব্রতা নিম্নমুখী

চারপাশে কোনো সুখবর নেই। তার পরও নিকষ কালো অন্ধকার রাতে জোনাকের আলো আমাদের আকাক্সক্ষাকে জাগ্রত করে। মনে হয় আলো এখনো আছে। এই জোনাকের আলো বিকশিত হয়ে সকালের দিকে প্রসারিত হবে। করোনার অন্ধকার এখনো কাটেনি। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দ্বিতীয় দফায় বন্যা। দ্বিমুখী এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমরা ভালো নেই। বিপর্যস্ত হয়েছে আমাদের জীবন। ভেঙে পড়েছে অর্থনীতি। আমরা এক কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছি। এ সংগ্রামে আমাদের জিততেই হবে। এ মুহূর্তে এটাই যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পুনরুত্থান। এ চেতনা সামনে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। অন্য কোনো বিকল্প আমাদের জানা নেই। তবে অনেক খারাপ খবরের মাঝে একটি ভালো খবর আমাদের নজরে এসেছে। আর সে খবরটি হলো দেশে করোনার তীব্রতা নি¤œমুখী। অন্তত পত্রপত্রিকার তথ্য সে কথাই বলছে।

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৩ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৪২৪ জন। নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৬৩ জন। মোট শনাক্ত ১ লাখ ৯০ হাজার ৫৭। সুস্থ ১ লাখ ৩ হাজার ২২৭ জন। পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, তীব্রতা কমেছে। এটি আমাদের জন্য একটি সুখবর বটে। তবে একটি কথা বলতেই হয়, বিশ্বে যখন করোনা প্রতিরোধে কোনো ভ্যাকসিন নেই। নির্দিষ্ট কোনো ওষুধের দেখা নেই। তখন আমাদের দেশে কমে যাওয়ার প্রবণতা অনেকের কাছে প্রশ্নবোধক হয়ে দেখা দিয়েছে। তবে এ কথা সত্য যে, এ দেশের হতদরিদ্র মানুষগুলোকে রক্ষা করেছে তাদের অ্যান্টিবডি। প্রাকৃকিক নিয়মেই তারা তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এমন একটি পর্যায়ে তৈরি করে রেখেছেন, যেখানে করোনাভাইরাস আক্রমণ করে পরাজিত হয়ে ফিরে এসেছে। অনেকের মতে, প্রতিরোধ ক্ষমতাই রক্ষা করেছে এসব হতদরিদ্র মানুষকে। অন্যথায় তারা যেভাবে জীবনযাপন করে তাতে সর্বপ্রথম তারাই আক্রান্ত হতেন এবং মৃত্যুঝুঁকিতে পড়তেন। কিন্তু তা হয়নি। এ ব্যাপারে একটি উদাহরণ টানা যেতে পারে। আমাদের দেশে দুই ধরনের মুরগির দেখা মেলে। এক. ব্রয়লার। ২. দেশি। ব্রয়লারের ক্ষেত্রে ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মহামারির কথা আমরা বহুবার শুনেছি এবং দেখেছি। কিন্তু দেশি মুরগির ক্ষেত্রে তা কখনোই শোনা যায়নি। এর পেছনের কারণ একটিই। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। যা দেশি মুরগির পাশে দাঁড়ানোর মতো যোগ্যতা ব্রয়লারের নেই। যদিও যতেœর ব্যাপারে এ দুয়ের মাঝে ফারাক আকাশ-পাতাল। প্রকৃতির মাঝে অবাধ চলাফেরার মধ্য দিয়েই প্রকৃতির কাছেই তার এই প্রাপ্তি।

তথ্যমতে, এ মুহূর্তে দেশে বস্তির সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৩৫। এসব বস্তিবাসী ও ভাসমান খানাগুলোর গড় সদস্য ৩ দশমিক ৭৫ জন করে। এসব বস্তির বাসিন্দা ও ভাসমান মানুষের অনেকেরই কোভিড-১৯ সম্পর্কে প্রকৃত ধারণা না থাকলেও এ নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে ঠিকই। তারা জানেও না কোনো পরিস্থিতিতে কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। যেখানে ছোট আয়তনের ঘিঞ্জি ঘরগুলোতে গাদাগাদি করে বসবাস করছে কয়েকজন মানুষ। হোম কোয়ারেন্টিন প্রয়োগের আলাপ সেখানে বাতুলতা মাত্র। আর এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। আর এই বাস্তবতাকে সামনে রেখেই বলা যায়, অ্যামিউনিটিই আর শক্তিশালী অ্যান্টিবডিই রক্ষা করেছে দেশের অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে। আর সে কারণেই এ বিষয়ের দিকে আমাদের আরো বেশি মনোযোগী হওয়া দরকার। আমরা যুদ্ধে আছি, থাকব এবং পরিশেষে আমরাই জিতব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close