reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ৩১ মে, ২০২০

এমন মৃত্যু কারো কাম্য নয়

অদৃশ্য এক ক্ষুদ্রাতি-ক্ষুদ্র ভাইরাস। ক্ষমতার কথা ভাবলে সে ভাবনায় ইতি টানা সম্ভব নয়। সম্ভবত বিশ্বের সকল মারনাস্ত্রের যোগফলের শক্তির চেয়েও এর শক্তি অপ্রতিরোধ্য। বর্তমান পৃথিবী এবং সভ্যতা আজ একবাক্যে একথা স্বীকার করেছে। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। আমাদের দেশও এর বাইরে থাকতে পারে নি। এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা ৫৮২ থেকে ৬০০ অতিক্রম করেছে। অভিজ্ঞ মহল বলছেন, আগামী তিন সপ্তাহ বাংলাদেশে সংক্রমনের হার চূড়ান্তের দিকে এগিযে যাবার সম্ভাবনাই বেশি। তাই এ সময়কাল বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে সকলকে সচেতনতার উৎসর্কতায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

গত ২৯মে তথ্যমতে, এক দিনে রেকর্ড দুই হাজার ৫২৩ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের মধ্য দিয়ে দেশে করোনাবাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ হাজার ৮৪৪ জন-এ উন্নীত হয়েছে। দেশে হুহু করে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। দীর্ঘতর হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। এমতাবস্থায় প্রাণঘাতী এই ভাইরাস প্রতিরোধে দুই মাসের সাধারণ ছুটি শেষে অফিস, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি গণ পরিবহন চালুর প্রশ্নে মতভিন্নতা দেখা দিয়েছে। একপক্ষ বলছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার শঙ্কা তৈরী হয়েছে। অপরপক্ষ বলছেন, কতোকাল লকডাউনে রাখা যাবে একটি রাষ্ট্রকে। বাস্তবতা বলছে, অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশগুলো যখন লকডাউনকে দীর্ঘমেয়াদী করতে অপারগতা প্রকাশ করেছে- তখন আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশ সমুহ লকডাউনকে কতোটা দীর্ঘমেয়াদী করার ক্ষমতা রাখে! বিষয়টি ভেবে দেখার মতো।

এদিকে ঢাকার গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে করোনভাইরাস রোগীদের ইউনিটে গত বুধবার রাতে আগুন লেগে পাঁচ রোগী মারা যায়। রাতেই বেসরকারি হাসপাতালটির নিচের প্রাঙ্গণে করোনাভাইরাস রোগীদের জন্য স্থাপিত আইসোলেশন ইউনিটে আগুন লাগে। আধাঘন্টার মধ্যে আগুন নেভানো সম্ভব হলেও ভাইরাসআক্রান্ত রোগীদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। কিন্তু কেন? এ প্রশ্নের কোনে সদুত্তর আছে কিনা আমাদের জানা নেই। অথবা বলা যায়- জানা থাকলেও তা না জানার বৃত্তে বন্দী। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, ‘একে তো বিঁষফোঁড়া তার ওপর খাড়ার ঘা’। করোনায় আক্রান্ত রোগীরা করোনায় মৃত্যুবরণ না করে হাসপাতাল বেডে শুয়ে থেকে মারা গেল অগ্নিদগ্ধ হয়ে। এখানে যেন রোগীদের পক্ষে দাঁড়াবার কেউ নেই। কখনো ছিল বলে মনে করারও কোনো কারণ নেই। বাস্তবতা হচ্ছে, সম্পদশালীদের কাছে সবসময় নিগৃহীত হয়েছে সাধারণ। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কাছেই আত্মসমর্পন করতে হলো।

পুলিশের তথ্যমতে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) থেকে আগুনের সূত্রপাত। নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রটির ব্যবহারযোগ্যতা নিয়ে কথা উঠতেই পারে। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের অবহেলার দিকে অঅঙুল উত্থাপন করলেও কারো কিছু বলার থাকে না। আর একই সময় যদি হাসপাতালের ১২টি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মধ্যে ৯টিই মেয়াদউত্তীর্ণ হয়ে থাকে তখন তাদের সেবার মান সম্পর্কে আলাদা করে কিছু বলার থাকে না। আমরা মনে করি, এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসাটা আজ অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। সম্পদ বাড়ানোর জন্য আপনারা বানিজ্য করবেন। এখানে কারো আপত্তি থাকার কথাও নয়। তবে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন তা ক্ষমার অযোগ্য। আমাদের মনে রাখা দরকার, চিকিৎসার ক্ষেত্রে মানুষ হত্যা কখনোই গ্রহনীয় হতে পারে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close