reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৯ এপ্রিল, ২০২০

কল্যাণ বয়ে আনুক এই সৌভাগ্যের রজনি

আজ পবিত্র শবেবরাত। মুসলমানদের কাছে যা সৌভাগ্যের রজনি হিসেবে পরিচিত। সেই হিসেবে শাবান মাসের ১৪ তারিখ রাত অত্যন্ত বরকতময় ও মহিমান্বিত বলে বিবেচিত। এ রাতে মহান রাব্বুল আলামিন মানবজাতির জন্য তার অসীম রহমতের দরজা খুলে দেন। এ রাতে মানবসমাজ তথা বিশ্বের সব সৃষ্টির ভাগ্য নির্ধারণ করেন মহান আল্লাহতায়ালা। তিনি মানুষের জীবন-মৃত্যুর দিনক্ষণ নির্ধারণ এবং রুজি-রোজগার বণ্টন করেন। নাজিল করেন বান্দার প্রতি অশেষ রহমত। বান্দাদের আকুতি, আশা-আকাক্সক্ষা পূরণেরও রাত এটি। আল্লাহতায়ালা ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং বিপদগ্রস্তদের দেখান উত্তরণের পথ। এ কারণেই মুসলমানদের কাছে শবেবরাত বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

মুসলমানরা প্রতি বছর যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনায় শবেবরাত পালনের জন্য প্রস্তুত হন। কিন্তু এ বছর বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে কারণে মানুষ শঙ্কাগ্রস্ত। গতকাল পর্যন্ত জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সর্বশেষ তথ্যমতে বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৮২ হাজার ৭৩ জন। মোট আক্রান্ত ১৪ লাখ ২৯ হাজার ৪৩৭ জন। বাংলাদেশেও করোনা তার কালো থাবা বিস্তার করেছে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) এর তথ্যমতে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এই সময়ে মারা গেছেন পাঁচজন। মানুষ কবে এই মহামারি থেকে রক্ষা পাবে তা কেউই জানে না। এ অবস্থায় মহান রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমত ছাড়া তার বান্দাদের রক্ষা করার আর কেই নেই। পবিত্র শবেবরাতের রাতে আল্লাহতালার কাছে সেজদারত হয়ে করোনার আঘাত থেকে মুক্তির জন্য আমাদের পথ খুঁজতে হবে। পবিত্র কোরআনের সুরা দুখানে বলা হয়েছে, ‘শপথ এই সুস্পষ্ট কিতাবের, নিশ্চয়ই আমি এই কিতাবকে বরকতময় রাত্রিতে অবতীর্ণ করিয়াছি। নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। এই রাত্রিতে ফয়সালা করা হয় প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়, আমার পক্ষ হইতে নির্দেশক্রমে, নিশ্চয় আমি প্রেরণাকারী।’ মহান সৃষ্টিকর্তার এই ঘোষণাই আমাদের একমাত্র নাজাতের পথ। পবিত্র কোরআনের এই বাণী থেকেও আরো উপলব্ধি করা যায় কেন শবেবরাত মুসলমানদের কাছে এত মহিমাময়। সেই মহিমার রোশনাই জীবনে ও কর্মে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে প্রয়োগের জন্যই প্রত্যেক মুসলমান এ রাতে ইবাদত-বন্দেগি করে কাটাবে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও ভাবগম্ভীর পরিবেশে শবেবরাত পালন করে থাকেন। প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান মসজিদে, বাড়িতে নফল নামাজ আদায়, মিলাদ মাহফিল, দান-খয়রাতের মাধ্যমে মানবজাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। এসব ইবাদতের জন্য কোনো আনুষ্ঠানিকতা ব্যতীত মসজিদে যাওয়া নিষিদ্ধ নয়। কিন্তু এবারের পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায় কবরস্থান ও মসজিদে না যাওয়াটাই বেশি সওয়াবের কাজ হবে বলে আশা করা যায়। যেখানে ফরজ নামাজের জন্যই মসজিদে গমন না করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে, সেখানে নফল ইবাদতের জন্য মসজিদে যাওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। তাই মৃত আত্মীয়-স্বজন ও মুসলিম মরহুম-মরহুমাদের জন্য ঘরে বসেই দোয়া করা উত্তম হবে। শবেবরাতের এই পূণ্যময় রাতে মহান আল্লাহতালা বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সবাইকে করোনা নামক মহামারি থেকে যেন রক্ষা করেন এটাই হোক একমাত্র প্রার্থনা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close