reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৫ এপ্রিল, ২০২০

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে চলতে হবে

একাত্তরের ২৬ মার্চ শুরু হয়েছিল আমাদের মুক্তির লড়াই। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মুক্তির সেই লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পুরো জাতি। সাড়ে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সে লড়াইয়ে ৩০ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ অর্জন করেছিল মহান বিজয়। দীর্ঘ ৪৯ বছর পর আবার আরেক মুক্তির লড়াইয়ে শামিল বাঙালি। তবে এ ক্ষেত্রে শুধু বাঙালি নয়, এর সঙ্গে যুক্ত গোটা বিশ্ব। এ যুদ্ধের প্রতিপক্ষ করোনা নামের এক মরণঘাতী ভাইরাস। যে ভাইরাসে গতকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮ হাজার ৯০১ জনে। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৩৮৯ জন। এর মধ্যে ৫৮ হাজার ৯০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ লাখ ২৬ হাজার ৬০৩ জন। বর্তমানে করোনার ভয়াবহতায় কাঁপছে পৃথিবীর প্রায় ৮০০ কোটি মানুষ।

তবে মানবসভ্যতাকে রক্ষা করতে হলে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাদের অবশ্যই জয়ী হতে হবে। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এবং করোনা বিপর্যয় চলাকালে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭১ সালে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করে আমরা যেভাবে বিজয়ী হয়েছি, করোনাভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধেও সেভাবে জয়ী হতে হবে। কারণ এ সময়ে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করা যুদ্ধেরই নামান্তর। বৈশ্বিক মহামারি রূপ পাওয়া কভিড-১৯ রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশ লকডাউন ঘোষণার পর বাংলাদেশও এক থেকে অন্যের মধ্যে সংক্রমণ এড়াতে গত ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয় সাধারণ ছুটি। ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এই ছুটি বাড়ানো হয়েছে। জীবনযাত্রা বলতে গেলে থেমে আছে, কর্মহীন হয়ে পড়েছে অনেক মানুষ। এ অবস্থায় ৩১ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে তিনি আতঙ্কিত না হয়ে এই সংকটকালে সবাইকে সংবেদনশীল ও সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর চার দফা পরামর্শ এরই মধ্যে গণমাধ্যমে এসেছে। এবার নতুন ৩১ দফা নির্দেশনায় করোনাভাইরাস সম্পর্কিত চিকিৎসাব্যবস্থা গ্রহণ এবং সচেতনতা কার্যক্রম বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করার পাশাপাশি দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া এবং কেউ যেন সহায়তার বাইরে না থাকে সে ব্যাপারে তাগিদ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা নির্দেশনায় সবাইকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে চিকিৎসাব্যবস্থা গ্রহণ করতে ও করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে বলা হয়েছে। চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সবার জন্য পিপিই নিশ্চিত করতে বলেছেন তিনি। নিয়মিত হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথাও বলা হয়েছে এই নির্দেশনায়। আবার যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে বা আইসোলেশনে আছেন, তাদের প্রতি মানবিক আচরণ করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা কাজে লাগানো গেলে বাংলাদেশ শুধু যে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সক্ষম হবে তা নয়, রাষ্ট্র হিসেবে জনকল্যাণে বড় ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি। সেই বিবেচনায় রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেকেরই প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা নির্দেশনা পালন করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close