reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

করোনার প্রভাবে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় দেশ

চীনকে গ্রাস করেছে করোনাভাইরাস। ধ্বংস করেছে অর্থনীতি। আর এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগছে বিশ্ব। বাংলাদেশও এর বাইরে থাকতে পারেনি। আমরাও আক্রান্ত হয়েছি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়। চাপ পড়েছে অর্থনীতির ওপর। ভুগতে হচ্ছে নানাবিধ সমস্যায়। এ সমস্যা কীভাবে মোকাবিলা করব তাও এখনো পরিষ্কার নয়। ভাইরাস বিস্তৃতির সঙ্গে কাঁচামালের সংকটে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানার উৎপাদন সংকুচিত হয়ে আসছে। একইভাবে কমে আসছে আমদানিনির্ভর পণ্যের সরবরাহ। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না এলে কোনো কোনো খাতে উৎপাদন নেমে আসবে শূন্যের কোঠায়। অপরদিকে চীনে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রফতানি পুরোটাই আটকে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে দেশের ব্যাংকগুলো সময়মতো ঋণের কিস্তির টাকা পাবে কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

গত বছরের শেষ দিকে চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে ২৯টি দেশে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চীন শিল্প কারখানা, ব্যবসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়িয়ে দিয়েছে। এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলের যাতায়াত সীমিত করা হয়েছে। চীনের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটা স্তিমিত হয়ে পড়েছে। এতে অনেকের চেয়ে বেশি চাপে পড়েছে বাংলাদেশ। কেননা বাংলাদেশের মোট আমদানির ২৫ শতাংশ আসে চীন থেকে।

এদিকে করোনাভাইরাসের অজুহাতে অস্থির হয়ে উঠেছে নগরীর ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দাম। এমনিতেই আমরা দুর্নীতির ভাইরাসে আক্রান্ত। করোনাভাইরাস সেসব দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীকে দুর্নীতি করা সুযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা এক কঠিনতম সময় অতিক্রম করছি। সেই কঠিন সময়ের কথা স্মরণে রেখে সেসব ব্যবসায়ী বিপৎকালীন যেন অনৈতিক সুযোগ না নেনÑ এটুকুই প্রার্থনা রইল। মনে রাখতে হবে, সমস্যা যতই কঠিন হোক না কেন এ দুর্যোগ আমাদেরই মোকাবিলা করতে হবে। আশা করি, দেশ ও জাতিকে রক্ষার জন্য একজন দেশপ্রেমিকের মতো আমরা এর প্রমাণ রাখতে সক্ষম হব।

এফবিসিসিআই সভাপতি এ সমস্যা মোকাবিলায় প্রাথমিকভাবে বিশেষ নীতি সহায়তা, ঋণ সহায়তা এবং আমদানি দায় পরিশোধে দেরির কারণে কাউকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত না করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু এটাই সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ হতে পারে না। আমরা মনে করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিকল্প পথের সন্ধান করতে হবে। আমাদের অর্থনীতিকে রক্ষার স্বার্থেই এ কাজ সর্বোচ্চ বিবেচনার দাবি রাখে। এ নিয়ে সরকার অবশ্যই ভাবছেন। তাদের এ ভাবনার দ্রুত প্রতিফলন দেখতে চায় দেশের প্রত্যেক মানুষ। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদেরও ভাবতে হবে। অভ্যন্তরীণ বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে তাদেরই আসতে হবে প্রধান ভূমিকায়। মনে করতে হবে, তারা একটি যুদ্ধের অংশ হিসেবে এ দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারের একার পক্ষে এ সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। গোটা জাতিকেই এ যুদ্ধে অংশ নিতে হবে। সবাই সততার সঙ্গে এ কাজে অংশ নেবেনÑ এটাই প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close