মোহাম্মদ আবু নোমান

  ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

পর্যালোচনা

ক্ষমতা পরিবর্তনে মালয়েশিয়ায় লঘুচাপ

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক ড. মাহাথির মোহাম্মদ। আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকারও তিনিই। তার নেতৃত্বে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের মধ্যে মালয়েশিয়া উন্নয়নের এক মডেল হয়ে ওঠে। সম্প্রতি মাহাথির প্রধানমন্ত্রিত্ব ও নিজ দল পিপিবিএমের চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ক্ষমতাধর মুসলিম রাষ্ট্র মালয়েশিয়ার রাজনীতি এক জটিল ঘূর্ণির মধ্যে পড়েছে। ক্ষমতা হস্তান্তরে জটিল ও উত্তাল পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়ার রাজনীতি এখন যে অবস্থায় এসে উপনীত হয়েছে, তাতে দেশটিতে কী হতে যাচ্ছেÑ এ প্রশ্ন অনেকের। মালয়েশিয়ার রাজা (ইয়াং ডি-পার্টুয়ান আগং) সুলতান আবদুল্লাহ সুলতান আহমদ শাহ মাহাথিরের পদত্যাগপত্র গ্রহণ ও মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাহাথিরকে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত দেন। বর্তমানে শ্বাসরুদ্ধকর মালয়েশিয়ায় নানা ধরনের অনিশ্চয়তা, আশা ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ঘটনা পরম্পরা বিশ্লেষণ ও অন্তরালের খবরাখবরে মনে হয়, মালয়েশিয়ার রাজনীতি ও ক্ষমতা নতুন এক অভিমুখ নিতে শুরু করেছে। সরকারের প্রধান সচিব মোহাম্মদ জুকি আলি সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘দ্য ফেডারেল সংবিধানের ৪৩(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন সরকার গঠন ও প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন মাহাথির মোহাম্মদ।’

মালয়েশিয়ায় কী ঘটছে, তা বুঝতে ফিরে যেতে হবে ১৯৯৮ সালে যখন মাহাথির তার প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সেসময় সোডমির অভিযোগে কারাগারে পাঠানোর আগে আনোয়ার ইব্রাহিম ড. মাহাথিরের ডেপুটি ছিলেন। তারপর আনোয়ারকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার এক বছর আগে ২০০৩ সালে মাহাথির পদত্যাগ করেন। ২০০৪ থেকে ২০১৮ এরমধ্যে অনেক ঘটনা ঘটেছে। যাই হোক, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বারিসান ন্যাশনাল সরকারকে বিদায় করার জন্য ড. মাহাথির মোহাম্মদ সব বিরোধী দলকে নিয়ে এক মহা-ঐক্যজোট গঠন করেছিলেন। সে জোটের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে বিরোধী পাকাতান হারাপানের নেতৃত্ব দেন মাহাথির মোহাম্মদ। তার নেতৃত্বে জোটটি জয়লাভ করে। মাহাথির এবং আনোয়ার ২০১৮ সালে নাজিবের বিরুদ্ধে লড়াই করতে মিত্র হয়ে ওঠেন, তাতে তারা সফলও হন। এই জোট গঠনের আগে মাহাথিরের সঙ্গে আনোয়ারের লিখিত চুক্তি হয় যে, পাকাতান জয়ী হলে পরবর্তী সরকারের দুই বছরের জন্য নেতৃত্ব দেবেন মাহাথির মোহাম্মদ। আর এরপর আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব হস্তান্তর করবেন। এই সমঝোতা অনুসারে মাহাথিরের নেতৃত্বে পাকাতান হারাপানের সরকার চলে আসছিল। দেখা যাচ্ছে, মাহাথির ২০১৮-তে জোট গঠনকালে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আনোয়ার ইব্রাহিমের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে আগ্রহী নন। বরং বিজয়ী হয়ে তিনি আনোয়ার-পতœী দাতুক সেরি ডা. ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইলকে উপপ্রধানমন্ত্রী করেন।

পরিশেষে মাহাথির মোহাম্মদ পদত্যাগ করলেন বটে, কিন্তু কথা রাখলেন না। তিনি শুধু পদত্যাগই করেননি; তার দল সরকার থেকেও পদত্যাগ করেছে। দৃশ্যত, পাকাতান হারাপান জোটের প্রধান দল পিকেআর প্রধান আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরকে কেন্দ্র করে একটি রাজনৈতিক অভ্যুত্থান ঘটানো হয়েছে মালয়েশিয়ায়। ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত মাহাথির বারিসান ন্যাশনাল দলের নেতা এবং দেশটির সরকারপ্রধান হিসেবে এর আধুনিকায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের হাল ধরেন। ২০০৩ সালে তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে তার উত্তরসূরিদের দুর্নীতি ও অদক্ষতায় যখন সংকট ঘনিয়ে ওঠে; তখন দেশের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ২০১৮ সালে মাহাথির নিজ দল থেকে বেরিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে মিলে পাকাতান হারপান জোট গঠন করেন।

মালয়েশিয়ার সংবিধান অনুসারে ২২২ আসনের সংসদের নিম্নকক্ষে ১১২ আসনের সমর্থনপুষ্ট দল বা জোট সরকার গঠন করবে। নতুন মেরূকরণে এই সংখ্যার ভারসাম্য নির্ধারণে নির্ণায়ক দল হলো মাহাথিরের পিপিবিএম। দলটি পাকাতান হারাপান জোটে থাকলে এই জোটই সরকার গঠন করতে পারে। আর দলটি যদি বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে হাত মেলায়, তাহলে সরকার গঠন করবে তারা। মাহাথিরের প্রতি সাবাহ ও সারওয়াকের ক্ষমতাসীন আঞ্চলিক দুই দলের ২৭ জন এমপির সমর্থন থাকতে পারে। ফলে নতুন সরকার পাকাতানের বিচ্ছিন্ন অংশ ও বিরোধী উমনু-পাস আর সারওয়াকের জিপিএস ও সাবাহর ওয়ারিসান দলের সমন্বয়ে হবে বলে অনেকের ধারণা।

নবতিপর নেতা ড. মাহাথিরের অধীনে মালয়েশিয়া শুধু ঘুরেই দাঁড়ায়নি, তিনি মুসলিম বিশ্বের এক নির্ভরযোগ্য নেতাও হয়ে উঠেছেন। মাহাথিরকে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোর জন্য শাসক মডেল বলে উল্লেখ করা হয়। ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত এক হাতে মালয়েশিয়া শাসন করেছেন। ২২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর তিনি রাজনীতি থেকে অবসরে চলে যান। তার আমলে মালয়েশিয়ার অর্থনীতি আমূল বদলে যায়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ঘোষণা করেছিলেন। সফলও হয়েছিলেন। বর্তমানে প্রায় ৯৫ বছর বয়সেও তার শরীর-স্বাস্থ্য, কর্মদক্ষতা তেমন হ্রাস পায়নি। ফলে ধারণা কর হচ্ছে, প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য মাহাথির পদত্যাগ করেননি। সম্ভবত তার আরো সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক লক্ষ্য রয়েছে। ক্ষমতাসীন দল পাকাতান হারপান জোট থেকে বেরিয়ে সম্ভবত দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী আনোয়ার ইব্রাহিমকে ছাড়াই নতুন জোট গঠন করবেন। ফলে সামনের দিনগুলোতে মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে কী ঘটছে যাচ্ছে, এখনই তা আন্দাজ করা যাচ্ছে না।

দীর্ঘদিনের বন্ধু বা সহোচর আনোয়ার ইব্রাহিম দীর্ঘ সময় মাহাথিরের উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, মাহাথিরের পর আনোয়ারই মালয়েশিয়ার হাল ধরবেন। কিন্তু একসময় মাহাথিরের সঙ্গে আনোয়ারের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। শেষ পর্যন্ত জেলেও যেতে হয়েছিল। এবারও আনোয়ারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাহাথির প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে আনোয়ারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনাকে অনেক দূরে ঠেলে দিয়েছেন। গত রোববার মাহাথির মোহাম্মদের দলকে অভিযুক্ত করে তাদের বিশ্বাসঘাতক বলে অভিহিত করেছেন আনোয়ার ইব্রাহিম। তার অভিযোগ, মাহাথির মোহাম্মদের দল ২০১৮ সালে ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়া ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (ইউএমএনও) সঙ্গে নতুন সরকার গঠনের ষড়যন্ত্র করছে। যদিও নির্বাচন ছাড়াই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকারের স্থলে নতুন আরেকটি সরকার আসার ব্যাপারটি উন্মোচিত হওয়ায় মালয়েশিয়ার অনেক নাগরিক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তবে এ কথাও ঠিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জঞ্জাল সাফ করতে গিয়ে বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিলেন না ড. মাহাথির। রাজনীতির পথে যাকেই কাঁটা মনে করেছেন, শক্ত হাতে সরিয়ে দিয়েছেন। মাহাথির দীর্ঘ সময়ের সহযোদ্ধা আনোয়ার ইব্রাহিমকে জেলে পুরেছেন দুর্নীতির অভিযোগে। আনোয়ারের বিরুদ্ধে সমকামিতার অভিযোগও আনা হয়েছিল। আনোয়ারের পতনের পর নাজিব রাজাক রাজনীতির সামনের কাতারে চলে আসেন। প্রধানমন্ত্রীও হয়েছিলেন নাজিব। নাজিব রাজাককে হারাতেই মাহাথির আবার আনোয়ারের সঙ্গে জোট করেন। আনোয়ারের প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য বহু পক্ষ তার প্রতি আহ্বান জানানোর পর মাহাথির ২০২০ সালের নভেম্বরের মধ্যে এই পদ ছাড়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। আগামী মে মাসে মাহাথিরের সরকারের দুই বছর মেয়াদ পূর্ণ করার কথা। ঠিক এ সময়ে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে জটিল ও উত্তাল অবস্থা তৈরি হলো। আগে থেকেই মাহাথির মোহাম্মদ পূর্ব সমঝোতা অনুসারে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে অনির্দিষ্ট কথাবার্তা বলে আসছিলেন। কোনো সময় তিনি বলেন, অঙ্গীকার অনুসারে আনোয়ারের কাছেই সময়মতো ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। আবার এও বলেন, কখন কাকে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন এ বিষয় সুনির্দিষ্ট নয়। এ সময়ে পিকেআরের ডেপুটি প্রেসিডেন্ট আজমিন আলি দলের মধ্যে সমান্তরাল একটি বলয় তৈরি করে পদে পদে আনোয়ারকে চ্যালেঞ্জ করতে থাকেন। আর দাবি করতে থাকেন যে, মাহাথিরকে পুরো মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে দিতে হবে।

মালয়েশিয়ার রাজনীতির উত্তাল অবস্থার পেছনে আন্তর্জাতিক রাজনীতিরও যোগসূত্র রয়েছে। আনোয়ার ইব্রাহিম ব্যক্তিগতভাবে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। পাকাতান ক্ষমতায় আসার পর থেকে সৌদি-আমিরাত বলয়ের চেয়েও তুরস্ক-ইরানের সঙ্গে মালয়েশিয়ার সম্পর্ক বেশি ঘনিষ্ঠ হয়। দেশটি এরমধ্যে সৌদি নেতৃত্বাধীন প্রতিরক্ষা জোট থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আর তুরস্ক, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, ইরানের সঙ্গে মিলে ওআইসি দেশগুলোর মধ্যে একটি শক্তিমান বলয় তৈরির লক্ষ্যে মাহাথির সম্প্রতি কুয়ালালামপুরে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করেন। রিয়াদ-আবুধাবি এই সম্মেলনকে ওআইসির পাল্টা আয়োজন হিসেবে দেখেছে। এরপর তারা কোনোভাবেই তুরস্কের মতো নেতৃত্ব মালয়েশিয়া বা অন্য কোনো শক্তিমান মুসলিম দেশে দেখতে চাইছে না। আনোয়ারের ক্ষমতার কক্ষপথ থেকে অনেকখানি ছিটকে পড়ার পেছনে সৌদি-আমিরাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে কুয়ালামপুরের রাজনীতির গভীর পর্যবেক্ষকগণ মনে করেন।

এটাও অসম্ভব নয় যে, মাহাথির মোহাম্মদ তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারেন। কারণ, ইতোমধ্যে পাকাতান হরপানের বেশ কয়েকটি সদস্য মাহাথিরকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অব্যাহত থাকার জন্য অনুরোধ শুরু করেছেন। ডিএপি মহাসচিব এবং মালয়েশিয়ার অর্থমন্ত্রী লিম গুয়ান ইঞ্জিনি জানিয়েছেন, মাহাথির বিরোধী দল উমনু সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে অনাগ্রহী। এ ছাড়া লিম এবং জোটের আরো কয়েকজন আনুষ্ঠানিকভাবে মাহাথিরকে প্রধানমন্ত্রী থাকার জন্য মনোনীত করবেন বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বাকি উমনু-পাস-পিপিবিএম, আজমিন কোং, ওয়ারিসান ও জিপিএসের মধ্যে যে রাজনৈতিক জোট গঠনের প্রচেষ্টা চলছে সেটি চূড়ান্ত হওয়ার পর তারা রাজার কাছে সরকার গঠনের আর্জি জানাবেন। সংবিধান অনুসারে তাদের দাবি মেনে নিয়ে রাজা সরকার গঠনের আহ্বান জানালে মাহাথির নতুন সরকারেরও প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।

সার্বিক পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে, ৯৫ বছর বয়সেও ড. মাহাথির মালয়েশিয়ার রাজনীতির মাঠের কুশলী খেলোয়াড়। নাজিব রাজাক ক্ষমতায় ফিরবেন কি না অথবা আনোয়ার ইব্রাহিম আদৌ ক্ষমতায় আসবেন কি না, তা এখনো নির্ভর করছে মাহাথিরের রাজনৈতিক চালের ওপর। পরিস্থিতি যেদিকেই যাক আমরা মনে করি, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মধ্যে স্থিতিশীল ও ধারাবাহিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং উন্নয়নের অর্থনীতিতে সফল দেশটি যেন কোনো দুর্বিপাকে না পড়ে। বাংলাদেশের বিপুল জনশক্তি সেদেশে কর্মরত থাকা ছাড়াও বাণিজ্য ও অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। সেদিক থেকেও আমরা চাইব দেশটিতে স্থিতিশীলতা অক্ষুণœ থাকুক।

লেখক : গণমাধ্যমকর্মী ও কলামিস্ট

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close