reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

তারিফুন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম

আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বিশুদ্ধ আকিদা হচ্ছে, প্রত্যেক নবীগণ-ই ওফাত বরণ করার পর তাদের নিজ নিজ কবর শরিফে সশরীরে জীবিত আছেন; যা পবিত্র কোরআন মাজিদ ও সহিহ হাদিস দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নবীগণের দেহ মোবরক নষ্ট করা জমিনের ওপর আল্লাহতায়ালা হারাম করে দিয়েছেন। তাই নবীগণ তাদের রওজা শরিফে জীবিত আছেন। তাদের সেখানে রিজিক দেওয়া হয়। তারা ইন্তেকালের পরও সেখানে নামাজ আদায় করেন। যেমন নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেরাজ শরিফে যাওয়ার সময় হজরত মুসা (আ.) কে তার কবর শরিফে নামাজ আদায় করতে দেখেছেন। অতঃপর নিজ ইমামতিতে বায়তুল মোকাদ্দাসে সব নবীর সঙ্গে নামাজ আদায় করেছেন। তারপর প্রত্যেক আসমানে। একেকজন নবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

বিশ্ববিখ্যাত ইমাম ও মুহাদ্দিস ইমাম বায়হাকি (র.) নবীগণের কবরে জীবিত থাকার ব্যাপারে যথেষ্টসংখ্যক বিশুদ্ধ হাদিস সম্বলিত একটি কিতাব লিপিবদ্ধ করেছেন। যার নাম হায়াতুল আম্বিয়া ফি কুবুরিহিম-নবীগণ তাদের কবরসমূহে জীবিত। দ্বিতীয়ত, বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস হাফেজ ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতি (র.) বিশুদ্ধ হাদিস সম্বলিত ইদাউল আযকিয়া ফি হায়াতিল আম্বিয়া নামক একটি স্বতন্ত্র কিতাব লিপিবদ্ধ করেছেন। যাতে নবীগণ কবরে জীবিত এবং পার্থিব জীবনের মতোই জীবিকা নির্বাহ করছেন মর্মে অনেকগুলো বিশুদ্ধ হাদিস লিপিবদ্ধ করেছেন। তদুপরি বর্তমান সময়ে কেউ কেউ বলছেন, নবী-রাসুলগণ মরে মাটির সঙ্গে মিশে গেছেন এবং ইন্তেকালের পর কারো উপকার-ই করতে পারেন না। নাউজুবিল্লাহি মিনাল কাযিবিন।

সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ! এসব কথা শুধু বিভ্রান্তি-ই নয়, বরং কুফরির অন্তর্ভুক্ত। এসব ভ্রান্ত ও কুফরিমূলক আকিদা নিরসনকল্পে ইসলামের সঠিক আকিদা-বিশ্বাস জনসম্মুখে তুলে ধরার জন্য নবী-রাসুলগণ ইন্তেকালের পর নিজ নিজ কবর শরিফে জীবিত থাকার বিষয়ে নিয়ে কতিপয় অকাট্য দলিল উপস্থাপন করা হলো। হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তামেরা জুমার দিন আমার প্রতি অধিক পরিমাণে দরুদ শরিফ পাঠ করবে। কেননা, তা আমার নিকট পৌঁছে দেওয়া হয়। ফেরেশতাগণ তা পৌঁছে দেন। যে ব্যক্তি আমার প্রতি দরুদ শরিফ পাঠ করে তা থেকে সে বিরত না হওয়া পর্যন্ত তা আমার নিকট পৌঁছতে থাকে। (বর্ণনাকারী বলেন), আমি বললাম, আপনার ওফাতের পরেও? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, আমার ওফাতের পরও। কারণ আল্লাহতায়ালা নবীগণের দেহ মোবারক ভক্ষণ করা জমিনের ওপর হারাম করে দিয়েছেন। তাই আল্লাহর নবীগণ (কবরে) জীবিত এবং তাদের রিযিক দেওয়া হয় (আবু দাউদ শরিফ, ১ম খন্ড, ১৫০ পৃষ্ঠা, কিতাবুস সালাত, বাবু তাফরিয়ি আবওয়াবুল জুমুআ, হাদিস নং-১০৪৭। ইবনু মাজাহ শরিফ, কিতাবুল জানায়েজ, বাবু জিকর ওফাতুহু ওয়ারফাতুহু, হাদিস নং-১৬৩৬-১৬৩৭। নাসাঈ শরিফ, ১ম খন্ড, কিতাবুল জুমুআ, বাবু ইউকসারুস সালাতি আলান নাবি-ই (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইয়াওমিল জুমুআ, হাদিস নং-১৩৭৭। সুনান দারেমি, ১ম খন্ড, ৪৪৫ পৃষ্ঠা, হাদিস নং-১২৭৪। বায়হাকি, হায়াতুল আম্বিয়া, ৩য় পৃষ্ঠা। আবদুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী (রহ.), জজবুল কুলুব ইলা দিয়ারিল মাহবুব।)

হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নবীগণ তাদের কবরসমূহে জীবিত থেকে নামাজ আদায় করেন (বায়হাকি, হায়াতুল আম্বিয়া, পৃষ্ঠা-৩। মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদিস নং-৩৪২৫। সুনান বাযযার, হাদিস নং-৬৮৮৮)

হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মিরাজের রাতে আমি যখন (মিশরের) লাল উপত্যকার নিকট হজরত মুসা (আ.) এর কবর শরিফকে অতিক্রম করছিলাম, তখন আমি দেখলাম, হজরত মূসা (আ.) তিনি তার কবর শরিফে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছেন (মুসলিম শরিফ, ২য় খন্ড, ২৬৮ পৃষ্ঠা, হাদিস নং-৫৯৪২/৫৯৪৩)। চলমান...

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close