reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ জানুয়ারি, ২০২০

ধনবৈষম্য কমিয়ে আনা হোক

পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে ধনবৈষম্য থাকবেÑ এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশ অর্থাৎ আমরা সেই পুঁজিবাদী অর্থনীতিকে অনুসরণ করেই চলি। তবে এ বৈষম্য যেন সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে পাহাড়সম বাধা হয়ে না দাঁড়ায়; সেদিকে খেয়াল রাখাটাই রাষ্ট্র এবং রাজনীতির নজর থাকতে হবে। নজর না থাকলে সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে আসতে পারে অসহনীয় দুর্ভোগ; যা কোনো দেশপ্রেমিক নাগরিকের কাম্য হতে পারে না। দেশের প্রায় প্রতিটি মানুষই চায়, বৈষম্যের মাত্রা সহনশীল পর্যায়ে নামিয়ে আনা হোক। আর এ মাত্রাকে সহনশীল পর্যায়ে নামিয়ে আনতে পারলে গণতন্ত্র উজ্জীবিত হবে। সহিংসতা কমে আসবে। শান্তির সুবাতাস প্রবাহিত হবে। একটি কথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই যে, আমাদের দেশে বৈষম্য সৃষ্টি করার নেপথ্য নায়করা হচ্ছেন, অনৈতিক পথে অর্থ উপার্জনকারীরা। অবশ্য সরকারের ভেতরে থাকা একশ্রেণির মানুষ এদের সহায়ক শক্তি। এদের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে পারলেই নেমে আসতে পারে বৈষম্য নামক ব্যারোমিটারের পারদ।

সম্ভবত সে কারণেই বৈষম্য নিরসনে ধনী ব্যক্তি ও কোম্পানির প্রতি অন্যায্য করছাড় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সাউথ এশিয়ান অ্যালায়েন্স পর প্রভার্টি ইরাডিকেশন (স্যাপি)। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, মাত্র ৩০০ জন ধনীর আয় বিশ্বের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর সমান। বাংলাদেশের পরিস্থিতি অনেকটা সেদিকেই যাচ্ছে। তাদের মতে, দেশে বিপজ্জনক মাত্রায় অসমতা বাড়ছে। এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার। দরকার জনমুখী অর্থনৈতিক নীতি। তারা জানিয়েছেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিশাল বিদ্রোহ। আর সে কারণেই রাষ্ট্র, সরকার ও নাগরিক সমাজ সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের এ বক্তব্যের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বলতে হয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের শেষ অংশে বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, বঙ্গবন্ধু আমাদের হাতে একটি স্বাধীন পতাকা তুলে দিয়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। কিন্তু তার দ্বিতীয় স্বপ্ন দিয়ে যেতে পারেননি। তার দ্বিতীয় স্বপ্ন ছিল অর্থনৈতিক মুক্তি। আমরা এখন তার দ্বিতীয় স্বপ্নের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে তার দ্বিতীয় স্বপ্ন বাস্তবায়নের শপথবাক্য উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, আগামী দিনে তার সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ হচ্ছে, এ বৈষম্যের হার কমিয়ে আনা। তিনি তা পারবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস।

স্যাপির পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও লিঙ্গ নির্বিশেষে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। ৩০ বছর ধরেই দক্ষিণ এশিয়ার এ বৈষম্য অস্বাভাবিক হারেই বেড়েছে। বাজার ও অর্থের একচ্ছত্র আধিপত্যকে রোধ করতে না পারলে এর গতিরোধ করা সম্ভব নয়। আর সেজন্য অর্থের একচ্ছত্র আধিপত্যকে প্রতিহত করার মধ্য দিয়েই বৈষম্যের নিরসন চাই। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির জনকের দ্বিতীয় স্বপ্ন পূরণে সফল হবেন আর এটাই জাতির প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close