reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯

রাসুল (সা.) আগমনের দিনের ফজিলত

সপ্তম মাস (মহরম) যখন আগমন করল, তখন এক ব্যক্তি আমার কাছে আগমন করলেন। তিনি বললেন, হে আল্লাহর মনোনীত ব্যক্তি, আপনার প্রতি সালাম। আমি (হজরত আমিনা (রা.) তাকে বললাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি হজরত ইসমাঈল জাবিহুল্লাহ (আ.)। আমি বললাম, আপনার অভিপ্রায় কী? তিনি বললেন, হে হজরত আমিনা (রা.)! আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। কেননা, আপনি রেহেম শরিফে ধারণ করেছেন সবিশেষ লাবণ্যময় নবীকে।

অষ্টম মাস (সফর) যখন আগমন করল, তখন এক ব্যক্তি আমার কাছে আগমন করলেন। তিনি বললেন, আসসালামু আলাইকা ইয়া খাইরাতাল্লাহ! হে আল্লাহর সমূহ কল্যাণ! আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি (হজরত আমিনা (রা.) তাকে বললাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি হজরত মুসা ইবনে ইমরান (আ.)। আমি বললাম, আপনার অভিপ্রায় কী? তিনি বললেন, হে হজরত আমিনা (রা.)! আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। কেননা, আপনি রেহেম শরিফে ধারণ করেছেন, যার ওপর কোরআন শরিফ নাজিল হবে তাকে।

যখন নবম মাস (রবিউল আওয়াল) আগমন করল, তখন এক ব্যক্তি আমার কাছে আগমন করলেন। তিনি বললেন, ইয়া খাতামা রাসুলিল্লাহ, হে আল্লাহর রাসুলগণের সর্বশেষ, আপনার আগমন নিকটবর্তী ইয়া রাসুল্লুাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি (হজরত আমিনা (রা.) তাকে বললাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি হজরত ঈসা ইবনে মারইয়াম (আ.), আমি হজরত আমিনা (রা.) বললাম, আপনার অভিপ্রায় কী? তিনি বললেন, হে হজরত আমিনা (রা.)! আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। কেননা, আপনি রেহেম শরিফে ধারণ করেছেন সম্মানিত নবী-মহিমান্বিত রাসুলকে।

আপনার থেকে দূর হয়ে গেল দুঃখ, কষ্ট-রোগ-যন্ত্রণা।

উৎস গ্রন্থ : (আন নিমাতুল কুবরা আলাল আলাম, ইবনে হাজার হায়াসামি)

সাইয়িদুত তয়িফা হজরত জুনাইদ বোগদাদি (র.) বলেন, যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আয়োজনে উপস্থিত হলো এবং উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করল। সে তার ইমানের দ্বারা সাফল্য লাভ করবে অর্থাৎ সে বেহেশতি হবে। (সুবাহানাল্লাহ) (আন নেয়ামাতুল কুবরা।

ইমাম রাযী (র.) আরো বলেন, উক্ত মোবারক খাদ্য মিলাদ পাঠকারীর বা মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে কোনো পানিতে ফুঁক দেয়, অতঃপর উক্ত পানি কেউ পান করে তাহলে তার অন্তরে এক হাজার নূর ও রহমত প্রবেশ করে। আর তার থেকে হাজারটি বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ রোগ দূর হবে। যেদিন সব কলব (মানুষ) মত্যুবরণ করবে, সেদিনও ওই মিলাদুন্নবীর পানি পানকারী ব্যক্তির অন্তর মৃত্যুবরণ করবেন। (সুবহানাল্লাহ) (আন নেয়ামাতুল কুবরা)

ইমাম শাফেয়ি (র.) বলেন, যে ব্যক্তি মিলাদ পাঠ বা মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন উপলক্ষে লোকজন একত্রিত করল এবং খাদ্য তৈরি করল ও জায়গা নির্দিষ্ট করল এবং মিলাদ পাঠের জন্য উত্তমভাবে (তথা সুন্নাহভিত্তিক) আমল করল, তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে আল্লাহপাক হাশরের দিন সিদ্দীক, শহীদ, সালেহীনগণের সঙ্গে উঠাবেন এবং তার ঠিকানা হবে জান্নাতে নাঈমে। (সুবাহানাল্লাহ) (আন নেয়ামাতুল কুবরা)

হজরত সাররী সাকতি (র.) বলেন, যে ব্যক্তি মিলাদ শরিফ পাঠ বা মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদ্যাপন করার জন্য স্থান নির্দিষ্ট করল, সে যেন তার জন্য জান্নাতে রওজা বা বাগান নির্দিষ্ট করল। কেননা, সে তা হুজুরপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মহব্বতের জন্য করেছে।

আর আল্লাহপাকের রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে আমাকে ভালোবাসবে সে আমার সঙ্গেই জান্নাতে থাকবে। (তিরমিজি, মিশকাত, আন নেয়ামাতুল কুবরা)

অতএব উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা হুজুরপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মর্যাদা ও বুজুর্গির সঙ্গে সঙ্গে হজরত আমিনা (রা.)-এর মর্যাদা ও বুজুর্গি ফুটে উঠেছে।

চলমান...

লেখক : ডা. কারি মাওলানা

শেখ সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ আহাম্মেদ

পীরসাহেব মাধবদী রহমানিয়া দরবার শরিফ

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close