reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯

পলিথিন বর্জ্য থেকে জ্বালানি ইতিবাচক পদক্ষেপ

আমাদের চারপাশের সবকিছু নিয়েই পরিবেশ। আর এর প্রতিটি উপাদানের সুসমন্বিত রূপকেই বলা যায় সুস্থ পরিবেশ। সে ক্ষেত্রে সুসমন্বিত এই রূপের ব্যত্যয় ঘটলেই পরিবেশ তার স্বাভাবিকতা হারায়। এগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক কারণের তুলনায় মানবসৃষ্ট কারণই সবচেয়ে বেশি দায়ী। সুতরাং একটি ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশের জন্য প্রতিটি উপাদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে মানুষের অসচেতনতা এবং অনিয়ন্ত্রিত আচরণের কারণেই পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। আবার ব্যতিক্রমও যে নেই, তা কিন্তু বলা যাবে না। যেমনÑ পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশের জন্য প্রচন্ড হুমকিস্বরূপ। তবে সেসব পলিথিন ও প্লাস্টিক এখন সম্পদে পরিণত করছেন খুলনার ইজিবাইকের মিস্ত্রি সোহাগ হাওলাদার।

গতকাল প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত ‘পলিথিন বর্জ্য থেকে জ্বালানি’ শীর্ষক খুলনা প্রতিনিধির পাঠানো একটি বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোহাগ হাওলাদার তার প্রতিভা কাজে লাগিয়ে পড়ে থাকা পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতল টিনের ড্রামে ঢুকিয়ে আগুনের তাপ দিয়ে তৈরি করেছেন জ্বালানি তেল, জ্বালানি গ্যাস ও কালি। তার এই উদ্ভাবন এলাকাজুড়ে ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে। ছোটবেলা থেকে নগরীর দক্ষিণ টুটপাড়া ২ নম্বর ক্রস রোড এলাকায় তার বসবাস। স্থানীয় জোড়াকল বাজারে চায়ের দোকানে কাজ করতেন তিনি। সঙ্গে ইউসেপ স্কুলে চলে পড়ালেখা। এ স্কুলের কারিগরি বিভাগে ১৮ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন সোহাগ। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতা তাকে বাধ্য করে পড়ালেখা বাদ দিয়ে কাজে নামতে। তবে যাই হোক, আমরা চাই তার প্রতিভার মূল্যায়ন হোক। কারণ সোহাগের এই উদ্ভাবনে একদিকে যেমন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে পরিবেশ; অন্যদিকে উৎপাদিত হচ্ছে বাড়তি জ্বালানি। এবার সেই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করা যেতে পারে। এজন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন। এর আগে ব্যবহারের অযোগ্য প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য থেকে জ্বালানি উৎপাদনের কৌশল আবিষ্কার করেছেন বরিশালের সন্তান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিজ্ঞানী আনজুমান আরা ও তার স্বামী বিজ্ঞানী ড. মইনউদ্দিন সরকার বাদল। বলা যায়, দেশে প্লাস্টিক বর্জ্যকে জ্বালানি তেলে রূপান্তরের কৌশল উদ্ভাবন নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে গবেষণা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। এ ছাড়া পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা প্লাস্টিক বর্জ্যকে জ্বালানি তেলে রূপান্তরের কৌশল বিশ্বজুড়ে এখন আশার আলো দেখাচ্ছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, জার্মানি, ভারতে প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে তৈরি হচ্ছে ডিজেল ও কেরোসিন।

সংগত কারণে বাংলাদেশেও প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে জ্বালানি তেল তৈরির বাণিজ্যিক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর দেশে যে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হচ্ছে, তা থেকে উৎপাদিত জ্বালানি তেল গৃহস্থালি ছাড়াও ব্যবহার করা যাবে কল-কারখানায়। পাশাপাশি পরিবেশ দূষণের ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পাওয়াও সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আমরা আশা করি, পরিবেশ ধ্বংসকারী প্লাস্টিক বর্জ্যকে জ্বালানি তেলে রূপান্তর করা গেলে এ খাতে যেমন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা দেখা দেবে, তেমনি পরিবেশ দূষণ রোধে হবে ইতিবাচক পদক্ষেপ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close