reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৮ নভেম্বর, ২০১৯

বয়স নিয়ে প্রতারণা শাস্তিযোগ্য অপরাধ

সবকিছুরই একটা শেষ থাকলেও প্রতারণার যেন শেষ নেই। বিশেষ করে এ দেশে প্রতারণা ধাপে ধাপে উঠতে উঠতে এখন মনে হয় শেষ সীমায় এসে পৌঁছেছে। এরপর নির্ঘাৎ মৃত্যু। তবে সে মৃত্যু প্রতারণার নয়, বাংলাদেশে বসবাসকারী বিশাল জনসমষ্টির। সম্প্রতি পেঁয়াজ নিয়ে প্রতারণার যে মচ্ছব হয়ে গেল, এটাই তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। আমরা ৩০ টাকার পেঁয়াজ ২৫০ টাকায় কিনলাম। এরপরও ব্যবসায়ীরা বহাল তবিয়তে আছেন এবং থাকবেন। শিল-পাটার নিচে পড়ে ক্রেতাপক্ষের অবস্থা সবারই জানা। কিন্তু কেন এমন হলো! প্রশ্নের জবাবে বলতে হয়, ক্রেতাপক্ষের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। কে করল এই প্রতারণা? বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। অনেকের মতে, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট গঠনের মাধ্যমে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। আবার কারো কারো মতে, এখানে শুধু ব্যবসায়ীরাই জড়িত নন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দেশের অনেক রথী-মহারথীরাও জড়িত। যারা এই প্রতারণাকে স্থায়ী রূপ দিতে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। এর থেকে বেরিয়ে আসার কি কোনো পথই খোলা নেই!

আছে। তবে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা পরাবে কে! এ প্রশ্নের জবাব মেলা দায়। আর সে কারণেই সর্বত্রই প্রতারণার প্রতিযোগিতা। সম্প্রতি মিডিয়ায় বিস্ময়কর এক প্রতারণার খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরে বলা হয়, হাজার হাজার নাগরিক প্রতারণা করে বয়স কমাতে ও বাড়াতে প্রতিনিয়ত জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন (এনআইডি) অনু বিভাগে আবেদন জানাচ্ছেন। এসব অসম ও অযৌক্তিক পরিচয়পত্র সংশোধন ও নথি চালাচালিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে খোদ অনু বিভাগের সংশ্লিষ্টদের। কারণ হিসেবে রিপোর্টে বলা হয়, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক উচ্চমহল থেকে অন্যায্য এসব পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য তদবিরের মহাযজ্ঞ চলছে। ভিআইপি ও প্রভাবশালী মহলের তদবির না শুনলে চাকরি থেকে অব্যাহতির হুমকি দেওয়া হয়। ক্ষেত্রবিশেষ জামায়াত-বিএনপি আখ্যা দিয়ে হেনস্তা করার অভিযোগ রয়েছে। চাকরি করার সুবাদে উভয় সংকটে পড়ছেন এনআইডির কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যেই প্রতিকার চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পত্রও পাঠায় ইসি। কিন্তু এ পর্যন্ত সে চিঠির কোনো উত্তর মেলেনি। এটিই বাস্তবতা। খবরে একজন আবেদনকারীর নাম উল্লেখ করে বলা হয়, মো. আ. কাদির, বাবার নাম মো. আ. গনি, জন্ম ০১.১০.১৯৬৫। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর ১৪৫৬৬৫৯০৭৫। তিনি নিজ নাম, বাবার নাম এবং জন্ম তারিখ তিনটিই সংশোধন করতে চান। চাকরির ধরন সরকারি। সেখানে জন্মসনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও নাগরিক সনদের দালিলিক প্রমাণসহ আবেদনে উল্লেখ আছে। সুপারিশ রয়েছে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টরের। আবেদনকারী তার জন্ম তারিখ ১.১০.১৯৬৫-এর স্থলে ৩০.১১.১৯৯৩ করতে চান। দেখা গেছে, নিজ এবং বাবার নামে আমূল পরিবর্তন না চাইলেও জন্ম তারিখের সংশোধন চান চাকরি জীবনের পুরো সময়। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন কাদিরের এনআইডি সংশোধন করতে সহায়তা করলে উল্লিখিত ব্যক্তির বর্তমান পরিচয়পত্র থেকে সংশোধিত পরিচয়পত্রের বয়স ব্যবধান দাঁড়াবে ২৮ বছর।

এত গেল একটি নমুনা। এ রকম হাজার হাজার আবেদন জমা পড়েছে কার্যালয়ে। এর একটি আবেদন ব্যারিকেড অতিক্রম করে বেরিয়ে এলে তা হবে প্রতারণা চক্রের আরো একটি সাফল্য। যে সাফল্য দেশবাসীর কাম্য নয়। আমরা মনে করি, এই চক্রের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হবে। আর এ কাজে সরকারকেই মুখ্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close