reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ অক্টোবর, ২০১৯

দখলমুক্ত লুকোচুরি খেলার অবসান হোক

বাল্যকালে কত ধরনের খেলাই না আমরা খেলেছি। এর মধ্যে লুকোচুরি খেলার কথা ভুলতে পারিনি। সেই খেলার মধ্যে নির্মল আনন্দের ছোঁয়া ছিল, ছিল পারস্পরিক সৌহার্দের নিদর্শন। ইদানীং সেই খেলা যেন উঠে এসেছে রাজধানী ঢাকার ফুটপাতে। তবে এখানে যে লুকোচুরি খেলা হয়, সেখানে নেই কোনো আনন্দের ছোঁয়া, পারস্পরিক সৌহার্দের নিদর্শন। আছে অনৈতিক কর্মকা- আর সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ। ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনা এবং হকার সরাতে অভিযান এখানে নতুন কিছু নয়। দীর্ঘ সময় ধরেই চলছে। কিন্তু কখনোই সফলতার মুখ দেখেননি উচ্ছেদকারীরা। এ যেন একসময়ের লুকোচুরি খেলার নতুন অধ্যায়। শুরুতে ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনা অদৃশ্য হলেও কিছুদিন পর আবারও দৃশ্যমান। অর্থাৎ এ খেলার যেন শেষ নেই। সম্ভবত এ খেলা কখনোই শেষ হওয়ার নয় বলেই ধারণা সাধারণের। শেষ না হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, অন্তরালে এক বিশাল অঙ্কের টাকা লেনদেনের ব্যবস্থাই টিকিয়ে রেখেছে এই খেলাকে। তবু অভিযান চলছে। মানুষের দুর্ভোগ যখন চরমে ওঠে, তখন সান্ত¡নার প্রলেপ হিসেবে আবির্র্ভূত হয় সাময়িক বেদনানাশক অভিযান।

ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনা এবং হকার সরাতে অভিযান চালাচ্ছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। তবে ঢাকা উত্তর সিটির (ডিএনসিসি) অভিযান অনেকটা নিয়মিত হলেও দক্ষিণে চলে থেমে থেমে। উত্তরের ফুটপাত কিছুটা মুক্ত হলেও দক্ষিণ ফিরেছে আগের অবস্থানে। হকারমুক্ত হচ্ছে না কিছুতেই। আগেই বলেছি, ফুটপাত দখল করে হকারদের অবৈধ এই ব্যবসা চলে আসছে অনেক দিন ধরে। অনেকে স্থায়ীভাবে অবস্থান নিয়ে দিনের পর দিন চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের বাণিজ্য। প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে কীভাবে এই অবৈধ দখল টিকে আছেÑ এ প্রশ্ন সবার। তবে এর সদুত্তর মেলেনি এখনো। মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ফুটপাতের এ অবস্থা নিয়ে নগরবাসীর ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার লক্ষ্যে ডিএনসিসি গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে। এ সময় ফুটপাত ও সরকারি জায়গায় থাকা ব্যাপকসংখ্যক স্থাপনা, দোকান, দলীয় কার্যালয় উচ্ছেদ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ-সংক্রান্ত বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেছেন, সড়ক ও ফুটপাত দখল করে কোনো বাণিজ্যকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। পথচারীদের জিম্মি করে দখল-বাণিজ্য সহ্য করা হবে না। অথচ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের চিত্র বিপরীতমুখী। হঠাৎ করে ২৪ সেপ্টেম্বর এক দিনের জন্য অভিযান চালানোর পর এ যাবত তাদের আর কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। ফলে দখলদাররা ফুটপাত দখল করে আগের মতোই তাদের ব্যবসা অব্যাহত রেখেছেন। এ সম্পর্কে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তারা সদিচ্ছা দেখালেই ফুটপাত দখলমুক্ত রাখা সম্ভব হবে।

পথচারীর চলাচল নির্বিঘœ করতে এবং যানজট কমাতে দুই সিটি করপোরেশন বারবার উচ্ছেদ অভিযান চালালেও আবার ফুটপাত দখল হয়ে যাচ্ছে। এ যেন ফুটপাত দখলদার আর উচ্ছেদকারীদের মাঝে এক লুকোচুরি খেলা। এর একটা বিহিত হওয়া দরকার। আমরা মনে করি, করপোরেশন ও পুলিশের মাঝে সমন্বয়ের একটা অভাব রয়েছে। এ দুয়ের মাঝে সমন্বিত এবং পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। আমরা সেই সমন্বিত উদ্যোগের দিকেই তাকিয়ে আছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close